পাইকগাছায় অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার মামলা : পুলিশ কয়েকটি সূত্র ধরে তদন্ত করছে

ক্রাইমবার্তা রিপোট:পাইকগাছা প্রতিনিধি ॥পাইকগাছার গাঙরক্ষি নদীর চরে গোস্টগার্ডের অস্ত্র, গুলি উদ্ধার, যুবক আটক, থানায় মামলার ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্থানীয় বিরোধের দলাদলি, রূপকের অতীত কর্মকান্ড ও মামলা সহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে তদন্ত করছেন বলে জানা গেছে। স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ এলাকাবাসী একে অপরের বিরুদ্ধে কাঁদা ছড়াছড়ির অভিযোগের ঘটনায় এলাকায় এক শ্রেণীর মানুষ অপরাজনীতিতে জড়িত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আদালতের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন।21

জানা গেছে, গত বুধবার দুপুরে পাইকগাছা-কয়রার সীমান্তে গাঙরক্ষি বাজারের নিজ দোকানে বসা অবস্থায় কয়রার হড্ডা গ্রামের নিরোধ সরকারের ছেলে রূপককে কোস্টগার্ড আটক করে এবং এক পর্যায়ে তার দোকানের পিছনে নদীর চর থেকে তাদের নিশানা মতে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হয়। শনিবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন কালে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, লাঞ্চিত করে ৩ ব্যবসায়ীকে চরে নামিয়ে ট্রেগারবিহিন ২টি পাইপান ও ৬ রাউন্ড বন্দুকের গুলি উদ্ধার করেন। বৃহস্পতিবার রাতে অসুস্থ অবস্থায় রূপককে পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় কোস্টগার্ডের পশ্চিম জোনের প্রতিনিধি সামছুল আলম বাদী রূপকের নামে মামলা করেন। সে বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। এদিকে রূপককে ষড়যন্ত্রমূলক ফাঁসানোর দাবী করে তার বোন কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলন করেছে। সূত্র জানিয়েছে, স্থানীয় বিরোধে দলাদলী, গত ইউপি নির্বাচনে কোন্দল, রূপকের বিরুদ্ধে মামলা সহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস,আই আসিকুজ্জামান তদন্ত করছেন বলে জানা গেছে। এলাকায় দোষারোপের রাজনীতির তথ্য দিয়ে এ বিষয়ে কুমখালীর ৫নং ওয়ার্ড সদস্য বিপুল কুমার মন্ডল তাকে জড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের একাংশ ভিত্তিহীন দাবী করে বলেন, ঘটনার সময় শান্তা বাজারে থাকাবস্থায় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছিয়ে জানার চেষ্টা করা হলেও কোস্টগার্ড তাকে কাছে যেতে দেয়নি। একটি পক্ষ বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা করে ঘটনা ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। জটিল এ বিষয়টি অনেকটা রহস্যবৃত উল্লেখ করে থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তবে মামলার স্বার্থে তিনি এর বাইরে কিছু বলতে চাননি।

উচ্চ শিক্ষিত মানুষের উচ্চ মানের ঘাবলা

চান্নিরচক এল,সি কলেজিয়েট স্কুলে আর্থিক অনিয়ম সহ তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগের অভিযোগ

