ক্রাইমবার্তা রিপোট:সরকার বিএনপি ফোবিয়ায় ভুগছে বলে মন্তব্য করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ রোববার বিকেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির এক কর্মী সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি নাকি নাই, বিএনপির নাকি অস্তিত্বই নাই, বিএনপি নাকি ভীতু রাজনৈতিক দল-এসব কথা বলে। তাহলে আপনারাদের বক্তব্যে-কর্মকাণ্ডের মধ্যে সারাক্ষণ বিএনপি ভীতি কেনো, সবসময় বিএনপি ফোবিয়াতে ভোগেন কেনো। দুঃস্বপ্নে ভোগেন কেনো যে বিএনপি ক্ষমতায় আসছে?
তিনি বলেন, সরকারি দলের নেতারা কর্মীদের বলেছেন যে, ভালো করে কাজ করেন, ক্ষমতায় যদি যেতে না পারেন, তাহলে টাকা-পয়সা যা কামিয়েছেন, তা নিয়ে পালাবারও পথ পাবেন না। তাই হবে, তারা পালাবারও পথ খুঁজে পাবে না।
রাজধানীর গুলিস্তানে কাজী বশির (মহানগর নাট্যমঞ্চ) মিলনায়তনে দক্ষিণ মহানগরের উদ্যোগে এই কর্মীসভা হয়।
স্থান সংকুলান না হওয়ায় মিলনায়তনের বাইরেও অসংখ্য নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে কর্মী সভা সমাবেশে পরিণত হয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি শামসুল হুদা, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানী, মহানগর যুব দলের গোলাম মওলা শাহিন, মহানগর ছাত্র দলের খন্দকার এনামুল হক, জাকির হোসেন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
উপস্থিত ছিলেন, মহানগরের সহসভাপতি ইউনুস মৃধা, মীর হোসেন মীরু, নাসিমা আক্তার কল্পনা, ফরিদ উদ্দিন, মোহাম্মদ মোহন, জয়নাল আবেদিন রতন চেয়ারম্যান, যুগ্মসম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিব, আনম সাইফুল ইসলাম, শেখ রবিউল আলম রবি, আলী রেজাউর রহমান রিপন, আব্দুস সাত্তার, আব্দুল হান্নান, সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর আহমেদ রবিন, সাইফুল ইসলাম পটু, সহসাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন নান্টু, গোলাম কিবরিয়া, হাজী মো: লিটন, দফতর সম্পাদক সাঈদুর রহমান মিন্টু, প্রচার সম্পাদক আব্দুল হাই পল্লব, মহানগর নেতা কাউন্সিলর আব্দুল কাদের, হাজী টিপু সুলতান, জুম্মন মিয়া চেয়ারম্যান, শামসুল আলম চিনু, শফিকুল ইসলাম রাসেল, সাঈদ হোসেন সোহেল, রফিকুল ইসলাম স্বপন, আব্দুল আজিজ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
কর্মীসভা পরিচালনা করেন মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে যেসব আইন তৈরি করছেন, সেগুলো আপনাদের জন্য, সংবিধান পরিবর্তন করছেন তাও আপনাদের জন্য। আর বলছেন সংবিধানের অধীনেই নির্বাচন করতে হবে।। নির্বাচন তো আমরা করতে চাই। কিন্তু সেই নির্বাচনে আপনারা বাঁধার সৃষ্টি করে রাখবেন, আপনারা একা খেলতে পারেন সেই অবস্থা তৈরি করে রাখবেন?
তিনি বলেন, আমরা যারা বিরোধী দলে আছি, আমরা কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবো না, তাহলে কী আহম্মক যে, সেই নির্বাচন করতে যাবো? আমরা সেই নির্বাচনে যাবো, যে নির্বাচনে লেভেল প্ল্যায়িং ফিল্ড থাকবে। যে নির্বাচনে সবার সমান সুবিধা থাকবে। অবশ্য নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচন হতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী কক্সবাজারে মেরিন ড্রাইভ রাস্তার উদ্বোধন করেছেন। আওয়ামী লীগ প্রচার করে যেন প্রধানমন্ত্রী নতুন একটা উন্নয়নের কাজ করেছেন। এই মেরিন ড্রাইভ শুরু হয়েছিলো খালেদা জিয়ার আমলে। শুধু তাই নয়, বলা হচ্ছে এয়ারপোর্ট নতুন করে আন্ত:র্জাতিক বিমান বন্দরে পরিণত করেছেন, সেটারও কাজ শুরু হয়েছিলো বেগম খালেদা জিয়ারই আমলে।
কক্সবাজারের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যে জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ১৯৭৫ সালে গণতন্ত্র হত্যা করেছে, একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসেননি। জনগণ তাকে নিয়ে এসেছে, সৈনিকরা তাকে নিয়ে এসেছে এবং তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়া সংসদীয় গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে দিয়েছে। অর্থাৎ আপনারা গণতন্ত্র ধবংস করেন আর বিএনপি আবার গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করে।
ভিশন ২০-৩০
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা ভিশন ২০-৩০ অর্থাৎ ২০৩০ সালে বিএনপি কী করবে এটা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আগামী ১০ তারিখ জানাবেন জাতির সামনে। সে সম্পর্কে উনারা (আওয়ামী লীগের নেতারা) কী বলছেন এটা নাকী ধাপ্পাবাজি। ইতিবাচক রাজনীতিকেও তারা ধাপ্পাবাজি বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে যে উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে, সেই উন্নয়ন কী? উন্নয়ন হচ্ছে তাদের লুণ্ঠন ও লুটপাট। ২০১৪ সালে ৭৪ হাজার কোটি টাকা এদেশ থেকে পাচার হয়ে গেছে। কারা এগুলো লুট করছে, আওয়ামী লীগের লোকেরা লুট করেছে।
সারাদেশে বিরোধী নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার ও নিপীড়নের কথা তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল।
কাল উত্তরের কর্মী সভা
আগামীকাল সোমবার বেলা আড়াইটায় রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইন্সটিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হবে। কর্মীসভায় প্রধান অতিথি থাকবেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।