ক্রাইমবার্তা রিপোট:গাজীপুর সংবাদদাতা, বাংলাদেশে নিযুক্ত অষ্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনার জুলিয়া নিবলেট বুধবার গাজীপুরের শহীদ তাজ উদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে “ওয়াক ফর লাইফ” প্রকল্পের কার্যক্রম পরিদর্শন করেছেন। বাঁকা পা নিয়ে জন্ম নেয়া বা মুগুর পা (ক্লাবফুট) শিশুদের চিকিৎসা কার্যক্রম করা হয় এ প্রকল্পের চিকিৎসা কেন্দ্রে। সরেজমিনে পরিদর্শনকালে তিনি অসুস্থ্য ও চিকিৎসা শেষে সুস্থ্য হওয়া শিশু এবং তাদের বাবা-মার সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তিনি চিকিৎসা কেন্দ্রের কার্যক্রম ও সাফল্য দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি প্রকল্পের কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য হাসপাতালের পরিচালক, অধ্যক্ষসহ “ওয়াক ফর লাইফ” টিমের সকলকে ধন্যবাদ জানান।
পরিদর্শনকালে জুলিয়া নিবলেট এর সঙ্গে তার স্বামী ড. পিটার শ্যানন, অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশনের পাবলিক ডিপ্লোমেসি অফিসার ফাইরুজ নিগার অদিতি, শহীদ তাজ উদ্দীন আহমেদ মেডিকলে কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. সৈয়দ মো: হাবিবুল্লাহ, অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. আসাদ হোসেন, উপ-পরিচালক ডা. মো: আলী হায়দার খান, সহকারী পরিচালক ডা. মো: কমর উদ্দীন, বিএমএ গাজীপুর এর সভাপতি ডা. আমির হোসেন রাহাত, ডা. মো: ওয়াকিল আহমেদ, “ওয়াক ফর লাইফ” এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো: শরিফুল ইসলাম খান ও ক্লিনিক ম্যানেজার ও পনসেটি চিকিৎসক মো: জামিল হোসেন, দি গ্লেনকো ফাউন্ডেশন (ওয়াক ফর লাইফ) এর প্রতিষ্ঠাতা কলিন ম্যাকফারলেন উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ওয়াক ফর লাইফ প্রকল্পটি দি গ্লেনকো ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রনালয়ের অংশীদারিত্বমূলক একটি প্রকল্প। অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের অর্থায়নে এ প্রকল্পটি ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করে। এ পর্যন্ত সমগ্র বাংলাদেশে “ওয়াক ফর লাইফ”(ডধষশ ঋড়ৎ খরভব) প্রকল্পটি ১৯ হাজারেরও বেশী মুগুর পা বা ক্লাবফুট-শিশুকে তাদের ক্লিনিকে চিকিৎসার আওতাভুক্ত করেছে। ২০১০ সালের ১৫ এপ্রিল প্রকল্পটির মাধ্যমে গাজীপুরের শহীদ তাজ উদ্দীন আহমেদ মেডিকলে কলেজ হাসপাতালে “ওয়াক ফর লাইফ” ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু হয়। এ ক্লিনিকে এ পর্যন্ত ৫৩৪ জন ক্লাবফুট-শিশুকে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে।
“ওয়াক ফর লাইফ” ক্লিনিকের ম্যানেজার মোঃ জামিল হোসেন জানান, এ ক্লিনিকে গাজীপুর ও আশেপাশের এলাকা থেকে আগত ক্লাবফুট-শিশুদেরকে বিনামূল্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। তিন বছরের কম বয়সী এ রোগে আক্রান্ত শিশুদেরকে প্রতি বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগন চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন।
তিনি জানান, প্রতিবছর বাংলাদেশে আনুমানিক ৩৫০০-৪০০০ শিশু ক্লাবফুট নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এটি একটি শারীরিক সমস্যা যেখানে বাচ্চার পায়ের পাতা ভিতরের দিকে বাঁকানো থাকে। এর চিকিৎসা সময়মত না করালে এটি সারা জীবনের জন্য বিকলাঙ্গতা বা পঙ্গুত্ব বয়ে নিয়ে আসে। এসব শিশু পরবর্তীতে পরিবারের জন্য বোঝা হয়ে যায়, যা দারিদ্রের অন্যতম একটি কারণ।
তিনি আরো জানান, গত বছরের ১৯ নবেম্বর ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে “দি গ্লেনকো ফাউন্ডেশন” তাদের “জাতীয় ক্লাবফুট চিকিৎসা কার্যক্রম” (ওয়াক ফর লাইফ-ডধষশ ঋড়ৎ খরভব) সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও ক্লাবফুট চিকিৎসায় বিশেষ অবদানের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ-সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের পদক লাভ করে।