ক্রাইমবার্তা রিপোট:বিতর্কিত ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএম ইস্যুকে আবারো সামনে নিয়ে আসা ‘দুরভিসন্ধিমূলক’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রিজভী বলেন, দুইদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা ও প্রধানমন্ত্রীর তনয় বলেছেন, আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। বৃহস্পতিবারে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দেয়া বক্তব্য সেটিরই প্রতিধ্বনি মনে হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য সরকারের ইচ্ছা পূরণেরই প্রতিফলন।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি, ইভিএম বিষয়টি আবার সামনে নিয়ে আসা দুরভিসন্ধিমূলক।
ইভিএম পদ্ধতি ক্রটিপূর্ণ মন্তব্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারের জনপ্রিয়তা এখন শূণ্যের কোঠায় নেমে গেছে, সেজন্যই প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ভোট কারচুপির জন্য বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছেন কিনা- এটা এখন মানুষের মধ্যে বড় ধরনের প্রশ্ন হিসেবে দেখা দিয়েছে। ইতিপূর্বে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ভারতসহ অনেক দেশে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন নিয়ে বির্তক হওয়ায় সেখানে এই মেশিনের ব্যবহার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বা আংশিক রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, পত্রিকায় দেখলাম, ভারতের কোন রাজ্যের উপ-নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার হচ্ছিল, সেখানে এমপিরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। গত কয়েদিন আগে ভারতে কিভাবে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট কারসাজির ঘটনা ঘটেছে তা ছবিসহ প্রকাশ করেছে। জার্মান আদালত ২০০৯ সালে এক রায়ে বলেছে, ইভিএম সহজে টেম্পারিং করা সম্ভব, এতে ভোট পুণঃগণনার সুযোগ নেই। তাই জার্মান আদালত ওই মেশিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীন গোষ্ঠি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের উচ্ছৃঙ্খল সন্তানরা এখন বেপরোয়া হয়ে নারীর প্রতি সহিংস হয়ে উঠেছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ওপর চাপ প্রয়োগ করে এরা নারকীয় তাণ্ডবলীলা চালিয়ে আইনের কাছে অধরাই থেকে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ও ঝিনাইদহের দু‘জন নারী শ্রমিক ঢাকায় কাজের খোঁজে আসার পথে তাদের শ্লীলতাহানীসহ এরকম অসংখ্য ঘটনা দেশবাসীকে গভীর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি বিদ্যমান বলেই অনাচারের বিষাক্ত ডালপালা সারাদেশে ছড়িয়ে গেছে। এই সংস্কৃতি পশু ও মানুষের মৌলিক পার্থক্য ঘুচিয়ে দিয়েছে।
ঊর্ধ্বমুখী দ্রব্যমূল্য নিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের পুরো সময় চাল, ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার ছিল ক্ষমতাসীন দলের সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে। গত এক সাপ্তাহে দাম লাফিয়ে লাফিয়ে দ্বিগুন হয়ে গেছে। সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী গালভরা বুলি আওড়িয়ে ছিলেন রমজানে কোনো পণ্যের দামই বাড়বে না। ওনার বক্তব্যে যে বাচালতা তা প্রমাণ হয়েছে। বরং ক্ষুধা নিয়ে, মানুষের দারিদ্র্যতাকে নিয়ে, মানুষকে কষ্ট দিয়ে মানুষের সঙ্গে রসিকতা করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী। জনগণের পকেট কাটার জন্য রমজান মাসে বাজার নিয়ন্ত্রণ না করে সরকার তাদের সিন্ডিকেটকে সহায়তা করছে।
তিনি বলেন, আমি বিএনপির পক্ষ থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করছি এবং সকল নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনার জোর আহ্বান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করীম শাহিন, বাবুল আহমেদ, মুনির হোসেন, জাহেদুল কবির জাহিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।