প্রকাশ : ০৩ মে ২০১৭,
চাকরির দাবিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ভিসি অধ্যাপক ড. একেএম নূর-উন-নবীকে তার কক্ষে অবরুদ্ধ করে রেখেছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
বুধবার বেলা ১১টা থেকে অবরুদ্ধ ভিসির খাবার সরবরাহও বন্ধ করে দিয়েছে ছাত্রলীগ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বেলা ১১টায় দল বেঁধে এসে ভিসির কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এরপর তারা সেখানে ঘোষণা দেন, তাদের নেতাকর্মীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দিতে হবে, তা নাহলে তারা সেখান থেকে সরবেন না।
প্রায় এক ঘন্টা ধরে এ অবস্থা চলতে থাকে। এক পর্যায়ে বেলা ১২টায় চাকরি না দেয়া পর্যন্ত আমরণ অনশনের ঘোষাণা দিয়ে অবস্থান শুরু করে ছাত্রলীগ। এতে নিজ কার্যালয়ের অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বেরোবি ভিসি। ছাত্রলীগ ভিসি অফিসের স্টাফদের কক্ষেও তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।
সন্ধ্যা ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কার্যালয়ের ভেতরে ভিসি এবং বাইরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা অবস্থান করছিলেন।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ভিসি হিসেবে অধ্যাপক নূর-উন-নবীর শেষ কার্যদিবস। এর আগের দিন তাকে অবরুদ্ধ করে অন্তত ২০ নেতাকর্মীর চাকরি দাবি করছে ছাত্রলীগ।
পুলিশ জানায়, চাকরির দাবি নিয়ে ভিসির সঙ্গে দেখা করতে যায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক কমিটির নেতা হাদীউজ্জামান হাদী, শহীদ মুখতার ইলাহি হল শাখার সভাপতি ইমতিয়াজ বসুনিয়া, তিতাশ চন্দ্র, কেন্দ্রীর ছাত্রলীগ সদস্য ফয়সাল আজম ফাইন, আজিজুল হাকিম রাসেল, বঙ্গবন্ধু হল শাখার সাধারণ সম্পাদক মৃতিশ চন্দ্র বর্মণ, তৌফিকুর রহমান তুষার, রাজীব মণ্ডলসহ প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী।
এসময় ভিসি তাদের দাবির মেনে নেয়ার বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে তারা ভিসি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির নেতাকর্মীরাও আন্দোলনে যোগ দেন।
আন্দোলনের ব্যাপারে সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, তারা ছাত্ররাজনীতি করতে গিয়ে বিভিন্ন মামলার শিকার হয়েছেন। অনেক মামলা চলমান। তাদের সরকারি চাকরি হওয়ার সম্ভবনা নেই। তাই কর্মজীবন নিশ্চিত করতে তাদের চাকরি দিতে হবে।
ছাত্রলীগ নেতা হাদীউজ্জামান হাদী বলেন, ভিসি দীর্ঘ দিন ধরে যোগ্যতার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাদের চাকরি দেয়ার আশ্বাস দিলেও তা কার্যকর করেননি। তবে অস্থায়ী ভিত্তিতে হলেও চাকরি নিশ্চিত করতে হবে।
৫ মে ভিসির মেয়াদ শেষ হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি এই সময়ের মধ্যে ভিসি ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়োগ না দিয়ে যান, তবে তাকে অপমানিত হয়ে ক্যাম্পাস থেকে বিদায় নিতে হবে।
বেরোবি ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি তুষার কিবরিয়া বলেন, শুনেছি ছাত্রলীগের কিছু সাবেক নেতা ভিসির সঙ্গে দেখা করতে গেছেন। তাদের দাবির বিষয়ে ভিসি সঠিক পদক্ষেপ নিবেন বলে আশা করি।
এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে অবরুদ্ধ ভিসি অধ্যাপ নূর-উন-নবীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।