ক্রাইমবার্তা রিপোট:বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় দাবিকৃত ২ লাখ টাকা উৎকোচ না দেয়ায় মনির সরদার (২২) নামে এক যুবককে থানায় নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ অভিযোগে গৌরনদী থানার এএসআই মো. মহিউদ্দিনকে জেলা পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।
মঙ্গলবার মনিরকে থানায় নিয়ে নির্যাতন করে তার হাত ভেঙে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার স্বজনরা।
মনির সরদার গৌরনদীর খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ইল্লা গ্রামের মোসলেম সরদারের ছেলে। দেড়মাস আগে তিনি কাতার থেকে দেশে আসেন।
পুলিশ জানায়, মনির মাদক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি।
মনিরের বাবা মোসলেম সরদার জানান, ২০১৪ সালের ৯ মে মনির কাতার যায়। স্থানীয় প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রে ওই বছরের ২০ জুলাই থানা পুলিশ উদ্দেশ্যমূলকভাবে মনিরকে একটি মাদক মামলায় আসামি করে।
মনিরের বোন শিল্পি বেগম জানান, প্রায় তিন বছর কাতারে প্রবাস জীবন কাটিয়ে তার ভাই দেড়মাস আগে দেশে ফিরে আসে। খবর পেয়ে গৌরনদী থানার এএসআই মো. মহিউদ্দিন পুরনো মিথ্যা মাদক মামলার ওয়ারেন্ট দেখিয়ে গত মঙ্গলবার দুপুরে মনিরকে কালকিনি উপজেলার খাসেরহাট এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
মনিরের আরেক বোন ইয়াসমিন বেগম জানান, গ্রেফতারের পর থানায় নিয়ে তার কাছে ২ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করেন এএসআই। দাবিকৃত টাকা না দিলে ৫শ’ পিস ইয়াবা দিয়ে আরেকটি নতুন মামলায় তাকে আদালতে চালান দেয়ার হুমকি দিয়ে মনিরকে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনে তার হাত ভেঙে যায়।
তিনি জানান, এরপর মনিরকে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ওই রাতে তাকে জেলা পুলিশ হাসপাতালে গোপনে চিকিৎসা করিয়ে বুধবার দুপুরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাহাবুব আলম মির্জা বলেন, পুলিশ মনির নামের এক রোগীকে মঙ্গলবার রাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। তাকে গণধোলাইয়ের হাত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
মনিরের পিঠে লাঠির আঘাতের ২টি চিহ্ন দেখেছি। তখন ডান হাতে ব্যাথার কথা বলেছিল মনির। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে ডা. মির্জা জানান।
আসামি নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে এএসআই মো. মহিউদ্দিন বলেন, মাদক মামলার ওয়ান্টেভুক্ত আসামি মনির সরদারকে গ্রেফতার করে আমি থানায় নিয়ে এসেছি। এরপর কী হয়েছে আমি তা কিছুই জানি না।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি ফিরোজ কবির বলেন, মনিরকে ভূরঘাটা থেকে গ্রেফতারের সময় মনির পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে। এ সময় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পড়ে গিয়ে তার হাতে ব্যাথা পায়।
তিনি বলেন, তারপরও মনিরের স্বজনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে এএসআই মহিউদ্দিনকে জেলা পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে মনিরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
মনিরের পুরো পরিবারটি মাদক পরিবার হিসেবে পরিচিত বলে দাবি করে ওসি ফিরোজ কবির আরও জানান, মনিরের বড় ভাই রাসেল সরদারের বিরুদ্ধে ডাকাতি ও মাদকের ১৪টি মামলায় ওয়ারেন্ট রয়েছে।