বাজেট সম্পর্কে ভালো মন্তব্য করেছে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না : মির্জা ফখরুল

ক্রাইমবার্তা রিপোট:ক্ষমতাসীন সরকারকে প্রকৃতিগতভাবে লুটেরা আখ্যা দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত আট বছরের শাসনামলে ক্ষমতাসীন সরকার লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে। এছাড়া দেশে বিএনপিকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের কথা ভাবলে তারা বোকার সর্গে বাস করছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আজ রোববার দুপুরে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব বলেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি এই সরকার বাজেট দিয়েছে। এরমাধ্যমে জনগণের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এমন কোনো লোক খুঁজে পাওয়া যাবেনা যারা বাজেট সম্পর্কে ভালো মন্তব্য করেছে। খোদ অর্থনীতিবিদ, এমনকি যারা আওয়ামী লীগের প্রতি দুর্বল তারা বলছে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে বাজেট হয়েছে তারমধ্যে সবচেয়ে খারাপ বাজেট। কেননা সবাই বলছে এই বাজেটে জনগণের ওপরে বোঝা চাপানো হয়েছে। অর্থাৎ পুরো অর্থনীতি ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলার চেষ্টা হয়েছে।

রাজধানীর ইঞ্জিনিায়র্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৬ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে এই সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল।

 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার একদিকে ব্যাংক লুট করে শেষ করে দিয়েছে। ছয়টা রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংককে লোকসানী প্রতিষ্ঠান করেছে। এখন জনগণের ট্যাক্সের টাকা থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা সেখানে ভর্তুকি দেবে। জনগণের পকেট থেকে। তারা করবে চুরি। করবে লুটপাট। বিদেশে বাড়ি তৈরি করবে। বিত্ত তৈরি করবে। আর সেটার খেসারত দেবে বাংলাদেশের মানুষ তাদের পকেটের টাকা দিয়ে। এই অবস্থায় নিয়ে গেছে।

তিনি কর্মসংস্থানের কথা প্রসঙ্গে বলেন, আজকে দেখুন আমাদের দেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত যুবক তরুণেরা বেকার। কিন্তু বাজেটে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যাপারে কোনো কথা নেই। তারা কর নেবে আর মেগা প্রজেক্ট করবে। যেখান থেকে তারা মেগা লুট করবে। এই হচ্ছে তাদের আসল উদ্দেশ্য। প্রকৃতিগতভাবে এরা লুটেরা। ১৯৭২-৭৫ সালেও আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল একইভাবে তারা লুট করেছে। এ জন্যই মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী বলেছিলেন, বাংলাদেশ বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের নাম রাখা হোক- ‘নিখিল বাংলাদেশ লুটপাট সমিতি’।

মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার আমাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ভোট দেয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। এমনকি সুস্থ্য থাকার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে দখলদারী আওয়ামী লীগ সরকার। আজকে সেজন্যে আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে একটি দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে বাধ্য করাতে হবে। যে নির্বাচন সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে।

সাবেক এই মন্ত্রী নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, এই সরকার বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে চায়। কারণ তারা জানে বিএনপি নির্বাচনে আসলে তারা জয়ী হতে পারবেনা। এ জন্য তারা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। প্রতিদিন এমন মামলা দিচ্ছে। অথচ তারা নির্বাচনের বক্তৃতা দিয়ে বেড়াচ্ছে। হেলিকপ্টারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর আমাদেরকে আদালতের প্রাঙ্গণে ঘুরতে হচ্ছে। নতুন করে মামলা দিয়ে জেলে নেয়া হচ্ছে। এই অবস্থার প্রেক্ষিতে তারা যদি মনে করে আমাদেরকে কারাগারে পাঠিয়ে নির্বাচন করবে তাহলে তারা আহম্মকের সর্গে বাস করছেন।

তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। আমারা উদারপন্থী রাজনৈতিক দল। আমরা নির্বাচন করেই রাষ্ট্রপরিচালনায় যেতে চাই। কিন্তু সেই নির্বাচন হতে হবে অবশ্যই সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য। সেই নির্বাচনে যাতে সবাই ভোট দিতে পারে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকতে হবে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি মার্কা আর কোনো নির্বাচন দেশে হবে। এবার মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। দেশনেত্রীর নেতৃত্বে সহায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আমরা আদায় করবো। মির্জা ফখরুল শহীদ জিয়ার আদর্শ অনুকরণে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভুইয়া জুয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবীব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ প্রমুখ।

 

Check Also

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে : অ্যাটর্নি জেনারেল

র্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।