ইসলামী ব্যাংকের জাকাত ফান্ডের ৮০ শতাংশ টাকা যাবে প্রধানমন্ত্রীর ফান্ডে
১৪ মে ২০১৭ – ১৩:৫৫ ১৪ মে ২০১৭ –
অনলাইন ডেস্ক: ইসলামী ব্যাংকের জাকাত ফান্ডের ৮০ শতাংশ টাকা প্রধানমন্ত্রীর জাকাত ফান্ডের মাধ্যমে বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ। বাকি ২০ শতাংশ অর্থ ইসলামী ব্যাংক সরাসরি দুস্থ, গরিব ও অসহায় ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করবে। শনিবার অনুষ্ঠিত ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।|
এ প্রসঙ্গে ইসলামী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এত দিন ইসলামী ব্যাংকের জাকাত ফান্ডের টাকা বিতরণ হতো জামাতপন্থী সংগঠনের কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণ এবং শিবিরের নেতা-কর্মীদের কর্মসংস্থানের জন্য। এ কারণে শনিবারের বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে এই ফান্ডের ৮০ শতাংশ টাকা প্রধানমন্ত্রীর জাকাত ফান্ডের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে। বাকি ২০ শতাংশ টাকা ইসলামী ব্যাংক সরাসরি বিতরণ করবে।’
এদিকে ইসলামী ব্যাংকে এখনও জামায়াত-শিবিরের যেসব কর্মকর্তা আছেন, তারা যাতে কোনও সুবিধা নিতে না পারেন, সে ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে বোর্ডসভায়। এরই অংশ হিসেবে পর্ষদ সভা থেকে ব্যাংকের এইচআরডির প্রধানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলম বলেন, ‘পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শনিবার এইচআরডির প্রধানকে বদলি করা হয়েছে। এছাড়া স্টাফদের মধ্যে জামায়াত ও শিবিরের যেসব কর্মী আছেন, তাদের নেওয়া সুযোগ-সুবিধা কমাতে বেশ কিছু বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এর আগে ইসলামী ব্যাংক থেকে যাদেরকে সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে (সিএসআর) দেওয়া হয়েছে, তাদের লিস্ট স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
জানা গেছে, পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অচিরেই ব্যাংকের বেশ কয়েকটি বিভাগীয় প্রধানকে সরিয়ে দেওয়া হবে।
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আলম বলেন, ‘সিএসআর, পিআরডি বা জনসংযোগ বিভাগ, মার্কেটিং বিভাগ এবং জাকাত ফান্ডের প্রধানকে সরিয়ে দেওয়া হলে পুরো ব্যাংক স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’
জানা গেছে, এত দিন ইফতারি দেওয়ার নামেও জামায়াত ও শিবিরের নেতা-কর্মীদেরকে সহযোগিতা করা হয়েছে। এ বছর ইসলামী ব্যাংক সেখান থেকে সরে আসছে। সাধারণ গরিব মানুষের মধ্যে ১৩ কোটি টাকার ইফতারি বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক উপজেলায় এই ইফতারি বিতরণ করা হবে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় কার্যালয়ের মাধ্যমে।
এদিকে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ থেকে পদত্যাগের জন্য অধ্যাপক সৈয়দ আহসানুল আলমকে হুমকি দেওয়ার প্রসঙ্গটি নিয়েও পরিচালনা পর্ষদে আলোচনা হয়েছে। পর্ষদ থেকে তার নিরাপত্তার বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি পুলিশ পাহারায় শনিবারের বোর্ড সভায় যোগ দেন।
এর আগে তিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে জানিয়েছিলেন, এ বছরের মুনাফা থেকে ৭০ কোটি টাকা ট্রান্সফার করা হয় ইসলামি ব্যাংকের ‘বিতর্কিত’ জাকাত ফান্ডে।-বাংলা ট্রিবিউন