ক্রাইমবার্তা রিপোট:স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি হান্নানের প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ খারিজ করে দেওয়ায় তার ফাঁসি কার্যকরে আর আইনি বাধা নেই। এখন কারাবিধি অনুযায়ী তার ফাঁসির রায় আগামী মঙ্গলবার থেকে ৮ দিনের মধ্যে যেকোনো সময় কার্যকর করা হবে। এখন আদালতের রায় ফাঁসি কার্যকরে কারাগার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
রোববার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান। এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গতকাল শনিবার মুফতি হান্নানের ক্ষমার আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। ফলে তার ফাঁসি কার্যকরে আর আইনি বাধা নেই। এখন কারাবিধি অনুযায়ী তার ফাঁসির রায় যেকোনো সময় কার্যকর করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, মঙ্গলবার থেকে ১৭ এপ্রিল সোমবার এই আট দিনের মধ্যে যে কোনো সময় জঙ্গি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হবে। তিনি বলেন, জেল কর্তৃপক্ষের কাছে এখন সরকারের নির্বাহী আদেশ যাবে। এটি পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। যেকোন সময় সেটি জেল কর্তৃপক্ষের কাছে চলে যাবে। এরপর তার ফাঁসি কার্করে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, যেদিন তার ফাঁসির আদেশ হয়েছে।
সেদিন থেকে ২১ দিনের কম নয় এবং ২৮ দিনের বেশি নয় এমন সময়ের মধ্যে ফাঁসি কায্যকর করার নিয়ম রয়েছে। সে হিসেবে ১১ এপ্রিল থেকে ১৭ এপ্রিলের মধ্যেই মুফতি হান্নানের ফাঁসি কার্যকর হবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন মামলায় বিশেষ করে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা, প্রধানমন্ত্রীর প্রাণনাশের মামলা অনেক মামলা তার (মুফতি হান্নান) নামে ছিল। এরমধ্যে কয়েকটি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। একটি মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ডদেশ দেওয়া হয়েছিল। সেটা সুপ্রিম কোর্ট ও আপিল বিভাগে বহাল থাকাতে তিনি মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছিলেন, রাষ্ট্রপতি সেটা না মঞ্জুর করেছেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতির না মঞ্জুর করাতে এখন আমরা আদালতের রায় কার্যকর করতে যে সমস্ত ফরমালিটি, জেল কোড অনুযায়ী যা যা করণীয় সেই প্রক্রিয়াগুলো আমার করে যাচ্ছি।
২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হযরত শাহজালাল (রা.) এর মাজারে গ্রেনেড হামলায় তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা মামলায় ফাঁসির আদেশ হয়েছে মুফতি হান্নান ও তার দুই সহযোগী বিপুল ও রিপনের। গত ১৯ মার্চ আপিল বিভাগ সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে দণ্ড বহাল রাখে। পরদিন মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয় তিন জঙ্গিকে। পরে গত ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে বন্দী মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী বিপুল এবং সিলেট কারাগারে বন্দী রিপন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। শনিবার রাতে সে আবেদন নাকচ করেন রাষ্ট্রপতি।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালের ১ অক্টোবর রাজধানীর বাড্ডার বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন মুফতি হান্নান। এরপর বিভিন্ন মামলায় টানা ১২০ দিন রিমান্ডে ছিলেন তিনি। তখনই গোয়েন্দাদের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে মুফতি হান্নান শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করাসহ বিভিন্ন হামলায় জড়িত থাকার বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ দেন।