ছাত্রলীগে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই প্রধান কাজ : ওবায়দুল কাদের

ক্রাইমবার্তা রিপোট:সংগঠনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রথম ও প্রধান কাজ বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সে লক্ষ্যে নিজের দল ভারী করার জন্য কমিটিতে পরগাছাদের স্থান না দিয়ে যোগ্য কর্মীদের স্বীকৃতি দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

রোববার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘কারাগারের রোজনামচা’ বিতরণ ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ পরামর্শ দেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্রলীগের বর্তমানে প্রথম ও প্রধান কাজ হচ্ছে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা। সেজন্য প্রয়োজন ‘প্যারাসাইট’ (পরজীবী) মুক্ত কমিটি গঠন করা। কমিটি গঠনে দলভারী করার উদ্দেশ্যে নেতারা যদি অনুপ্রবেশকারী পরগাছাদের স্থান দেয়ে তাহলে এখান থেকে ভালো রেজাল্ট আশা করা যায় না।
কমিটি গঠনে আঞ্চলিকতার পরিবর্তে যোগ্যতার স্বীকৃতি দেয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, কর্মীদের যোগ্যতার স্বীকৃতি দিতে হবে। কমিটি গঠনের সময় সভাপতির পকেটে একটা কমিটি সাধারণ সম্পাদকের পকেটে আর একটা- এই রীতি ভাঙতে হবে। আঞ্চলিকতা ও জেলা ভিত্তিক রাজনীতির কারণে কাউকে বাদ দেয়া যাবে না। রাজনীতিতে লেজুড়বৃত্তি পরিহার করার পরামর্শ দিয়ে আওয়ামী লীগের এ সাধথারণ সম্পাদক বলেন, কারো গ্রুপ মেইনটেন করা যাবে না। গ্রুপ মেইনটেইন করলে তো আর ছাত্রলীগ থাকে না। এ সময় তিনি ছাত্রলীগের কমিটিতে পরজীবীদের অন্তর্ভূক্তিতে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন ।
কোন ঘটনায় কমিটি স্তগিত করার সিদ্ধান্তকে পরিহার করার পরামর্শ দিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমি কমিটি স্থগিত করার পক্ষে নই। কারণ, মাথা কেটে ফেলা কোন সমাধান নয়। কমিটি কেন স্থগিত করে রাখবে? কেউ যদি বেশি অপরাধ করে তাহলে তার বিরুদ্ধে শক্ত সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে হবে। একটা কমিটির সবাই তো আর অপরাধ করেনি তাহলে কেন এর দায়ভার সবাই নিবে?
সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
এদিকে মন্ত্রী ছাত্রলীগকে শৃঙ্খলা বজায় রাখার কথা বললেও অনুষ্ঠান শুরুর আগেই টিএসসিতে সরকারী বাঙলা কলেজ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-আমিনের অনুসারীদের মধ্যে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দু’গ্রুপের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরে ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতারা এসে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, যদি রাজনীতি করতে চাও, তাহলে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা বই দুটি পড়তে হবে। এ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে। সৎ সাহস নিয়ে রাজনীতি করলে আদর্শবান রাজনীতিবিদ হওয়া যায় বলে এসময় তিনি উল্লেখ করেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা এতদিন বলত পুলিশের বাধার কারণে কর্মসূচী পালন করতে পারেনি। এখন মির্জা ফখরুল ৩০০ আসনে ৯০০ প্রার্থীর ঘোষণার থেকে সাংগঠনিক সফরে প্রতিদিন নিজেরা মারামারি করে। পক্ষান্তরে সম্মেলনের পর কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের কোনো প্রতিনিধি সভায় সামান্যতম গোলমাল হয়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পুলিশ বাধা দিচ্ছে এসব কথা না বলে আপনারা স্বীকার করুন আপনারা নিজেরা নিজেদের বাধা দিয়ে নিজেদের সভা পণ্ড করছেন। নিজেরা একে অন্যকে সরকারের এজেন্ট বলছেন, পার্টি অফিসে ধাক্কাধাক্কি করছেন। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছেন না।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে এভং সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনের সঞ্চলনায় অনুষ্ঠানে অনান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স, ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মিজানুর রহমান, দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ প্রমুখ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মহানগরের অন্যন্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

Check Also

সন্ধ্যায় আবারো সড়ক অবরোধ তিতুমীর শিক্ষার্থীদের

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তরে কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত প্রকাশ না করায় আবারো সড়ক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।