ক্রাইমবার্তা রিপোট: গাজীপুর সংবাদদাতাঃ গাজীপুরের কালীগঞ্জে নিখোঁজের প্রায় ছয় মাস পর টয়লেটের সেফটিক ট্যাঙ্কি থেকে সোমবার এক যুবকের বস্তাবন্দি কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধারকৃত কঙ্কালটি কালীগঞ্জ উপজেলার বাহাদরসাদী ইউনিয়নের দক্ষিণবাগ এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে সাখাওয়াত হোসেনের (২৯) বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের বন্ধুর বাবা-মা ও মামা-মামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
নিহতের মামা বাদল মিয়া জানান, গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর-বাহাদুরসাদী রুটে মোটরসাইকেলে করে যাত্রী বহনের কাজ করতো সাখাওয়াত হোসেন। গত বছরের ১৬ নবেম্বর রাত ৮টার দিকে মোটর সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয় সাখাওয়াত হোসেন। স্বজনরা বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করে তার কোন হদিস পায় নি। নিখোঁজের পর থেকে তার ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়ে তা বন্ধ পাওয়া যায়। নিখোঁজের পরদিন স্থানীয় জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের গাধাইয়া গ্রাম থেকে সাখাওয়াতের মোটরসাইকেলটি পরিতাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। স্বামীর খোঁজ না পেয়ে ১৮ নবেম্বর সাখাওয়াতের স্ত্রী আয়েশা আক্তার (২৪) বাদী হয়ে সাখাওয়াতের বন্ধু স্থানীয় হুমায়ুন, কাইয়ুম এবং নাজমুলসহ কয়েকজনের নামোল্লেখ করে কালীগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ (নং ৫৯৬) ডায়েরী করেন। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ নিখোঁজের তিনদিন পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হুমায়ুন ও কাইয়ুমসহ কয়েকজনকে আটক করে। কিন্তু পুলিশকে ম্যানেজ করে পুলিশের কাছ থেকে তারা ছাড়া পেয়ে যায়। ছাড়া পাওয়ার পর থেকে তারা পলাতক রয়েছে। সাখাওয়াতের স্ত্রী ছাড়াও লামিয়া (৪) নামের একমাত্র মেয়ে রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কালীগঞ্জ সার্কেল) পঙ্কজ দত্ত জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হুমায়ুনের বাড়ি সংলগ্ন তার চাচাতো ভাই প্রতিবেশি মোশারফ হোসেনের বাড়ির সেফটিক ট্যাঙ্কিতে তল্লাশী অভিযান চালায় পুলিশ। এসময় ওই সেফটিক ট্যাঙ্ক থেকে সাখাওয়াতের বস্তাবন্দি কঙ্কাল ও কাপড় চোপড় উদ্ধার করা হয়। পরে তার পরিবারের সদস্যরা নিহতের জামাকাপড় দেখে নিখোঁজ সাখাওয়াতের লাশ বলে সনাক্ত করেন।
কালীগঞ্জ থানার ওসি আলম চাঁদ জানান, সাখায়াত হোসেন ও হুমায়ুন দুই বন্ধু ছিল। তারাসহ কয়েকজন এলাকা মাদক ব্যবসা করতো। মাদক ব্যবসার বিরোধীতার জেরে এ হত্যাকান্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হুমায়ুন পলাতক থাকলেও পুলিশ তার বাবা আলী আফসার ভাড়ারি ও মা হেনা বেগমসহ তার মামা ও মামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়েছে।