এফবিআইয়ের সংগ্রহ করা গোয়েন্দা তথ্য থেকে জানা যায়, ভুয়া ওই রিপোর্টের সূত্র ধরেই কাতারের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবরোধের প্রক্রিয়া শুরু করে সৌদি আরব। এতে যুক্ত হয় উপসাগরীয় আরও বেশ কয়েকটি দেশ। একে কেন্দ্র করে কয়েক দশকের মধ্যে উপসাগরীয় অঞ্চলে সবচেয়ে কঠিন কূটনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয়।
কাতার সরকার বলছে, ২৩ মে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থার ওয়েবসাইটে ভুয়া সংবাদ জুড়ে দেয়া হয়। তাতে বলা হয়, কাতারের শাসকদের সঙ্গে ইরান ও ইসরাইলের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ওই রিপোর্টে আরও প্রশ্ন তোলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কি ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন?
কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানি এ বিষয়ে গণমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেন, ‘(রাশিয়ার) ওই হ্যাক ও ভুয়া খবর যুক্ত করা সম্পর্কে নিশ্চিত করেছে এফবিআই। ভুল তথ্যের ভিত্তিতে কাতারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা মনে করি, এ সংকটের পুরোটাই ভুল তথ্যের কারণে।’
তিনি বলেন, এ সংকট শুরু হয়েছে বানোয়াট রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে। হ্যাক করে আমাদের জাতীয় বার্তা সংস্থায় এমন খবর প্রকাশ করা হয়েছে।
এ বিষয়টির প্রমাণ পেয়েছে এফবিআই। যদি কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ অভিযোগ সত্যি হয় তাহলে এটা পরিষ্কার হবে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিকে খর্ব করার চেষ্টা করছে রাশিয়া। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তৎপরতা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিতে পারে। কারণ, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে বিজয়ী করতে নির্বাচনী ব্যবস্থায় রাশিয়া হস্তক্ষেপ করেছিল বলে অভিযোগ আছে। এ অভিযোগ ক্রেমলিন অবশ্য অস্বীকার করেছে।
সন্ত্রাসবাদে সমর্থন দেয়ার অভিযোগে সোমবার কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছেদের ঘোষণা দেয় সৌদি আরব, মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনসহ সাত দেশ। একই সঙ্গে তারা কাতারের সঙ্গে আকাশ, জল ও স্থল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
এ দেশগুলো অভিযোগ করছে, উপসাগরীয় ছোট্ট দেশ কাতার উগ্রপন্থী গ্রুপগুলোকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। আরও বলা হয়, সৌদি আরবের ঘোরবিরোধী ইরানের এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়তা দিচ্ছে কাতার।
কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে জোর দিয়ে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে কাতার। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় বিমানঘাঁটি কাতারে অবস্থিত। তা সত্ত্বেও কাতারকে একঘরে করে রাখার উদ্যোগে সমর্থন দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।