নিজস্ব প্রতিনিধি:
দালাল এবং পুলিশ আতঙ্কে সাতক্ষীরা সদরের সরকার দলীয় লোক সহ সাধারণ মানুষ চরম হয়রানির শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে সদরের আগরদাঁড়িসহ সীমান্ত অঞ্চলের মানুষ চরম আতঙ্কে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছে। দালাল এবং পুলিশ আতঙ্কে রাতে বাড়ি পুরুষ শূন্য হয়ে পড়েছে । এতে সরকার ও আওয়ামীলীগের সুনাম নষ্ট হচ্ছে।
সাতক্ষীরা সদরের শিয়ালডাঙ্গা,গদাঘাটা,আগরদাড়ি,নারায়নজোল,বাশদহা,চুপড়িয়া,হরিশপুর,কুশখালি,কাথন্ডা,বৈকারিসহ সীমান্তবর্তী অঞ্চলের কিছু দালাল শ্রেণীর লোক পুলিশের ভয় দেখিয়ে প্রতিনিয়ত সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে চলেছে।চাঁদা না দিলে তাদের জামায়াত শিবির বানিয়ে রাতে পুলিশে দিয়ে তুলে এনে টাকা আদায় করছে। যার একটি অংশ ও দালাল পেয়ে থাকে।
আগরদাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান জানান,আগরদাড়ি গ্রামের আতা ছিটার(আতাউর রহমান) এবং আবুল হাসান সহ কয়েকজন দালালের কারণে রাতে সাধারণ মানুষের ঘুম হারাম হয়ে পড়েছে। আতা নিজেকে আওয়ামীলীগের লোক বলে দাবী করলেও মুলত সে আওয়ামীলীগের কোন অঙ্গ সংগঠনের কর্মী নন। সে প্রকৃত পক্ষে এক জন দালাল ও চিটার। সে দিনের বেলা পরিকল্পনা করে কে জমি বিক্রয় করল বা কিনল,কে গরু বিক্রয় সহ বিভিন্ন লেনদেনের খবর নিয়েই রাতে পুলিশ দিয়ে তাদেরকে হয়রানি করে। অন্যদিকে হাসান থাকে ঢাকায়। সে মাঝে মাঝে বাড়ি এসেই তার প্রতিপক্ষকে হয়রাণি করে থাকে। আগর দাঁড়ী কামিল মাদ্রাসার মোড়ে দোকানে বসা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন,বাবা আমার নাম জানতে পারলেই রাতে আতা আমাকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেবে। আতা আগরদাড়ি মাদ্রাসার শিক্ষক নাশকতা মামলার আসামী মাওলানা মাহফুজের কাছ থেকে প্রতিমাসে চাঁদা পেয়ে থাকে । সে আগরদাড়ি তালবাগ এলাকার আবুল আসাদের নিকট থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা,সরদার পাড়ার ব্যবসায়ি আবুল কালামের কাছ থেকে আশি হাজার টাকা,হাসান ও হামিদের কাছে থেকে এগার হাজার টাকা,গদাঘাটা তাওহীদের কাছ থেকে চল্লিশ হাজার টাকা, আগরদাড়ির মনিরুজ্জামানের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা,হেলালের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা,আবু তাহেরের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা, আদায় করে। টাকা না দেয়াতে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ আগরদাড়ির কাদের বক্সের পুত্র রফিকুল,কারিগরপাড়ার ইয়ারুল ইসলাম ও নারায়ন জলের আব্দুল আলি সহ অসংখ্য ব্যক্তিকে। এছাড়া আগরদাড়ি গ্রামের আব্দুল গফ্ফরের পুত্র আব্দুল লতিফকে গ্রেফতার করবে না এ শর্তে আতা লতিফের কাছে দুই হাজার টাকা দাবী করে। লতিফ টাকা না দিয়ে আদালতে আতœসমর্পন করেন। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর লতিফকে জেলা খাটার জন্য হুমকী দেয়।
পুলিশ ও আতার কারণে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ইমারত গাজির পুত্র আবুল,মাদ্রাসা মোড়ের আব্দুর রউফ,মাষ্টার কালিমুলøাহ,নুরুল আমিন বিশ্বাস,মোহাম্মদ আলী ,নজরুল ইসলাম, আব্দুল হান্নান, লাল বাবু, আবু সাইদ, আবু সালেম, আব্দুল মালেক সহ এসব এলাকার কয়েকশ মানুষ । সর্বশেষ গত ২৮ এপ্রিল রাতে এসআই কামাল ও এএসআই আব্দুল মালেক আগর দাড়ি কারিগর পাড়ার জুতা ব্যবসায়ী খলিলুর রহমানকে গ্রেফতার করে এক লÿ টাকা দাবি করে। সর্বশেষ পঁচিশ হাজার টাকা চায় তারা। খলিলের স্ত্রী জোবেদা খাতুন কোনো টাকা দিতে পারবেনা জানালে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে এসে মামলা দিয়ে চালান দেয়।
শিবপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আগরদাড়ি ইছালে ছওয়াব মাহফিলে জেলা প্ররিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম,সদর সংসদ সদস্য মীর মো¯Íাক আহম্মদ রবি,সহকারী পুলিশ সুপার এর উপস্থিতিতে দালাল ও পুলিশকে টাকা না দিতে জনগণকে আহবান জানান। তারপরও থেমে নেই টাকা আদায়ের মহোৎসব। এলাকার একাধিক লোক জানায় আতা প্রায়ই লোক দেখিয়ে বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তার কাছে মোবাইলে তথ্য দিয়ে ধরিয়ে দেয়। কখনো পুলিশের শাহিন ভাই,কামাল ভাই,মালেক ভাই,আবার কখনো ওসি সাহেব সম্বোধন করে কথা বলে। এ কারণে জনগণ আরো ভীর্ত সন্ত্রস্থ্য হয়ে পড়ে।
আগরদাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মজনুর রহমান মালি সহ বিশিষ্ট জনদের মতে সাধারণ মানুষ পুলিশ ও দালালদের টাকা দেয় হয়রানি থেকে মুক্ত পাওয়ার আশায়। জনগণ টাকা দেয়া বন্ধ করলে গ্রেফতার বন্ধ হবে। এসব অঞ্চলে বিশিষ্টজনরা জানান, দীর্ঘ দিন ধরে পুলিশ ও স্থানীয় দালালদের কারণে সাধারণ মানুষ রাতে ঘরে থাকেতে পারছে না। এসব এলাকার মানুষ অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু হয়ে পড়েছে । অহেতুক শুধু মাত্র টাকা আদায়ের জন্য গ্রেফতার করে এমনকি মারপিট করে রাতেই বিপুল পরিমান টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে । তারা সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার ,জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাংবাদিকের হ¯Íক্ষেপ কামনা করেছেন। ৩০ /৪/১৭