ক্রাইমবার্তা রিপোট:যশোরের সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ছয়জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৩৭ জন। নিহতদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীও রয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে সদর উপজেলার যশোর-কুষ্টিয়া মহাসড়কের সাতমাইল বাজারে কাছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি যাত্রীবাহী বাস গাছে ধাক্কা দিলে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
নিহতের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- মাগুরা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের অরবিন্দু কুমার রায় (৫২) ও তার স্ত্রী ইতি রানী রায় (৪৫), ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বাদুরগাছা গ্রামের তারাপদ বিশ্বাসের ছেলে রামপ্রসাদ বিশ্বাস (৪২), যশোর পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের গাড়িচালক ইনামুল হক (৫৫) ও যশোর সদর উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের লোকমান হোসেনের স্ত্রী রিজিয়া খাতুন (৩৫)।
আহতদের যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে আহতদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা ও আহতদের ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনবাসন কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার খুলনা থেকে ছেড়ে আসা রূপসা পরিবহনের একটি বাস (যশোর-ব-১১-০০৮৪) কুষ্টিয়া যাওয়ার পথে সাতমাইল বাজারের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে কড়াই গাছে ধাক্কা খায়। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত হন। আহত হন আরও ৩৮ জন।
পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করে। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহত মাগুরার অরবিন্দু ও ইতি রানীর স্বজনরা জানান, তারা দুজন খুলনায় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হন। ইতি রানী ঘটনাস্থলে মারা যান। আর অরবিন্দু হাসপাতলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
নিহত ঝিনাইদহের রামপ্রসাদ বিশ্বাসের শ্বশুর পঞ্চানন গাইন বলেন, যশোরে মেয়েকে চিকিৎসেকর কাছে এনেছিলেন। মেয়েকে কেশবপুরে পাঠিয়ে দিয়ে রামপ্রসাদ ফিরছিলেন। পথিমধ্যে দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
যশোরের সিভিল সার্জন গোপেন্দ্রনাথ আচার্য জানান, আহতের সার্বিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জেলা ত্রাণ ও পুনবাসন কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, ‘বাস দুর্ঘটনায় ছয়জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে চারজনের পরিচয় সনাক্ত হয়েছে। হাসপাতাল থেকে আহত ৩৭ জনের তালিকা পেয়েছি।’
তিনি জানান, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নিহতের প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা ও আহতদের ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেয়া হবে।
এদিকে দুর্ঘটনার পর হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট পিযুষ কান্তি ভট্টাচার্য, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল, পৌর মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আসাদুল হক, পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান প্রমুখ।
তারা আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। একই সঙ্গে চিকিৎসায় সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।