ক্রাইমবার্তা রিপোট: ফুলবাড়ীয়া (ময়মনসিংহ) সংবাদদাতা:ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়ায় এক বৃদ্ধা মাকে গোয়াল ঘরে রাত্রিযাপনের জন্য রেখে যাওয়ার পর ৩/৪টি শিয়াল কামড়িয়ে ক্ষত বিক্ষত করেছে। বুধবার রাতে এ ঘটনা ঘটলেও কোনো চিকিৎসা করানো হয়নি বৃদ্ধা মায়ের। রোববার সকালে খবর পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান বৃদ্ধা মায়ের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। বৃদ্ধা মায়ের এমন করুণ পরিণতি একটু দেখতে ভিড় করছে মানুষ।
উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নের তেজপাটুলী গ্রামের মৃত মোসলেম উদ্দিনের রয়েছে তিন ছেলে। তারা বিয়েশাদি করে এখন আলাদা। সন্তান-সন্তানাদি নিয়ে তাদের আলাদা সংসার। তিন ছেলের কাছেই বৃদ্ধা মা বিবি মরিয়ম (৮৫) এখন বোঝা। তবে ফেলতে না পারায় মোখলেছুর রহমান, মোবারক হোসেন, মারফত মিয়া- এই তিন ছেলে পালাক্রমে তিন মাস করে দায়সাড়াভাবে ভরনপোষণ করেন বৃদ্ধা মা বিবি মরিয়মকে। বড় ছেলে মোখলেছুরের বাড়িতে তিন মাস পার হওয়ার পর ছোট ছেলে মারফতের বাড়িতে বৃদ্ধা মাকে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ছোট ছেলে মারফতের মনে রাগ জন্মে মায়ের ওপর। কারণ এখন তার থাকার কথা মেঝ ছেলে মোবারকের বাড়িতে। এ কারণেই মারফত তার অসুস্থ বৃদ্ধা মাকে থাকার ঘরের পাশে বেড়াহীন পলিথিন দিয়ে তৈরি গোয়াল ঘরে রেখে আসেন। গভীর রাতে ৩/৪ টি শিয়াল ঘুমের মধ্যে অসুস্থ বৃদ্ধা মাকে হাঁটুর নিচে কামড়িয়ে আহত করে। অসুস্থ বৃদ্ধা মায়ের আহাজারিতে আশপাশের লোকজন এসে শিয়ালদের হাত থেকে রক্ষা করে। সুচতুর পুত্র মারফত বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চিকিৎসা ছাড়াই বাড়িতে মাকে রেখে দিয়েছেন।
রোববার সকালে পুটিজানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ময়েজ উদ্দিন তরফদার খবর পেয়ে ছুটে যান বৃদ্ধার কাছে। তিনি বৃদ্ধা মায়ের সমস্ত দায়ভার নেন। পরে তিন সন্তান বৃদ্ধা অসুস্থ মায়ের ভরনপোষণ ও চিকিৎসা না করলে তিনি আইনের আশ্রয় নেয়ার কথা বলেন।
অসহায় বৃদ্ধা মা সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাব দিতে না পারলেও এ বৃদ্ধ বয়সে তিনি যে বড় অসহায় তার চোখে মুখে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আশপাশের লোকজন যখন বলাবলি করছিল আপনার সন্তানদের অভিশাপ দেন। বিছানায় শুয়ে কাতর স্বরে বললেন না গো …।