বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি আর নেই

ক্রাইমবার্তা ডেস্ক রিপোট:বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি ১১৭ বছর বয়সে ইটালিতে মারা গেছেন।

১৮৯৯ সালে ইটালির পিডমন্ট অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এমা মোরানো। নথিপত্র অনুযায়ী ১৯০০-র আগে জন্ম নেয়া জীবিত মানুষদের মধ্যে তিনিই ছিলেন শেষ ব্যক্তি।

তিনি নিজের দীর্ঘায়ুর কারণ হিসেবে তার জিনগত বৈশিষ্ট্য এবং তার দিনে তিনটি ডিম খাওয়ার অভ্যাসের কথা বলেছিলেন। তিনটি ডিমের মধ্যে দুটিই তিনি কাঁচা খেতেন।

 

 

মিজ মোরানো ছিলেন আট ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড়, যাদের সবাই তার আগেই মারা গেছেন। তিনি উত্তরাঞ্চলীয় ভারবানিয়া শহরে নিজ বাসভবনে মারা যান।

তিনি যে জীবদ্দশায় শুধু তিনটি শতক দেখেছেন তাই নয়, নির্যাতনমূলক বৈবাহিক সম্পর্ক থেকে তিনি বেরিয়ে এসেছেন, তার একমাত্র শিশুপুত্রকেও হারাতে হয়েছে, দুটি বিশ্বযুদ্ধ তিনি দেখেছেন এবং ৯০ বার ইটালির সরকার পরিবর্তন হতে দেখেছেন।

“ভাল জিন এবং ডিম”

মিজ মোরানো স্বীকার করেছেন যে তার দীর্ঘায়ুর একটি বড় কারণ তার বংশগতি বা জিনগত বৈশিষ্ট্য। তার মাও ৯১ বছর পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন এবং তার কয়েকজন বোনও ১০০ বছর পার করেছিলেন।

তবে একইসাথে তার দীর্ঘায়ুর পেছনে তার অস্বাভাবিক একটি খাদ্যাভ্যাসও রয়েছে- দিনে তিনটি ডিম, তার মধ্যে দুটি কাঁচা এবং ৯০ বছরের বেশি সময় যাবত প্রতিদিন তিনি এই খাবার খেয়ে আসছেন।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর এক চিকিৎসক তার শরীরে অ্যানিমিয়া বা তরুণ বয়সে তিনি এই খাদ্যাভ্যাস শুরু করেন।

তবে সম্প্রতি তিনি পরিমাণ কমিয়ে দুটো ডিম খাচ্ছিলেন, সাথে কিছু বিস্কিট।

তার চিকিৎসক কার্লো বাভা বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, মিজ মোরানো সবজি বা ফল খুবই কম খেতেন। ২৭ বছর যাবত তিনি মিজ মোরানোর চিকিৎসা করেন।

“আমি যখন প্রথম তাকে দেখি তখন তিনি দিনে তিনটি ডিম খেতেন, দুটি কাঁচা এবং বিকেলে একটি অমলেট। আর রাতে খেতেন মুরগির মাংস”।

“আমি কারো আধিপত্য মেনে নেইনি”

মিজ মোরানো তার দীর্ঘায়ুর পেছনে ১৯৩৮ সালে তার স্বামীকে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্তকেও গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে মনে করেন। এর এক বছর আগে তার ৬ মাস বয়সী শিশুপুত্র মারা গিয়েছিল।

তিনি বলেছিলেন, তার বিবাহিত জীবন কখনোই ভালো ছিল না।

তিনি যেই ছেলেকে ভালোবাসতেন, সে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে মারা গিয়েছিল। এবং তার অন্য কাউকে বিয়ে করার কোন ইচ্ছেও ছিল না।

১১২ বছর বয়সে ইটালির লা স্টাম্পা পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছিলেন, বাধ্য হয়েই তাকে বিয়ে করতে হয়েছিল।

“সে আমাকে বলেছিল, আমাকে বিয়ে কর নাহলে তোমাকে মেরে ফেলবো”।

শেষপর্যন্ত তিনি আর সহ্য করতে পারেননি এবং ১৯৩৮ সালে স্বামীর কাছ থেকে পৃথক হয়ে যান। যদিও তারা বিবাহবিচ্ছেদ করেননি এবং ১৯৭৮ সালে তার স্বামী মারা যান।

মিজ মোরানো ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ করে গেছেন এবং আর কখনো বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

“কারো আধিপত্য আমি মেনে নিতে চাইনি” নিউ ইয়র্ক টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন।

মাত্র কয়েক বছর আগে তার দেখভালের জন্য পূর্ণকালীন একজন সাহায্যকারী নেন তিনি। গত ২০ বছর যাবত তিনি তার দুই কক্ষের ছোট অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে বেরও হননি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জেরন্টোলজি রিসার্চ গ্রুপের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক মানুষ এখন জ্যামাইকার ভায়োলেট ব্রাউন, যার জন্ম ১৯০০ সালের ১০ই মার্চ।

 

Check Also

আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইল বাংলাদেশ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ভারতকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।