ক্রাইমবার্তা স্পোর্টস ডেস্ক:বৃহস্পতিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দ্বিতীয় সেমফিাইনালে ভারতের মোকাবেলা করবে বাংলাদেশ। বিশ্বের যেকোনো দলের বিপক্ষে আপসেট ঘটানোর ক্ষমতা এবং ভারতকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার ক্ষতা টাইগারদের রয়েছে।
আইসিসি র্যাংকিংয়ের শীর্ষ আটটি দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। যদিও বৃষ্টির কারণে কিছু ম্যাচে বিঘ্ন ঘটেছে, তার পরও কোনো ম্যাচে কম উত্তেজনা ছিল না।
সেমিফাইনালে আগামীকাল বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার ম্যাচটি নিয়ে নিয়ে চলছে দারুন উত্তেজনা। যদিও ফেবারিট হিসেবেই মাঠে নামবে ভারত। তথাপি বিরাট কোহলির দলকে হারিয়ে রোববার অনুষ্ঠিতব্য ফাইনালে যাওযার মতো বিস্ময় ঘটাতে পারে বাংলাদেশ।
গুরুত্বপূর্ণ এ ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের কারণ হতে পারে পাঁচটি :
# তামিম ইকবালের ফর্ম :
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মত বিশ্ব আসরের কোন টুর্নামেন্টে অভিজ্ঞ খেলোয়াড় থাকাটা সব সময়ই যে কোন দলের জন্য একটি বাড়তি সুবিধা। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দলের বেলায় একটি নাম হতে পারে তামিম ইকবাল। যিনি টপ অর্ডারে দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।
চলমান টুর্নামেন্টে একমাত্র নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শূন্য রানে আউট হওযা ছাড়া বাম হাতি এ ওপেনার অন্য সব ম্যাচেই বড় স্কোর গড়েছেন। ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে দলের দায়িত্ব নিজ কাঁধে নেয়ার সক্ষমতার প্রমান বহুবার তিনি দিয়েছেন।
টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইংর্যান্ডের বিপক্ষে তার সেঞ্চুরির সুবাদে তিনশ রানের বেশি করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার করা ৯৫ রানের সুবাদে টাইগাররা লড়াই করার পুঁজি পেয়েছে। ভারতকে হারাতে চট্টগ্রামের এ ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে আরেকটা বড় ইনিংস আশা করছে বাংলাদেশ।
# ব্যাটসম্যানদের চাপ নেয়ার ক্ষমতা :
দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে অনেক দলই চাপের মধ্যেও ভাল খেলে দলকে জিতিয়ে আনতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা বড় দলগুলোর বিপক্ষে বহুবার তার প্রমাণ দিয়েছেন। টাইগারদের মিডল অর্ডারে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের কাছ থেকে অনেক বড় কিছু পেয়েছে দল। গ্রুপ পর্বে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে তারা কেবল খারাপ অবস্থা থেকে দলকে টেনে তোলেননি, একই সাথে দলের জয় নিশ্চিত করেছেন।
টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত ভারতের বোলিং আক্রমণ বিভাগ বেশ ভাল করেছে এবং বাংলাদেশ দলকেও তারা চাপে রাখবে। তবে ভারতীয় বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে ম্যাচ জিতিয়ে আনার মত খেলোয়াড় বাংলাদেশ দলে রয়েছে।
# বড় টুর্নামেন্টে জায়ান্ট কিলার
বাংলাদেশ হয়তোবা বড় কোন টুর্নামেন্টের শিরোপা জিততে এখনো পারেনি। কিন্তু বিভিন্ন টুর্নামেন্টে যথাসময়ে ঝলসে উঠে ঠিকই নকআউট পর্বে উঠে এসেছে। ২০০৭ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে ভারতকে পরাজিত করেছে। যে কারণে শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্ট থেকেই ছিটকে পড়তে হয়েছিল ভারতের।
২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপে এই বাংলাদেশর কাছে হেরেই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ জয় এসেছিল ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ইংলিশদের হারিয়ে কোয়ার্টারফাইনালে উঠেছিল টাইগাররা। কাগজে এবং ফর্মের দিক থেকে যদিও ভারত শক্তিশালী। তথাপি ‘অবশ্যই জয়’ ম্যাচে চাপের কারণে তারা অনেকটা নার্ভাস থাকতে পারে এবং বড় টুর্নামেন্টে সেটা কাজে লাগানোর সবধরনের গুণাবলী বাংলাদেশ দলের আছে।
# ডার্ক হর্স : প্রত্যাশা কম থাকবে :
টুর্নামেন্টের শিরোপা জয়ে এককভাবে ফেবারিট ভারত এবং লীগ পর্বের ম্যাচগুলোতে তারা সে প্রমাণও দিয়েছে। বাংলাদেশকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠার চাপটা বিরাট কোহলির দলের ওপরই বেশি থাকবে।
পক্ষান্তরে বাংলাদেশ প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনাল খেলবে এবং তাদের ওপর কোন চাপ থাকবে না, তারা আন্ডারডগ হিসেবে মাঠে নামবে। সেহেতু এই আন্ডারডগ তকমাটাই তাদের জন্য একটি সুবিধা হিসেবে কাজ করতে পারে। কেননা, কোন চাপ না থাকলে যেকোন দলই নির্ভয়ে খেলতে পারে।
ক্রিকেট বিশ্ব ভারতের জয়ই প্রত্যাশা করবে। তবে মাশরাফির দল ফাইনাল খেলার লক্ষ্যে ঐতিহাসিক জয়ের জন্য সব কিছুই করবে।
#পার্টটাইম বোলার :
কখনো কখনো প্রধান বোলারদের চেয়ে পার্টটাইম বোলাররা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ব্যাটসম্যানরা পার্টটাইমারদের গ্রাহ্য কম করায় তাদেরকেই উইকেট বিলিয়ে দেয়। টুর্নামেন্টে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বাংলাদেশ খুঁজে পেয়েছে ডান হাতি অফ ব্রেক বোলার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কিউইদের মেরুদ- ভেঙ্গে দিয়েছেন এ পার্টটাইমার। মাত্র তিন ওভারে নিউজিল্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ তিন উইকেট শিকার করেছেন সৈকত।