পাইকগাছা প্রতিনিধি ॥

কয়রার চান্নিরচক এল,সি কলেজিয়েট স্কুলের অডিট রিপোর্টে আর্থিক অনিয়ম, দূর্নীতি, নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ বাতিলের পর অধ্যক্ষ অবসরে যাওয়ার ৩ মাস পর ঐ পদে নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ও আদালতে ২ পক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলায় প্রবল আপত্তির মুখে কর্তৃপক্ষ নিয়োগ বাতিল করতে বাধ্য হন। সর্বশেষ এ পদে আবারো দিপংকর সানাকে পুনঃনিয়োগ দেখানোর ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় গভর্ণিং বডির সভাপতি, বিদায়ী অধ্যক্ষ, কমিটি সংশ্লিষ্ট অনেক সদস্যের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এদিকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঐ পদে নিয়োগ দেখালেও শিক্ষক কর্মচারী হাজিরা খাতা ও বেতন ফর্মে ঐ কর্মচারীর স্বাক্ষর নেই বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ সেপ্টেম্বর’১৬ তারিখে চান্নিরচক এল,সি কলেজিয়েট স্কুলের নিম্নমান সহকারী ও কম্পিউটার পদে ১৮ নিয়োগ প্রত্যাশী প্রার্থীর মধ্যে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় চান্নিরচক গ্রামের হিরন্ময় সানার ছেলে দিপংকর সানাকে প্রথম স্থান দেখিয়ে নিয়োগ প্রদান করা হয়। অপরদিকে নিয়োগ বঞ্চিত দু’প্রার্থী বগুড়ারচকের ক্ষিতিশ মন্ডলের ছেলে দিবাকর মন্ডল ও চান্নিরচকের বিনোদ সানার ছেলে চয়ন কুমার সানা নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়ম, দূর্নীতি ও নিয়োগ বাতিলের দাবীতে ৫ সেপ্টেম্বর’১৬ তারিখে কয়রায় সংবাদ সম্মেলন ও ২০ সেপ্টেম্বর’১৬ তারিখে প্রতিষ্ঠানের গভর্ণিং বডির সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেন্দ্রনাথ সরকার, অধ্যক্ষ হরপ্রসাদ মন্ডল, কমিটি সংশ্লিষ্ট তরুন মন্ডল, গোবিন্দ কুমার সানা সহ নিয়োগপ্রাপ্ত দিপংকর সানাসহ ১৩জনের বিরুদ্ধে কয়রা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী ৯৫/১৬ নং মামলা দায়ের করলে পরিস্থিতি ভিন্ন মাত্রায় রূপ নেয়। জানা গেছে, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নির্বাচনী বোর্ডের সুপারিশক্রমে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া ঐক্যমতের ভিত্তিতে ২৯ সেপ্টেম্বর’১৬ তারিখে সংশ্লিষ্ট কমিটি নিয়োগ বাতিল করলে আবারো বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে। নিয়োগ বাতিল হলে এর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিপংকর সানা সংশ্লিষ্ট কমিটির বিরুদ্ধে একই আদালতে পাল্টাভাবে দেওয়ানী ১৪৬/১৬ মামলা দায়ের করলে কমিটি শ্যাম রাখি না কুল রাখি অবস্থায় পড়ে। নিয়োগ প্রত্যাশী চয়ন কুমার সানা ও দিবাকর মন্ডল সহ এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, অধ্যক্ষ হরপ্রসাদ মন্ডল অবসর গ্রহণের ৩ মাস পর কাকতালীয়ভাবে ১ জানুয়ারি’১৭ দিপংকর সানাকে আবারো নিয়োগ দেখানো হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিষ্ঠানের সভাপতি ও বিদায়ী অধ্যক্ষ রেজুলেশনের খাতায় একাধিক সভা দেখিয়ে সর্বশেষ দিপংকরকে নিয়োগ দেখিয়ে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রাজিব বাছাড়ের কাছে রেজুলেশনের খাতা জমা দিলে এটি জানাজানির পর শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য গোবিন্দ সানাকে আহবায়ক করে ৫ সদস্যের অডিট কমিটি স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে প্রায় ৫ লাখ টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এনেছেন বিদায়ী অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। একটি সূত্র জানিয়েছে ১ জানুয়ারি’১৭ তারিখে দিপংকরকে নিয়োগ দেখানো হলেও শিক্ষক-কর্মচারীর হাজিরা খাতা ও বেতন ফর্মে এ পর্যন্ত তার কোন স্বাক্ষর নেই বলে জানিয়েছেন। বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না উল্লেখ করে বলেন, গত ২ ফেব্র“য়ারি’১৭ তারিখে তিনি দায়িত্ব পাবার ২ মাস পর বিদ্যালয়ের নোটিশ ও রেজুলেশন খাতা সাবেক অধ্যক্ষ তার কাছে বুঝিয়ে দেন। সেই সময় তিনি জানতে পারেন দিপংকরকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ অভিযোগ প্রসঙ্গে ০১৯৯৮৯৯৬৪২২ নম্বরে সাবেক অধ্যক্ষ হরপ্রসাদ মন্ডল সাংবাদিক পরিচয় পাবার পর তিনি মোবাইল লাইনটি কেটে দেন। প্রতিষ্ঠান সভাপতি সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমেন্দ্রনাথ সরকার সংশ্লিষ্টদের মতবিরোধের কথা উল্লেখ করে বলেন, কমিটির মতভেদে নিয়োগ বাতিল করা হয়। আবার ঐক্যমতের ভিত্তিতে তাকে নিয়োগ দেয়া হয়। তবে নিয়ম মেনে সবকিছু করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

 

Check Also

আশাশুনির প্রতাপনগরে ৫ আগস্ট বন্দুকের গুলিতে নিহত ৩ শহীদের অভিভাবকদের সংবাদ সম্মেলন

এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।। গত ৫ আগষ্ট-২০২৪ আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরে আওয়ামীলীগ নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।