ক্রাইমবার্তা রিপোট:প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারত সফরকালে কোনো চুক্তি বা সমঝোতা স্মারকই দেশের স্বার্থবিরোধী নয়। তাই ভারতের সাথে দেশের স্বার্থবিরোধী চুক্তি সম্পাদন হয়েছে- এ ধরনের বিবৃতি সম্পূর্ণ অসত্য, মনগড়া, অবিবেচনা প্রসূত ও বাংলাদেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করার প্রচেষ্টা মাত্র। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন, সার্বভৌম এবং আত্মমর্যাদা সম্পন্ন দেশ। দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো চুক্তি আওয়ামী লীগ সরকার করবে না।
বুধবার বিকেলে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদের অধিবেশন প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরের বিস্তারিত তুলে ধরে বলেন, ভারতে সফরকালে বাংলাদেশের সঙ্গে সেই দেশের যে সমস্ত চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে তার সবগুলোর শিরোনাম ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কোনো চুক্তি বা সমঝোতা স্মারকই দেশের স্বার্থবিরোধী নয়। তিনি বলেন, তিস্তা নদীর চুক্তির বিষয়টি আওয়ামী লীগের সরকারের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সম্পাদনের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক ও তৎপর। ভারত সফরকালে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন চুক্তি দ্রুত করার জন্য আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে জোর আহ্ববান জানিয়েছি।
৮ এপ্রিল ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সম্প্রচারিত আমার ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদী দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, তার সরকার ও আমার সরকার ক্ষমতায় থাকতেই তিস্তার পানিবণ্টনের সমাধান হবে। অন্যান্য নদীর বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
নোটিশ পেলে সামরিক চুক্তি নিয়ে জানাবেন প্রধানমন্ত্রী
সংসদে নোটিশ পেলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পাদিত সব সামরিক চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি সম্পূরক প্রশ্নে ভারত ছাড়া অন্য কোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বিষয়ে সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে কি-না জানতে চান। চীনের সঙ্গে এ বিষয়ে কী চুক্তি হয়েছিল তা জানাতে তিনি সংসদ নেতাকে অনুরোধ করেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি আমাদের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে রয়েছে। চীন, রাশিয়া, কুয়েত, কাতারসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ডিফেন্সের চুক্তি আছে। ডিফেন্সের বিভিন্ন জিনিস ক্রয়ে আমাদের বহু দেশের সঙ্গে চুক্তি আছে। তবে চীনের সঙ্গে সমাঝোতা চুক্তিটি বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে হয়। এই চুক্তির বিষয়ে একটি কথাও তারা বাংলাদেশের কাউকে জানতে দেয়নি। তারা সংসদেও এই চুক্তির বিষয়টি জানায়নি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের স্বার্থে আমি বিভিন্ন দেশ সফর করি। সেখানে অনেক চুক্তি বা সমাঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করি আর যা কিছু করি দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করে দেশের মানুষকে সুন্দর জীবন দেওয়ার জন্য। ভারতের সাথে আমাদের যেসব চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক হয়েছে সবগুলি দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করার জন্য করা হয়েছে। এসব চুক্তির ফলে দেশের উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে।