ক্রাইমবার্তা রিপোট: কওমি মাদরাসার স্বীকৃতি ইস্যুতে মিডিয়া এখনো সরগরম। নিউজে নানাভাবে উঠে আসছে বিষয়টি। সঙ্গে আসছে কওমি ধারার বহুল আলোচিত অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম ইস্যু। অনেক পত্রিকাই রিপোর্ট করছে রাজনীতি এবং আগামী নির্বাচনে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যেতে পারে হেফাজতকে। তবে হেফাজত সংশ্লিষ্ট আলেমগণ বলছেন এসব স্রেফ গুজব।
হেফাজন নেতৃবৃন্দের মতে, কওমি স্বীকৃতির ইস্যু নিয়ে বিরোধীরা নারাজ হয়েছেন। এ কারণে আলেমদের বিতর্কিত করতে তোলা হচ্ছে বিভিন্ন প্রসঙ্গ।
২৫ এপ্রিল একটি অনলাইন পত্রিকা রিপোর্ট করেছিল হেফাজতে ইসলাম ইসির কাছে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন চেয়েছে। বিষয়টি হেফাজতের এক নেতার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি জানান, তথ্যটি মিথ্যা। কারণ হেফাজত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সামাজিক সংগঠন হিসেবে। যা সমাজ থেকে ঈমান-ইসলাম বিরোধী কার্যক্রম বিলুপ্তিতে কাজ করছে। ২০১৩ সালে যেমনটি হয়েছিল। কিন্তু রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হেফাজতের কাছে কখনো মূখ্য ছিল না। ভবিষ্যতেও হবে না।
বুধবার একটি দৈনিকে ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি হেফাজতে ইসলামের টার্গেট ৩০ আসন’ শিরোনামে প্রতিবেদন এলে জনমনে গুঞ্জন তৈরি হয়। হেফাজত কি তাহলে সত্যিই রাজনীতির মাঠে আসছে? প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে সংসদ নির্বাচনে?
প্রশ্নগুলো নিয়ে হেফাজতের ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা ও ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ’র সঙ্গে যোগাযোগ করলে রিপোর্টটিকে তিনি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেন।
তিনি বলেন, কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের সনদকে মাস্টার্সের সমমান দেওয়ার স্বীকৃতি ঘোষণায় হিংসা ও বিদ্বেষের আগুন জ্বলছে বাম ও কথিত প্রগতিশীলদের ঘরে ঘরে। কিন্তু তাদের এই চিৎকার চেঁচামেচিতে যুগ যুগ ধরে প্রজ্বলিত এই আলোকমশাল নিভবে না। ইসলামবিদ্বেষীরা এখন খেই হারিয়ে কখনো হেফাজতে ইসলামকে টেনে আনছে এই প্রক্রিয়ায়। হেফাজতে ইসলাম এবং কওমির স্বীকৃতি কখনো এক নয়। একটি হচ্ছে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি যা আমাদের অধিকার, আর হেফাজতে ইসলাম হচ্ছে এ দেশের গণমানুষের ঈমান ও আকিদা সংরক্ষণে আমাদের দায়িত্ব, যা আমাদের কাছে নবীর উত্তরাধিকার।
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, দুটো বিষয়কে এক করে যারা পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছেন, তারা নিজেরাই এ ঘোলা পানিতে হাবুডুবু খেয়ে মরবেন, পৃথিবীতে টিকে থাকবে কেবল যা কিছু সত্য ও সুন্দর।
মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, কিছু ইসলাম বিদ্বেষী তাদের পেশি শক্তি দিয়ে ইসলামি মূল্যবোধকে আহত করতে চায়। আমীরে হেফাজত, শায়খুল ইসলামআল্লামা শাহ আহমদ শফী হেফাজতে ইসলাম এবং হেফাজতের শীর্ষ নেতৃত্বকে তারা বিতর্কিত করতে চায় তথ্য সন্ত্রাসের মাধ্যমে। এগুলো আজগুবি সংবাদ।
রিপোর্টটিতে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়া আলেমদের ব্যাপারে জানতে চাইলে মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, যে নামগুলো এসেছে সেগুলোও অনুমান করে লেখা। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এরা কারা? অনেককেই আমি চিনি না। তারা কিভাবে হেফাজতের হয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে?
প্রতিবেদনে ইসলামি জোট করার ব্যাপারে আপনার স্বীকারুক্তি রয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ওই সাংবাদিকের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত রাজনীতি ও আমাদের রাজনৈতিক দল ইসলামি ঐক্যজোট বিষয়ে কথা হয়েছে। এটাকে নিয়ে তিনি হেফাজতের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেছেন। ইসলামী ঐক্যজোট তো ভিন্ন জিনিস এবং ইসির নিবন্ধনপ্রাপ্ত রাজনৈতিক দল। সুতরাং এ দলের অধীনে জোট হতেই পারে। সেখানে হেফাজত ইস্যু আসবে না।
নির্বাচন সামনে রেখে নিবন্ধিত ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দল নিয়ে কোনো জোটের কাজ চলছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইসলামী ঐক্যজোটের উদ্যোগে এরকম কিছু হতে পারে।
হেফাজতের ইসলামের উদ্দেশ্য এবং কাজ নিয়ে মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঈমানী, দীনি, আত্মশুদ্ধিমূলক, দেশ জাতি, মানবতার কল্যাণকামী সংগঠন। রাজনীতির সাথে এর নুন্যতম সংশ্লিষ্টতা নেই। তাই হেফাজত নির্বাচনমুখী চিন্তা ভাবনা নেই এবং নির্বাচন করার প্রশ্নই উঠে না।
তিনি বলেন, হেফাজতকে রাজনীতির সঙ্গে মিলিয়ে হলুদ সাংবাদিকতার নজির স্থাপন করা হচ্ছে। যা কখনোই কাম্য নয়।
সূত্র : আওয়ার ইসলাম
Check Also
আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইল বাংলাদেশ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে ভারতকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. …