ক্রাইমবার্তা রিপোট:থমকে গেছে সাতক্ষীরা পৌরসভার উন্নয়ন কাজ। দেনা, পরিকল্পনার অভাব, সম্পদের সুষম বন্টন আর প্রকল্পের অভাবে পৌরসভার দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি। ফলে পৌরসভার প্রায় ৯০ ভাগ রাস্তায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ড্রেনেজ নির্মাণ না হওয়ায় আসন্ন বর্ষা মৌসুমে আবারো দুর্ভোগে পড়ছে হচ্ছে পৌরবাসীকে। অন্যদিকে, জলাবদ্ধতা নিরসন, রাস্তাঘাট উন্নয়নসহ আধুনিক ও উন্নত পৌরসভার যে ঘোষণা দিয়ে জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনে এসেছিলো তার কোনটিই বাস্তবায়ন হয়নি বলে মনে করেন ভুক্তভোগীরা। তবে পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি জানান, দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে। জার্মানীর প্রকল্পের কাজ শুরু হলেই পাল্টে যাবে পৌরসভার চিত্র।
সূত্র জানায়, জেলা সদরে অবস্থিত সাতক্ষীরা পৌরসভার উত্তরে লাবসা ইউনিয়ন, দক্ষিণে ফিংড়ী ইউনিয়ন, পূর্বে ধূলিহর ব্রক্ষ্মরাজপুর ইউনিয়ন এবং পশ্চিমে আলিপুর ইউনিয়ন অবস্থিত। ১৮৫০ সালে পৌর আইন পাস হওয়ার পর ১৮৬৯ সনে ৩১.১০ বঃ কিঃ আয়তন বিশিষ্ট পৌরসভাটি খুলনা বিভাগের প্রথম পৌরসভা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে গ শ্রেণীভূক্ত পৌরসভা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হলেও ১৯৯৮ সনে প্রতিষ্ঠানটি প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত হয়। কাটিয়া, সাতক্ষীরা, পলাশপোল, রামদেবপুর, সুলতানপুর, দহাকুলা ও রসুলপুর এই ০৭টি মৌজা এবং ০৯টি ওয়ার্ডের ৪০ টি গ্রাম সমন্বয়ে সাতক্ষীরা পৌরসভা গঠিত। সাতক্ষীরা পৌর এলাকায় অবস্থানকারী তৎকালীন জমিদার প্রাণনাথ রায় চৌধুরীর প্রচেষ্টায় ১৮৬৯ সালে সাতক্ষীরা পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়।
সূত্র আরো জানায়, পৌরসভায় ৫৫ কিলোমিটার কাচা রাস্তা, ৭ কিলোমিটার ডব্লিইবিএম রাস্তা, সোলিং ৪০ ও কার্পেটিং ১২৮ কিলোমিটার রাস্তা আছে। কিন্তু রাস্তাগুলো চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে দীর্ঘ দিন থেকেই। দীর্ঘ দিন এমন অবস্থা হলেও পৌর কর্তৃপক্ষ কার্পেটিং করার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেননি বলে স্থানীয়রা জানান। অন্যদিকে গত ৪/৫ মাস আগে রাস্তাগুলো কার্পেটিং এর রাস্তাগুলো খুড়ে রোলার দিয়ে সমান করার চেষ্টা করা হয়েছিলো মাত্র। তাও এক বর্ষায় পূর্বের অবস্থায় ফিরে গেছে। উত্তর কাটিয়ার আব্দুল মালেক জানান, থানাঘাটা-নারিকেলতলা রাস্তা দিয়ে ভ্যান, সাইকেলে চলা যায় না। কার্পেটিং উঠে ইট বেরিয়ে গেছে। বর্ষার পানি হলেই রাস্তায় কিছু কিছু যায়গায় পানি জমে।
অন্যদিকে, পৌরসভার অভ্যন্তরে কাচা ড্রেন আছে ১৪০ কিমি, প্রাইমারী খাল ২২ কিমি, ব্রিক ডেন ৫৫ কিলোমিটার আছে। সেগুলো দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন মনে করে পৌরসভার ওয়েবসাইটে দেওয়া হলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
পলাশপোল এলাকায় শফিকুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার বর্তমান যা অবস্থা তা দেখে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা মনে হচ্ছে না। রাস্তায় বের হলে ধুলো। শহরের সকল রাস্তার কার্পেটিং উঠে গেছে। কোথায় রাস্তার উপর পিচ নেই। ইট উঠে মরণ ফাদে পরিণত হচ্ছে। ধুলার জন্য রাস্তায় বের হওয়া যায় না।
পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি জানান, পৌরসভার ফান্ডের সমস্যা আছে। জার্মানীর একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ শুরু হলে পৌরসভার চিত্র বদলে যাবে।