ক্রাইমবার্তা রিপোট: মমতা নয় তিস্তা ইস্যুতে মোদিই ভরসা। ভারতের জলপাইগুড়ির মেটেলিতে মেয়ের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এমন মন্তব্য করেছেন। সফর শেষে লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারাজে অবসরে এরশাদের সফরসঙ্গী দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা জানান।
তিনি বলেন, তিস্তার পানি চুক্তি নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের মধ্যে এ নিয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে বা হবে। এ নিয়ে আমাদের কোন মন্তব্য নেই। তবে আমরা আশাবাদি শীঘ্রই তিস্তার পানি চুক্তি হবে। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরে হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারাজে অবসরে বিশ্রাম নেয়ার পর ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন দলের চেয়ারম্যান এরশাদ। গত ২২ এপ্রিল এই স্থলবন্দর দিয়ে তার পৈতৃক ভিটা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কুচবিহার জেলার দিনহাটার এলাকায় যান তিনি।
জাপার মহাসচিব বলেন, গত বুধবার তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে পাশে বসিয়ে ডুয়ার্সের মেটেলির বাতাবাড়িতে জামাইয়ের বাড়িতে যান বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি ওইদিন বিকেল সাড়ে তিনটায় তার জামাই তথা তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি রেজাউল বাকির বাড়িতে আসেন। সেখানে তাঁকে রাজকীয় সম্বর্ধনা দেওয়া হয়। এরশাদের পাশে ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি নূরজাহান বেগম।
সেই সময়েই তিস্তার জলবন্টন চুক্তি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বলেন, তিস্তার জল নিয়ে একবার নয়, এক হাজার বার বলব। তিস্তার জল আমাদের চাই। পশ্চিমবঙ্গ সরকার গাজলডোবায় তিস্তা নদীতে বাঁধ দিয়ে জল নিয়ে যাচ্ছে। আর আমাদের নদিতে একফোঁটাও জল নেই। আমাদের কৃষকেরা জলের জন্য হাহাকার করছেন। তিস্তার জল নিয়ে মমতার সঙ্গে কোন কথাই বলব না। আমাদের মোদীজির উপর ভরসা আছে। এই চুক্তি নিয়ে তাই আমরা মোদীজির সঙ্গেই কথা বলব। তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির মন্তব্য প্রসঙ্গে তাঁর জামাই রেজাউল বা তৃণমূলের জেলা সভাধিপতি নূরজাহান বেগম কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
গতকাল বৃহস্পতিবার ৫ দিনের সফর শেষে দেশে ফিরেছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। মমতা এরশাদের মধ্যে কোন বৈঠক হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে জাপা’র মহাসচিব বলেন, এটি এরশাদ সাহেবের পারিবারিক সফর। পারিবারিক কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন মাত্র। রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান বা তিস্তার পানি চুক্তি নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোন বৈঠক না হলেও জামাইয়ের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন, ছেলে এরিক এরশাদ, দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনিল শুভ রায়, ব্যক্তিগত সচিব মোহাম্মদ জসিম ও সহকারী মোহাম্মদ ওহাব।
উল্লেখ্য, এরশাদ হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্ম অবশ্য ভারতের কোচবিহার জেলায়। পরবর্তী সময়ে তাঁর পরিবার বাংলাদেশে চলে যায়। রাষ্ট্রপতি থাকার সময়েও ভারত এবং পশ্চিমবঙ্গের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাবই দেখিয়েছেন তিনি। কিন্তু সাম্প্রতিক তিস্তা জলবন্টন চুক্তি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেঁকে বসায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর উপরে আর ভরসা করতে রাজি নন এরশাদ।
Check Also
ক্ষমতায় গেলে নারীদের সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে জামায়াত : ডা. শফিকুর রহমান
ক্ষমতায় গেলে নারীদের সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে জামায়াত মন্তব্য করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির …