র্যাংকিংয়ে ৬ টাইগাররা
নিউজিল্যান্ডকে বিদেশেও হারাল বাংলাদেশ
অবশেষে বিদেশের মাঠিতেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। এই জয়ের ফলে ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে প্রথমবারের মতো ৬ উঠে এল মাশরাফিরা। ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে কিউইদের ২৭১ রান তাড়া করতে নেমে ৫ উইকেটে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মাশরাফি বাহিনী। তামিম –সাব্বিরের অর্ধশতকের পর মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহও দুরুন ব্যাট করেছেন। মুশফিক ৪৫ ও রিয়াদ ৪৬ রানে অপরাজিত থেকে ১০ বল হাতে রেখেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন। এরআগে শূণ্য রানে সৌম্যকে হারানোর উপলব্ধিই দলকে বুঝতে দেননি তামিম ও সাব্বির । এ দুইজন ১৩৬ রানের জুটি গড়ে জয়ের ভীত গড়ে দেন। বাকী কাজটা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ সম্পন্ন করেছেন। তামিম ও সাব্বির ৬৫ রান করে আউট হয়েছেন। ৪৫ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেই ম্যাচ সেরা হয়েছেন কিপার ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। এই জয়ের ফলে দারুনভাবে উজ্জীবত হয়েই ইংল্যান্ডে আসন্ন চ্যাম্পিয়ান ট্রপিতে মাঠে নামচ্ছেন মাশরাফিরা। বিদেশের মাঠিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬ ম্যাচ হারার পর বুধবার ডাবলিনে ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচ মুখোমুখি হয় বাংলাশে। টস জিতে টাইগার দলপতি প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন। শুরুতেই দলীয় ২৩ রানে কিউই ওপেনার রঞ্চিকে ২ রানে ফিরিয়ে আশার আলো জ¦ালান মোস্তাফিজুর রহমান। কিন্তু সেই আশায় বাধ সাধেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টিম লাথাম ও নিল ব্রুম। এই দুইজনের ১৩৩ রানের জুটি তিনশ পেরোনোর চোখ রাঙ্গানি দিচ্ছিল। কিন্তু নাসির হোসেনের জোড়া আঘাতে তাদের বড় স্কোরের স্বপ্ন ভেঙ্গে দেন। প্রথমবারের মতো সিরিজে খেলতে নেমে ৪৭ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন নাসির। দলীয় ১৫৬ রানে নিল ব্রুম ৬৩ রানে নাসিরের শিকারে পরিণত হন। এরপর কিউই অধিনায়ক লাথামও ফিরেন ৮৪ রানে। টেইলরের অপরাজিত ৬০ রানে সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভাবে কিউইদের স্কোর দাঁড়ায় ২৭০। মাশরাফি ও সাকিব ২টি করে উইকেট লাভ করেন। রুবেল হোসেনও নিয়েছেন এক উইকেট। কয়েকটি ক্যাচ ড্রপ না হলে নিউজিল্যান্ডের স্কোরটা এতো হত কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। ২৭১ রানের জয়ের লক্ষ্যকে সামনে নিয়ে ব্যাট করতে নামেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। ইনিংসের প্রথম বলেই প্যাটেলকে ছক্কা মেরে দল ও নিজের স্কোরের খাতা খুলেন বাঁহাতি ওপেনার তামিম। কিন্তু প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই কোনো রান না করেই প্যাটেলের বলে সৌম্য বিদায় নিলে বিপদের আশঙ্কা দেখা দেয়। তবে সাব্বির তামিমের সঙ্গে যোগ দিয়ে সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে দারুন সব শট খেলে ১৩৬ রানের জুটি গড়েন। এরপর ১৪৩ রানে খেই হারায় বাংলাদেশ মাত্র ১৭ রানের ব্যবধানে তামিম ইকবাল, সাব্বির রহমান ও মোসাদ্দেক হোসেন হারিয়ে দারুন চাপে পড়ে টাইগাররা। এরপর সাকিব ও মুশফিক দেখেশুনে খেলে দলকে ভালমতোই এগিয়ে নিচ্ছিলেন লক্ষ্যের দিকে। কিন্তু ব্যক্তিগত ১৯ রানে বেনেটের বলে সাকিব বিদায় নেন। তখনও বাংলাদেশ ১৭১ রানের জয়ের লক্ষ্য থেকে ৭২ রান দূরে । আর সেই ৭২ রান তুলে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিদেশের মাঠিতে প্রথম জয় তুলতে মাহমুদুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করেন মুশফিকুর রহিম। মাহমুদুল্লাহর যোগ্য সঙ্গ সেই লড়াইকে সহজ করে দেয়। মুশফিক ও রিয়াদ দুইজন অপরাজিত থেকে ৫ উইকেট হাতে রেখে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন। যদিও এই ম্যাচের আগেই ত্রিদেশীয় সিরিজের ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। আইরিশদের বিপক্ষে দুইম্যাচ ও বাংলাদেশের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ান হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। সিরিজের শেষ ম্যাচ তাই ছিল নিয়মরক্ষার। কিন্তু শেষ ম্যাচ জয়ে বাংলাদেশের প্রাপ্তি অনেক। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ দলে একটি পরিবর্তন হয়েছে। আগের ম্যাচের অভিষিক্ত সানজামুল ইসলামের জায়গায় খেলেছেন অলরাউন্ডার নাসির হোসেন। দীর্ঘদিন পর আবারো বাংলাদেশ দলে সুযোগ পান তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ নিউজিল্যান্ড-২৭০/৮ (৫০ওভার), টথ লাথাম ৮৪, ব্রুম ৬৪, টেইলর ৬০*, সাকিব ৪১/২, নাসির হোসেন ৪৭/২, মাশরাফি ৫২/২
বাংলাদেশঃ ২৭২/৫ (৪৮.৫ ওভার), তামিম ৬৫, সাব্বির ৬৫, মুশফিক ৪৫*, রিয়াদ ৪৬* প্যাটেল ৪১/২
বাংলাদেশ দল: মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান (সহ-অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, রুবেল হোসেন, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান, মোসাদ্দেক হেসেন ও নাসির হোসেন।
নিউজিল্যান্ড দল: লুক রঞ্চি (উইকেট কিপার), টম ল্যাথাম (অধিনায়ক), নিল ব্রুম, রস টেইলর, কোরি এন্ডারসন, কলিন মুনরো, জিমি নিশাম, ম্যাট হেনরি, মিচেল স্যান্টনার, হামিশ বেনেট, জিতান প্যাটেল।