।
গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বিএম কুদরত-ই-খুদা জানান, গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট রাহেনুল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বিএম কুদরত-ই-খুদা, মোরশেদ খান ও রাসেল মিয়া আনসার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে জেলার আবাসিক হোটেলগুলোতে অভিযান পরিচালনা করেন। শুক্রবার সকালে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার রাজমনি ইন্টারন্যাশনাল নামের এক আবাসিক হোটেলে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানকালে ওই হোটেল থেকে ১৯জন যৌণকর্মী ও খদ্দের এবং হোটেল কর্মচারী-দালাল ২০জনসহ মোট ৩৯জনকে আটক করা হয়। এসময় অসামাজিক ও অশ্লীল কর্মকান্ড পরিচালনা করে গণউপদ্রব সৃষ্টি করার অভিযোগে আটককৃতদের প্রত্যেককে একমাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় এবং হোটেলটি তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়। অভিযানের খবর পেয়ে হোটেলের মালিক বাবুল হোসেন ওরফে টুন্ডা বাবুল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এদিকে প্রায় একই সময়ে চান্দনা চৌরাস্তার ভোগড়া এলাকার দক্ষিণ বাংলা আবাসিক হোটেলে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানকালে এ হোটেল থেকে ২১জন যৌণকর্মী ও খদ্দের এবং হোটেল কর্মচারী-দালাল ৭জনসহ মোট ২৮জনকে আটক করা হয়। এসময় অসামাজিক ও অশ্লীল কর্মকান্ড পরিচালনা করে গণউপদ্রব সৃষ্টি করার অভিযোগে আটককৃতদের প্রত্যেককে ১৫দিন করে বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় এবং হোটেলটিতে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়। পরে তালাবদ্ধ হোটেল দু’টি জয়দেবপুর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির জানান, সমাজে অশ্লীলতা ও অসামাজিক কর্মকান্ড কোন অবস্থাতেই বরদাশত করা হবে না। অসামাজিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে গাজীপুর জেলা প্রশাসন নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করবে। শর্তভঙ্গকারী আবাসিক হোটেলসমূহের লাইসেন্স নবায়ন করা হবে না।
উল্লেখ্য, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূনকে অভিযান না চালানোর জন্য বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনে হুমকি দেয় চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার রাজমনি ইন্টারন্যাশনাল আবাসিক হোটেলের মালিক। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেন।
জিডি’র সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার রাজমনি ইন্টারন্যাশনাল নামের এক আবাসিক হোটেলের মালিক পরিচয় দিয়ে এক ব্যাক্তি বৃহস্পতিবার দুপুরে গাজীপুর জেলা প্রশাসকের দাপ্তরিক মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়। এসময় ওই ব্যাক্তি তার হোটেলে অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগে কোন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট দিয়ে অভিযান পরিচালনা না করার জন্য বলে। অভিযান পরিচালনা করা হলে জেলা প্রশাসককে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় ওই ব্যাক্তি। এঘটনায় গাজীপুর জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় সাধারণ ডায়েরী (নং-১০৫১, তাং-১৫/০৬/১৭ইং) করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, গাজীপুরের অধিকাংশ আবাসিক হোটেলগুলোতে বিভিন্ন প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে পতিতাবৃতিসহ নানা অসামাজিক ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে আসছে হোটেল ব্যবসায়ীরা। এব্যাপারে এলাকাবাসিরা একাধিকবার প্রতিবাদ করলেও ওইসব কার্যকলাপ বন্ধ হয়নি। শুক্রবারের অভিযানে স্থানীয়দের মাঝে কিছুটা স্বস্তি এসেছে।
https://www.google.com/url?s