সৌদিতে পুলিশের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত

সৌদি আরবে পুলিশের গুলিতে ভৈরবের দুই প্রবাসী নিহত হয়েছেন। এসময় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন।2-dead_49326_1497189654
ঘটনার ৫ দিন পর রোববার সকালে তাদের পরিবারের সদস্যরা খবর পান।

নিহতরা হলেন ভৈরব পৌর এলাকার চন্ডিবের গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে শাহ পরান (৩২) ও একই গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে শামীম আহমেদ (৩৯)। সম্পর্কে তারা দুজন একে অপরের মামাতো-ফুফাতো ভাই।

নিহতদের পারিবারিক সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৯টায় এ ঘটনা ঘটে। তাদের লাশ সৌদি আরবের দাম্মামের আবুমি হাসপাতালে রাখা হয়।

এছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন ভৈরব উপজেলার ছনছাড়া গ্রামের মতিউর রহমান ভূইয়ার ছেলে মাহাবুব আলম। তাকে চিকিৎসার জন্য দাম্মামের একই হাসপাতাল আবুমিতে ভর্তি করা হয়েছে বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।

ঘটনার সময় তারা একসঙ্গে সৌদি আরবের দাম্মাম থেকে আলকাতিফ যাচ্ছিলেন বলে তাদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, শাহ পরান ১৪ বছর আগে এবং শামীম চার মাস আগে সৌদি আরবে যায়।

এছাড়া আহত মাহাবুব আলম প্রায় ১৫ বছর আগে সৌদি আরবে গিয়েছিল বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানায়।

তাদের মধ্যে শামীম আহমেদ ভৈরবে ব্রয়লার মুরগীর ব্যবসা করতেন। তার ৩ মেয়ে ও একটি ছেলে রয়েছে। দেশে ব্যবসা মন্দাভাব থাকায় তিনি মাহাবুবের মাধ্যমে সৌদিতে চাকরি করতে যান গত ৪ মাস আগে।

এদিকে শাহ পরানরা ছয় ভাই ও দুই বোন। এর মধ্যে তার তিন ভাই সৌদি প্রবাসী। তারা তিনজন একসঙ্গে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে চাকরি করতেন।

ঘটনার দিন শামীমের আকামা (পরিচয়পত্র) করতে তাদের কোম্পানির মালিকের গাড়ি নিয়ে তারা দাম্মাম থেকে আলকাতিফ শহরে যাচ্ছিলেন। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন মাহাবুব আলম।  তারা ওইদিন ভোরে দাম্মাম থেকে ছেড়ে সকাল সাড়ে ৯টায় আলকাতিফ শহরের কাছে পৌঁছে দেখতে পান রাস্তাঘাট ফাঁকা এবং কোনো লোক সমাগম নেই। তখন গাড়িটি থামানোর সঙ্গে সঙ্গে সৌদি পুলিশ তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে। এতে শাহ পরান ও শামীম ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আর গাড়িচালক মাহাবুব গুরুতর আহত হন।

ঘটনার পর জানা গেছে, ওই শহরে শিয়া-সুন্নিদের সংঘর্ষে কারফিউ জারি  ছিল। তারা গাড়ি নিয়ে কারফিউ এলাকায় ঢুকে পরলে সৌদি পুলিশ তাদেরকে গুলি করে।

তবে কেউ কেউ বলছে, সৌদি পুলিশ তাদের গাড়িকে থামানোর জন্য সিগনাল দেয়। কিন্তু সিগনাল অমান্য করে গাড়িটি চলে যেতে চাইলে পুলিশ গাড়িটি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে এ ঘটনাটি ঘটে।

দাম্মাম শহরে থাকা তাদের আত্মীয়-স্বজন ৪ দিন খোঁজ করার পর গত শনিবার রাতে ঘটনার খবর পান তারা। পরে রোববার সকালে দেশের বাড়িতে খবর দেয় তারা।

তাদের লাশ দেশে আনার ব্যবস্থা করতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ করেছেন নিহতদের পরিবার

Check Also

স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় রিকশা চালালেন পাকিস্তানের হাইকমিশনার

ঢাকায় রিকশা চালাচ্ছেন পাকিস্তানি হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ! ভাবতে অবাক লাগলেও সম্প্রতি তেমনি এক ঘটনা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।