সিটিং সার্ভিস: বাস-মিনিবাস বন্ধ রাখায় দুর্ভোগ

ক্রাইমবার্তা রিপোট:রাজধানীতে বাস ও মিনিবাস চলাচল বন্ধ করে দিয়ে গণপরিবহনের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে যাত্রীদের জিম্মি করে ফেলেছেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নগরবাসী।
সিটিং সার্ভিস বন্ধে চলমান অভিযানের দ্বিতীয় দিনে সোমবার নগরীতে এমন চিত্র দেখা গেছে।

গাড়ি পেতে স্টপেজগুলোতে দীর্ঘ সাময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। দীর্ঘ সময় পর পর গাড়ির দেখা মিললেও ভীড়ের কারণে অনেকেই গাড়িতে উঠতে পারেননি। বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থী ও নারীদের ভীড় ঠেলে গাড়িতে উঠতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।

পাশাপাশি সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে। এমনকি অনেক বাসেই আগের মতোই সিটিং সার্ভিসের ভাড়া আদায় করা হয়। এনিয়ে প্রতিবাদ করায় গণমাধ্যম কর্মীসহ যাত্রীদের মারধরও করেছে পরিবহন শ্রমিকরা।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, নগরীতে মোবাইল কোর্টের অভিযান বন্ধ এবং সিটিং সার্ভিস ফের চালুর কৌশল হিসেবেই বাস-মিনিবাস বন্ধ রেখেছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা। এছাড়া অনেক গাড়িতে নানান ধরনের ত্রুটি থাকায় মোবাইল কোর্টের সাজা এড়াতেও গাড়ি বন্ধ রেখেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সোমবার সকালে মহাখালী, ফার্মগেট, মিরপুরসহ কয়েকটি স্থানে যাত্রীদের উপচেপড়া ভীড়। দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে গাড়ি আসলেও ভেতরে যাত্রী ভরপুর থাকায় এসব স্পট থেকে যাত্রীদের অল্প কয়েকজনই গাড়িতে উঠতে পেরেছেন।

প্রচণ্ড রোদের মধ্যে গাড়ি পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে অনেক যাত্রীকে। দুপুরের পর থেকে রাজধানীর সড়কগুলো একপ্রকার ফাঁকা হয়ে যায়। এতে অফিস থেকে বাসাগামী যাত্রীরা আরও বেশি বিড়ম্বনায় পড়েন।

যাত্রীদের অভিযোগ, মূলত অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের কৌশল হিসেবেই পরিবহন নেতারা সিটিং সার্ভিস বন্ধের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন। কারণ আইনে সিটিং সার্ভিস বলতে সেবা কখনো ছিল না। আর সিটিং সার্ভিসের নামে আদায়কৃত ভাড়ার পরিমাণ সরকার নির্ধারিত হারের দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ।

তারা বলেন, বর্তমানে লোকাল বাসে ঠাসাঠাসি করে যাত্রী নিলেও কোথাও কোথাও ভাড়া নিচ্ছে আগের চেয়েও বেশি। আবার কোনো কোনো বাসে সামান্য কমালেও সরকার নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করছে।

এদিকে গাড়ি বন্ধ রেখে যাত্রীদের দুর্ভোগ সৃষ্টিকারীদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিচ্ছে গণপরিবহন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)।

সড়কে গাড়ি কম থাকার বিষয়টি স্বীকার করে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, রাস্তায় গাড়ি কম বের হয়েছে সেটা সঠিক। যেসব গাড়ির কাগজপত্রে গণ্ডগোল রয়েছে সেগুলো মোবাইল কোর্টের সাজার ভয়ে রাস্তা নামছে না।

তিনি বলেন, যারা গাড়ি নামাচ্ছেন না, তাদের সঙ্গে কথা বলছি।

সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, মিরপুরের বিভিন্ন গলিতে শত শত গাড়ি বন্ধ অবস্থায় পার্কিং করে রাখা হয়েছে। মিরপুর সিরামিকস সড়কেই হিমাচল, বিকল্প, রবরব, বিহঙ্গ, আকিক, অছিম, আল মক্কাসহ বিভিন্ন বাস কোম্পানির শতাধিক বাস রাস্তার দুই পার্শ্বে পার্কিং করে রাখা হয়েছে।

বিহঙ্গ পরিবহনের চালক পরিচয় দেয়া আবদুস সালাম বলেন, রাস্তায় মোবাইল কোর্ট, ভাড়া নিয়ে যাত্রীরা মারামারি করে- এসব ঝামেলা এড়াতেই কোম্পানির লোকজন গাড়ি বের করতে নিষেধ করেছে।

 

Check Also

প্রত্যেকটা অফিসের কেরানি পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর : আসিফ মাহমুদ

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।