অনলাইন
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, কোচিং বাণিজ্য ও গাইড বই বন্ধে সরকার আইন করতে যাচ্ছে। যে শিক্ষকরা ক্লাসে না পড়িয়ে কোচিংয়ে পড়াতে ব্যস্ত থাকেন, তাদেরকেও এ আইনের আওতায় আনা হবে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের জন্য আয়োজিত ‘কানেক্টিং ক্লাসরুম’ শীর্ষক এক ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
রাজধানীর লা মেরিডিয়ার হোটেলে ব্রিটিশ কাউন্সিল এ প্রোগ্রামের আয়োজন করে।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক শামসুল হুদা।
সভাপতিত্ব করেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের পরিচালক বারবারা উইকহ্যাম।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের গুজবের কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সরকারের নানা উদ্যোগের কারণে গত তিন বছর ধরো কোনো ধরনের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি। প্রতিবছরই পরীক্ষা শুরুর সময় ফেসবুকসহ নানা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁসের যে গুজব ছড়ানো হয়, তা ভিত্তিহীন।
তবে এখনও পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা বা এক ঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাচ্ছে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এর সাথে এক শ্রেণির দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষক জড়িত। পরীক্ষার হলে বিতরণের উদ্দেশে যে শিক্ষকরা নির্দিষ্ট স্থান থেকে প্রশ্নপত্র আনতে যান, তারাই মাঝ পথে এ প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দিচ্ছেন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত এ শিক্ষকরা শিক্ষক নামের কলঙ্ক, এরা কুলাঙ্গার। এবার এমন কিছু কুলাঙ্গার শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
নীতিবান শিক্ষকরা সরকারের শিক্ষা পরিবারের মাথার তাজ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন শিক্ষকদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় দুর্নীতিগ্রস্থ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সরকার বদ্ধপরিকর।
এদিকে নতুন প্রজন্মকে আধুনিক ও প্রযুক্তি সম্পন্ন জ্ঞানে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে চলেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, নায়েম ২৪ ধরনের প্রশিক্ষণ পরিচালনা করছে।
তবে তিনি বলেন, এ শিক্ষকদের নিজেদেরকে আগে নৈতিকতাবোধ ও মূল্যবোধ সম্পন্ন হতে হবে। তা না হলে তারা নতুন প্রজন্মকে চরিত্রবান, দেশপ্রেমিক ও ভাল মানুষ হিসেকে গড়ে তুলতে পারবেন না।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রিটিশ কাউন্সিলের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের যৌথ উদ্যোগে শিক্ষার মান উন্নয়নে ‘কানেক্টিং ক্লাসরুম’ প্রোগ্রাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং সরকারের শিক্ষার লক্ষ্য অর্জনে তা সহায়ক হবে।
বারবারা উইকহ্যাম বলেন, এ দেশের শিক্ষার্থীদের ২১ শতকের জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করানোই তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ। এ লক্ষ্য অর্জনে তারা এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে চলেছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে শিক্ষকরা ভূমিকা রাখতে পারবেন। আর শিক্ষকদেরকে মটিভেট করতে আজ শিক্ষা কর্মকর্তাদের জন্য ব্রিটিশ কাউন্সিল এ ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের আয়োজন করেছে।
তিনি বলেন, ব্রিটিশ কাউন্সিল ও ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যশনাল ডেভেলপমেন্ট (ডিএফআইডি) যৌথ অর্থায়নে ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশে কানেক্টিং ক্লাসরুম প্রোগ্রামটি চালু আছে। এ প্রোগ্রামকে দেশব্যাপি আরো কার্যকর করতে সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সাথে ব্রিটিশ কাউন্সিলের একটি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। এ চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা কর্মকর্তাগণ সরকারের শিক্ষাসংক্রান্ত নীতিমালা বাস্তবায়নের অধীনে আমাদের এ প্রোগ্রামকেও কার্যকর করতে ভূমিকা পালন করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।