ক্রাইমবার্তা রিপোট:সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো দিন। এদিনে তৎকালীন একদলীয় বাকশাল সরকার তাদের অনুগত চারটি সংবাদপত্র রেখে বাকীগুলো বন্ধ করে দিয়ে গোটা জাতিকে নির্বাক করে দিয়েছিলো। যার ফলে বিভিন্ন সংবাদপত্রে কর্মরত অসংখ্য সংবাদকর্মী বেকার হয়ে পড়েছিলো। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল তাদের রুজি-রোজগার ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ।
তিনি বলেন, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল তাগিদ ছিল বাংলাদেশের ভৌগলিক স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র। গণতন্ত্রে মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়। মানুষের স্বাধীনতার মূল শর্ত হচ্ছে বাক, চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার মধ্যে যার বহি:প্রকাশ ঘটে। কিন্তু স্বাধীনতাত্তোর ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল-স্পিরিটের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলাকে আটকিয়ে একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা কায়েম করে।
বেগম জিয়া বলেন, পরবর্তীকালে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এদেশের কাঙ্খিত বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরায় প্রবর্তন করেন। বাকশাল সরকারের সব ধরনের অগণতান্ত্রিক কালাকানুন বাতিল করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুন:প্রতিষ্ঠিত করেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রকৃত গণতন্ত্রের সারবত্তা, গণতন্ত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। পরিতাপের বিষয় বর্তমান আওয়ামী সরকার তাদের পুরনো পথেই হেঁটে যাচ্ছে এবং সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের ওপর অব্যাহত জুলুম চালাচ্ছে এবং খবরদারীর খড়গ ঝুলিয়ে রেখে তা নিয়ন্ত্রণের সর্বাত্মক অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সব গণমাধ্যমের কর্মীদের শঙ্কা ও ভয়ের মধ্যে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। ১৯৭৫ এর এই দিনের বিভীষিকা এখন ভিন্ন মাত্রায় দেশে বিরাজমান রয়েছে। সেজন্য অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। আমি আবারো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করার যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে সাংবাদিক ভাই-বোনদের ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানাচ্ছি।’
ভিন্ন এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দেশের সংবাদপত্রের ইতিহাসে ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন এক কালিমালিপ্ত দিন। এদিনে তৎকালীন একদলীয় বাকশাল সরকার তাদের অনুগত চারটি সংবাদপত্র রেখে অন্য সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে বিভিন্ন সংবাদপত্রে কর্মরত অসংখ্য সংবাদকর্মীকে বেকার করে হতাশার অতল গহ্বরে ঠেলে দিয়েছিল। পরবর্তীকালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়ে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। বাতিল করেন বাকশালী আমলের সব কালাকানুন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি গণতন্ত্র রক্ষার সংগ্রামে বারবার অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। বারংবার অবৈধ স্বৈরাচারী গোষ্ঠীর কবল থেকে গণতন্ত্রকে মুক্ত করেছে বিএনপি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় বর্তমান আওয়ামী সরকার পুরনো বাকশাল ভিন্ন কৌশলে কায়েম করে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের ওপর দল ও দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে।’