আবু সাইদ বিশ্বাসঃ ঘটনাস্থল থেকে : সাতক্ষীরা সদরের আগরদাঁড়ী ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে সম্রাট (৮) কে কুপিয়ে হত্যা করেছে নিজের দাদা। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে আগরদাড়ি ইউনিয়নের বকচরা গ্রামের নিজ বাড়িতে এঘটনা ঘটে। নিহত সম্রাট সদরের আওয়ামীলীগ নেতা আগরদাড়ী ইউনিয়ন চেয়াম্যান মজনু মালীর ছেলে। সে স্থানীয় বকচরা আহম্মদিয়া দাখিল মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। এঘটনায় দাদা ইসরাইল মালীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আগরদাড়ী ইউনিয়ন চেয়াম্যান মজনু মালী এবাররের ইউপি নির্বাচনে আ’লীগের বিদ্রোহীপ্রার্থি হিবেসে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। মজনু মালী জানান, গতকাল রাত ১০টার দিকে তার পিতা ইসরাইল মালী তার ঘরে ঢুকে তার পুত্রকে দা দিয়ে কোপাতে থাকে । এর পর তার কন্যাকে কোপাতে গেলে ইসরাইল মালীর কাছে থাকা দা কেড়ে নেয় চেয়াম্যান মজনু। এতে মজনুর হাত কেটে যায়। ঘটনা স্থলেই চেয়াম্যান মজনুর ছেলে সম্্রাট নিহত হয়।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মারুফ আহমেদ নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, সম্্রাটের দাদা সম্্রাটকে ধারালো দা দিয়ে মাথায় কয়েকটি কোপ মারে। এতে ঘটনাস্থলেই সে নিহত হয়। পরে স্থানীয়রা মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার জন্য সম্রাটকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসরা তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। দাদা ইসরাইল মালীও হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকেই পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।ওসি আরো বলেন, আটককৃত ইসরাইল মানসিক ভারসাম্যহীন বলে পরিবার দাবী করছে। এঘটনা ওসি মারুফ আহমেদ ও ওসি তদন্ত আবুল হাসেম ঘটনাস্থল পরিদশর্ন করেছেন। এঘটনায় এলাকাতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় সম্্রাটের জানাযা নামাজ হওয়ার কথা রয়েছে।
শিশুটির মা সাবিনা মালী জানান, তার শ্বশুর ইসরাইল মালী কয়েকদিন ধরে অস্বাভাবিক জীবনযাপন করছিল। গতকাল দুপুরে মস্তিস্ক বিকৃতির কারণে শাবল নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর সময় স্থানীয়রা একটি মসজিদের মধ্যে তাকে আটকে রাখেন। সেখান থেকে বের হওয়ার পর তার শ্বশুর একটি দা নিয়ে বিভিন্নস্থানে ঘুরে বেড়ান।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়িতে আসার পর ঘুমিয়ে থাকা শিশু সম্রাটকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেন তিনি। পরে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. পরিমল কুমার বিশ্বাস জানান, নিহত সম্রাটের মাথায় তিনটি, গলায় একটি ও বুকের ডান ও বাম পাশে একটি করে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আব্দুল হাশেম জানান, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি দা জব্দ করা হয়েছে। মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না তা দেখা হচ্ছে।
৩০ ডিসেম্বর ২০১৩ জেলার সদর উপজেলার ১১নং আগরদাঁড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আনোয়ারুল ইসলাম আনারকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। তৎকালিন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবির দাবি করেন, ‘অভিযানের একপর্যায়ে বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে আনার নিহত হন। এঘটনায় জামায়াত অধ্যুসিত ইউনিয়নটিতে চেয়ারম্যান্যে পদ শুণ্য হয়। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসিবে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন মজনু মালী। মজনু মালী জেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নানের ভাগ্নে।
Check Also
আশাশুনি সদর ইউনিয়ন জামায়াতের ৮টি ওয়ার্ডে আংশিক কমিটি গঠন
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি প্রতিনিধি।।বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আশাশুনি সদর ইউনিয়নের ৮টি ওয়ার্ডে আংশিক কমিটি গঠন করা …