সাতক্ষীরায় জামরুল গাছে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ # আত্নহত্যা নাকি পরিকল্পিত হত্য তা জানতে চায় জনগণ # চার দিনে পৃথক ঘটনায় উদ্বীগ্ন জেলা বাসি

সাতক্ষীরা সংবাদদাতাঃ সাতক্ষীরায় আবারও স্ত্রী হত্যার পর স্বামীর আতœহত্যা দাবী পুলিশের। মাত্র চার দিনের ব্যবধানে জেলার কলারোয়া ও কালিগঞ্জে পৃথক দুটি আতœহত্যার ঘটনা ঘটে। বিচার না পেয়ে নিজেরা আতœহত্যার পথ বেঁছে নিয়েছে না কি পরিকল্পিত ভাবে তাদেরকে কেউ হত্যা করে এমন প্রশ্ন সকলের। তবে এ ধরণের ঘটনা ঘটতে থাকায় উদ্বীগ্নে সাধারণ মানুষ।
সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ থেকে স্বামী ও স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নের জগন্নাথপুর গ্রামে নিজেদের বাড়ির পাশ থেকে এ দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন নুরুল আমিন মোড়ল (৪৮) ও তাঁর স্ত্রী জাহেদা খাতুন (৪০)।A-satkhira.
কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লস্কার জায়েদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে স্ত্রীকে হত্যার পর স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার রাতেই এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে গতকাল সকালে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়।
ওসি আরো জানান, প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, এই দম্পতির মধ্যে কলহ চলছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এর জের ধরে নুরুল আমিন তাঁর স্ত্রী জাহেদাকে হত্যা করে বাড়ির পাশে একটি জামরুল গাছে ঝুলিয়ে রাখেন। এর পর নিজেও একই গাছে রশিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।
নিহত জাহেদা খাতুনের পায়ে ও মাথায় আঘাতের চিহ্ণ এবং গলায় গামছা পেঁচানো ছিল বলে জানান ওসি। অন্যদিকে নুরুল আমিনের গলায় পেঁচানো ছিল রশি।
সকালে দুজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। নিহত দম্পতির দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে।
এর আগে গত শুক্রুবার রাতে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার একদিনের মাথায় কীটনাশক খেয়ে এই ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করে পুলিশ। রাতে স্ত্রীর কবরের পাশ থেকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার দেয়াড়া গ্রামে।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্ল কুমার নাথ জানান, দুই বছর আগে দেয়াড়া গ্রামের ইমান আলীর মেয়ে তাহমিনার (১৯) সঙ্গে বিয়ে হয় যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার রাজবাড়ি গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে মনিরুলের। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই যৌতুক নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ হতো। এমনকি তাহমিনাকে মারপিটও করতেন মনিরুল। এর জেরে সম্প্রতি তাহমিনা তাঁর বাবার বাড়িতে চলে আসেন। সবকিছু মিটমাট করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মনিরুলও তাঁর শ্বশুরবাড়ি দেয়াড়ায় চলে আসেন।
ওসি আরো জানান, বুধবার রাতে খাওয়া-দাওয়া করে তাঁরা দুজন ঘুমাতে যায়। রাতের কোনো এক সময় মনিরুল তাঁর স্ত্রী তাহমিনার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর পালিয়ে যান। ময়নাতদন্তের পর তাহমিনাকে বাবার বাড়িতে কবর দেওয়া হয়।
এ ঘটনার পর পলাতক স্বামী শুক্রবার রাতে স্ত্রীর কবরের পাশে গিয়ে কীটনাশক খান। গভীর রাতে তাঁর গোঙানি শুনতে পেয়ে লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে। খবর পেয়ে পুলিশ মনিরুলকে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে রাতেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে ওসি জানান।
‘মনিরুল তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করে যে অপরাধ করেছেন, তাঁর জন্য তিনি অনুতপ্ত ছিলেন। এ কারণে তিনি কীটনাশক খেয়েছেন বলে পুলিশ ও চিকিৎসকের কাছে স্বীকার করেছেন’, যোগ করেন ওসি। মনিরুল কে তার শ্বশুর বাড়ির লোক জনো হত্যা করেছে বলে মনিরুলের পরিবার জানান। মনিরুলকে ধরে নিয়ে তার গালে বিশ ধেলে দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারটি দাবী করেছে। তবে এসব ঘটনায় প্রকৃত ঘটনা উৎঘটনের দাবী সচেতন মহলের।

Check Also

বড়দিন উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে : মাসুদ করিম

আগামীকাল ২৫ ডিসেম্বর খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব শুভ বড়দিন উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ প্রয়োজনীয় সকল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।