ক্রাইমবার্তা রিপোট:পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীতে গোসল করতে নেমে দুই স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলো নগরের ব্রাইটন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সৈয়দ আনোয়ারুল সাঈফ ও সুমন আহম্মেদ সাগর। আজ শুক্রবার দুপুরে তিস্তা নদীর মহিপুর ঘাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে শিক্ষপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের আজ গঙ্গাচড়া উপজেলাধীন তিস্তা নদীর মহিপুর ঘাট এলাকায় বেড়াতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিস্তার চরে তারা ফুটবল খেলার পর বেলা ১টার দিকে নদীতে গোসল করতে নামে। গোসল শেষে একে একে সবাই উপরে উঠে এলেও সাইফ ও সুমন পানির গভীর খাদে তলিয়ে যায়। এ সময় শিক্ষক-সহপাঠীসহ স্থানীয় লোকজন প্রায় আধাঘণ্টা পর ওই দুইজনকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ সময় সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
সৈয়দ আনোয়ারুল সাঈফ নগরীর ধাপ পোস্টাল কলোনির বাসিন্দা সৈয়দ আনোয়ারুল হাসিনের ছেলে এবং সুমন আহম্মেদ সাগর ইসলামবাগ এলাকার আইনুল হকের ছেলে।
এ ব্যাপারে ব্রাইটন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. নিজাম উদ্দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের তিস্তাঘাটে বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। তাদের সঙ্গে লুৎফর রহমান ও সাগর বাবুসহ ছয়জন শিক্ষক ছিলেন বলেও জানান তিনি। তবে কথা বলার চেষ্টা করেও ওই শিক্ষকদের পাওয়া যায়নি।
বিকেলে মৃত দুই শিক্ষার্থীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, স্বজনদের আহাজারিতে যেন আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। শোকে বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন তাদের বাবা-মা। এ সময় সুমন আহম্মেদ সাগরের বড় ভাই শাহীন জানান, চার ভাই-বোনের মধ্যে সাগর সবার ছোট। স্কুলের পক্ষ থেকে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তাদের মহিপুর ঘাট এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। বেলা সাড়ে ১২টার দিয়ে মোবাইলে সাগরের সঙ্গে কথা হয়েছে। সে সময় তারা তিস্তার চরে ফুটবল খেলছিল বলে সে জানায়। এরপর বেলা ২টার দিকে খবর আসে সাগর হাসপাতালে। ছুটে গিয়ে তারা দেখেন ততক্ষণে সাগরসহ দুই শিক্ষার্থী চলে গেছে না ফেরার দেশে।
একসঙ্গে বেড়াতে যাওয়া সুমন ও সাগরের সহপাঠী নাদিম হোসেন জানায়, শিক্ষকদের সঙ্গে তারা একই ক্লাসের ২২ জন শিক্ষার্থী নদীপারে গিয়েছিল। শোকে এর বেশি সে আর কিছু বলতে পারেনি। তবে শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতার কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করছেন প্রত্যক্ষদর্শীসহ মৃত শিক্ষার্থীদের স্বজনরা।
গঙ্গাচড়া মডেল থানার ওসি জিন্নাত আলী তিস্তা নদীতে ডুবে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।