ক্রাইমবার্তা রিপোট:আমার দেশ পাবলিকেশন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিরোজা মাহমুদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযোগ ও মামলাকে সম্পূর্ণ বেআইনি, ভিত্তিহীন এবং হয়রানিমূলক বলে দাবি করেছেন তার স্বামী ও আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র আমার স্ত্রী হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। এভাবে মামলা দিয়ে হয়রানি করে আমার কণ্ঠরোধ করা যাবে না। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমার যে লড়াই চলছে তা অব্যাহত থাকবে। এ সময় সততা নিয়ে সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ সব মন্ত্রীর প্রতি চ্যালেঞ্চ ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, আমি কখনোই অসৎ উপায়ে কোনো উপার্জন করিনি। মন্ত্রীরা চাইলে যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে বিতর্ক করতে রাজি আছি।
আজ সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সমাজচিন্তক ফরহাদ মজহার, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, রুহুল আমিন গাজী, আব্দুল হাই শিকদার, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, সৈয়দ আবদাল আহমদ, ইলিয়াস খান, কাদের গণি চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার নেতা রিয়াজুল ইসলাম রিজু প্রমূখ।
মাহমুদুর রহমান বলেন, দুদকের দাবি ফিরোজা মাহমুদ ২০০৩ সালে রেজিস্ট্রিকৃত তার গুলশানের এপার্টমেন্টের মূল্য ৬০ লাখ টাকা কম দেখিয়েছেন। এপার্টমেন্টটি যে জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে তার মালিক ছিলেন মরহুম ফজলুর রহমান। এপার্টমেন্ট নির্মাণ করেছে র্যাংগস প্রপার্টিজ লিমিটেড। এপার্টমেন্টের মূল্য নির্ধারণ করেছে রাজউক অর্থাৎ সরকার। রাজউক সরকারি পত্রের মাধ্যমে র্যাংগসের এমডি রোমো রউফ চৌধুরীকে এপার্টমেন্টের মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে। এ পত্রের প্রেরক এবং প্রাপক যথাক্রমে রাজউক এবং রোমো রউফ চৌধুরী। এ মূল্য নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় ফিরোজা মাহমুদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তা সত্ত্বেও কেবল তারই বিরুদ্ধে দুদক উদ্দেশ্যমূলকভাবে মামলা দিয়েছে। এ ধরনের হয়রানীমূলক মামলা রাজউকের লিজভূক্ত প্রতিটি জমি অথবা এপার্টমেন্টের মালিকের বিরুদ্ধে করা হলে সারাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরো জানান, র্যাংগসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রোমো রউফ চৌধুরী গুলশান অঞ্চলের সাব রেজিস্ট্রারের কাছে হলফনামা দিয়ে নিশ্চিত করেছেন, এপার্টমেন্টের মূল্য কম দেখানো হয়নি। এ হলফনামা প্রদানেও ফিরোজা মাহমুদের কোনো রকম ভূমিকা নেই। তিনি কেবল হলফনামার ভিত্তিতে এবং রাজউক নির্ধারিত মূল্যে সম্পত্তি কিনেছেন। একজন ক্রেতা যদি কোনো দোকান থেকে সরকারি সংস্থা কর্তৃক নির্ধারিত মুল্যে কোনো পণ্য কেনেন, সেক্ষেত্রে কেবল ক্রেতার বিরেুদ্ধে মামলা করার আইনগত ভিত্তি নেই।
সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুর রহমান বলেন, ফিরোজা মাহমুদ একজন সিআইপি। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বছরে প্রায় এক কোটি টাকা আয়কর দিয়ে আসছেন। আয়কর বিভাগের ২০১৬-১৭ বর্ষের প্রত্যয়নপত্রে উল্লেখ রয়েছে, ফিরোজা মাহমুদ ওই বছরে আয়কর প্রদান যথাযথভাবে সম্পন্ন করেছেন। আরেকটি প্রত্যয়নপত্রে আয়কর বিভাগ উল্লেখ করেছে, ২০১৩-১৪ আয়কর বছরের সমুদয় কর ফিরোজা মাহমুদ পরিশোধতো করেছেনই, সর্বোপরি ওই বছর পর্যন্ত তার কাছে সরকারের আর কোনো পাওনা নেই। সেক্ষেত্রে ২০০৩ সালের রেজিস্ট্রিকৃত এপার্টমেন্টের মূল্য বিষয়ে দায়ের করা মামলাটি শুধু হয়রানির জন্যই করা হয়েছে।
মাহমুদুর রহমান বলেন, যে ব্যক্তি বছরে এক কোটি টাকা আয়কর দেন, তিনি সম্পদের মূল্য ৬০ লাখ টাকা কম দেখিয়ে কিভাবে লাভবান হতে পারেন সে বিষয়টি দেশবাসী বিবেচনা করবেন। এ ধরণের উদ্ভট অভিযোগ বিশ্বে কেবল বাংলাদেশেই করা সম্ভব। এ সরকার এর আগে আমার বিরুদ্ধে ৮১টি হয়রানিমূলক মামলা দিয়েছে। আমাকে পাঁচ বছর জেলে রেখেছে। ৩৮দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন চালিয়েছে। আমার ৭৯ বছর বয়স্ক বৃদ্ধা অধ্যাপিকা মায়ের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। এবার আমার স্ত্রীকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। আমি সুস্পষ্টভাবে জানাতে চাই, কোনো কিছুতেই আমার কণ্ঠরোধ করা যাবে না। সরকারের কাছে আবারো চ্যালেঞ্জ, সততায় আমার সাথে পারবেন না।