দলের পুরনো ঐতিহ্য ফেরাতে কাজ করছে বিএনপি : মির্জা ফখরুল

ক্রাইমবার্তা রিপোট: বিএনপি তার পুরোনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছে এ মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি একথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে দলে নবীন ও প্রবীণদের সমন্বয়ে সেই ঐতিহ্য ফেরত আনতে পারবে।7
হাওর অঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেহেতু বর্তমান শাসকদল জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না তাই তারা হাওর অঞ্চলের জনগণের কথা চিন্তা করছে না। কিন্তু সরকারের জন্য উচিত হবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এই হাওর অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে অতিদ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।
রামপাল ইস্যুতে তিনি বলেন, বিএনপি অবস্থান আগেও স্পষ্ট করেছি এখনও স্পষ্ট আমরা (বিএনপি) রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র না হওয়ার পক্ষে। অথচ সরকার রামপলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র করবে কারণ যে কোম্পানী এ কাজ করবে সেটি এবং ভারতের কাছে তারা এ ব্যাপারে দায়বদ্ধ।
বিএনপির নির্বাচনে অংশ গ্রহণ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, তার দল নির্বাচনে তখনই যাবে যখন সরকার নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবে। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হামলা বন্ধ করতে হবে। সব নেতাকর্মীকে মুক্তি দিতে হবে। একই সাথে নির্বাচনকালিন সহায়ক সরকার, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করারও দাবি জানান তিনি। শিগগিরই নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা জনগণের সামনে তুলে ধরা হবে বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব।
সংবিধানে মোতাবেক বিএনপিকে নির্বাচনে যেতে হবে এমন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এর দায়িত্বটা তাদের। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে সেই সুযোগ তার নষ্ট করেছে। দলীয় সরকার নিয়ে এসে নির্বাচনে যাওয়ার জন্য প্রধান বাধা। এটাকে তাদের সরাতে হবে। আমাদের দলের নেতাকর্মীদের হাজার হাজার মামলা দিচ্ছে এই অবস্থায় আমরা নির্বাচনে যেতে পারিনি। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার পর নিবার্চনে যাওয়ার প্রশ্ন উঠে না।
আগামী নিবার্চনে না গেলে বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে এমন প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপির নিবন্ধন বাতিল হবে এর উত্তর আগেই দিয়েছি। আমরা নিবন্ধন নিয়ে নট কনসান। বিএনপিকে বাদ দিয়ে আকেটা নির্বাচন করুক না। বিএনপির দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এর আগে একটা নিবার্চন করে দেশের জনগণ থেকে শুরু করে কোথায় কোনো লেজিটিমিসি পায়নি। এমন কি ভারতের কাছ থেকেও। আবার এ রকম একটি নির্বাচন হলে দেশের মানুষ ও বিশ্বের কেউ মেনে নিবে না।
নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রুপরেখা সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, কোন পদ্ধতি নির্বাচন হবে তা আগেই আমাদের পার্টির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, আমরা নির্বাচনকালিন সরকারের রুপরেখা দিব। এই রুপ রেখে নিয়ে আমরা কাজ করছি। পজেটিভলি এগুচ্ছি। নির্বাচন কমিশন গঠনের সময় আমরা ১৩ দফা প্রস্তাব দিয়ে ছিলাম যা ছিল অত্যন্ত নিরপেক্ষ। কিন্তু তা গ্রহণ করা হয়নি।
নির্বাচকালীন সরকারের রুপরেখে নিয়ে আমরা জনগণের মতামত নিচ্ছি। অতি অল্প সময়ের মধ্যে তা জাতির সামনে তুলে ধরা হবে। সেই নিবার্চন দল নিরপেক্ষ হবে। জনগণ যাতে ভোট দিতে পারে। জনগণের অধিকার রক্ষা হয়। সময় মতই আমরা সেই রুপরেখা দিবো।
নবগঠিত ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আংশিক কমিটি দিয়েছেন। এই প্রথম নগর বিএনপিকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। আমরা অত্যন্ত আশাবাদী তরুণ ও প্রবীণের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে যা জনগণের মাঝে নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে পারবে। জনগণকে নিয়ে আন্দোলন করতে পারবে।
চট্টগ্রাম সিটিতে জলাবদ্ধতা নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এখন দুর্নীতিকে জাতীয়করণ করা হয়েছে। তারা (সরকার) শুধু উন্নয়নের মডেল করছে কিন্তু কোনো মাষ্টার প্ল্যান করে কাজ করছে না। ফলে এ জনদুর্ভোগ দেখা দিচ্ছে।

Check Also

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করেননি সমাজী

জুলাই-আগস্টের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।