ক্রাইমবার্তা স্পোর্টস ডেস্ক:মানবজন্মে কোনটা সবচেয়ে বেশি দরকারি? খুব বড় রকমের সাফল্য নাকি ভালো মানুষ হওয়া? মানুষের মুখে মুখে একজন সত্যিকারের মানুষের পরিচয়ে স্মরণীয় হয়ে থাকা। বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানের বয়স মাত্র ২১। কিন্তু এইটুকু মাথাই অনেক পরিণত। এই যেমন ভারতীয় একটি সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দ্য ফিজ সাফ জানিয়ে দিলেন, জীবনে গ্রেট ক্রিকেটার হতে না পারলেও ঠিকই ভালো মানুষ হিসেবে সবার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকতে চান অমিত প্রতিভাবান এই বোলার।
মুস্তাফিজ খুব বিনয়ের সাথেই বলেছেন তার ভক্তদের, কতোটা ভালো খেলতে পেরেছি জানিনা, কতোটা পারবো সে নিয়েও ভাবছি না তবে একজন ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলে সবার মাঝে নিজের জায়গাটা চিরস্মরণীয় রাখতে চাই।
টাইমস অব ইন্ডিয়ায় মঙ্গলবার প্রকাশিত রিপোর্টে মুস্তাফিজের মূল কথাটাই হলো, ‘যদি গ্রেট ক্রিকেটার নাও হতে পারি, অন্তত একজন ভালো মানুষ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকতে চাই।
তবে মুস্তাফিজ খুব ন¤্রতা ও বিনয়ের সাথে সবাইকে আরো একটা কথা বলতে চান। আর তা হলো তাকে নিয়ে এই যে হই চই অভিষেকের পর থেকেই, তা তিনি খুব যে উপভোগ করেন তা নয়। নিজেকেও খুব বড় কিছু মানেন না। মুস্তাফিজ বলেছেন, ‘সাফল্যের বিষয়টি আমি আমার মাথাতেই ঢুকতে দেই না। আপনারা আমাকে জিজ্ঞেস করতে থাকেন আমার ব্যাপারে, বড় হয়ে যাওয়ার বিষয়ে, বলেন অমিত প্রতিভা, আরো কতো কিৃআমি কিন্তু তাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না।
এখন তিনি আইপিলে। গেলবার ১৬ ম্যাচে ১৭ উইকেট নিয়ে সেরা উদীয়মান খেলোয়াড় হয়েছিলেন। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন করতে ছিল তার বড় ভূমিকা। সেনসেশনাল এই ক্রিকেটার এবার আইপিএলের প্রথম দুই ম্যাচের সময় ছিলেন দেশে। তৃতীয় ম্যাচে খেলেছেন। ভালো খেলতে পারেননি। তারপর শেষ দুই ম্যাচে আর একাদশে ছিলেন না।
কাটার মুস্তাফিজের আত্মপ্রকাশ ২০১৫ সালে, ভারতের বিপক্ষে ক্রিকেট বিশ্ব কাঁপানো বোলিং করে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক সিরিজের সেরা খেলোয়াড়, ১৩ উইকেট ৩ ম্যাচে। তার ভিনগ্রহের কাটারের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের নতুন এক পোস্টার বয় হয়ে ওঠেন ফিজ। ২০১৫ তে এই বিধ্বংসী বাঁহাতি পেসারের কাছে মাথা নত করতে হয়েছিল ভারতের। এই মুস্তাফিজ তখন ক্রিকেট বিশ্বে দ্বিতীয় বোলার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন যে কিনা ওয়ানডের পরপর দুই ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়েছে। এরপর ধারাবাহিক সাফল্য তার।
তখন ১৯ বছর বয়স। মুস্তাফিজ খুব দ্রুতই উন্নতির চূড়ান্ত শিখরে পৌঁছে যান অভিষেকে ভারতের একের পর এক বিশ্বসেরা ব্যাটসম্যানদের মাঠ থেকে সাঝঘরে পাঠিয়ে দিয়ে। প্রথম ম্যাচেই। তার শিকারের মধ্যে ছিলেন বিরাট কোহলি, মহেন্দ্র সিং ধোনি, রোহিত শর্মা, অজিঙ্কা রাহানের মত বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান। প্রথম ম্যাচে ৫০ রানে ৫ উইকেট ও দ্বিতীয় ম্যাচে ৪৩ রানে ৬ উইকেট নিয়ে তখন র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বে ১ নম্বর ভারতকে সেই সিরিজে নাকানি-চুবানি খাইয়েছিলেন মুস্তাফিজ। নিজেদের মাঠে ২-১ এ সিরিজটা জিতেছিল বাংলাদেশ।