জানা গেছে, ‘শুভ্রা মুখার্জি ট্রাস্টি বোর্ড’র উদ্যোগে এ হাসপাতাল নির্মাণের কথা থাকলেও ‘শুভ্রা মুখার্জি ফাউন্ডেশন’ এবং জেলা প্রশাসনকে অনেকটা অন্ধকারে রেখেই নির্মাণ কাজটি করা হচ্ছে। এমনকি জমির দলিল করা হচ্ছে বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান মোর্শেদ আলমের নামে। তাই এখানে আদৌ কোনো হাসপাতাল নির্মাণ হবে কিনা এনিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, বর্তমানে হাসপাতালের জন্য চার একর জমি কেনা হলেও দখল করে রাখা হয়েছে কমপক্ষে ৮ একর। সরকারি দলের নাম ভাঙিয়ে একটি সন্ত্রাসী চক্র এ কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
জানা গেছে, এ বছরের ৭ ফেব্র“য়ারি ঢাকা থেকে শুভ্রা মুখার্জি ট্রাস্টি বোর্ডের একটি টিম নড়াইল শহর থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে মুলিয়া ইউনিয়নের বাঁশভিটা এলাকায় নড়াইল-যশোর আঞ্চলিক মহাসড়কের সঙ্গে লাগোয়া একটি স্থানে শুভ্রা মুখার্জি মেমোরিয়াল হাসপাতালের স্থান পরিদর্শন করতে আসে। জানানো হয়, এখানে ২০ বিঘা জমির ওপর ৫০ শয্যার একটি আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওই ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য বেঙ্গল গ্রুপ ভাইস-চেয়ারম্যান মো. জসিমউদ্দিন, শারমিন গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, ল্যাবিব গ্রুপের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আলমগীর (সিআইপি) ও সাবেক সচিব ও মুক্তিযোদ্ধা মো. মোসা প্রমুখ। এর কয়েকদিন পর থেকেই এখানে ডিজিটাল সাইনবোর্ড দিয়ে শুরু হয় হাসপাতাল নির্মাণের নামে জমি ক্রয়, মাটি ও বালু ভরাটের কাজ।
জানা গেছে, বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান মোর্শেদ আলমের নামে গত ফেব্র“য়ারিতে ২১টি দলিলের মাধ্যমে ৪ একর ধানি জমির দলিল করা হয়েছে। নড়াইল সদরের সাব-রেজিস্ট্রার সুব্রত কুমার সিংহ এসব দলিল সম্পাদন করেন। এসব কাজে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করছে কথিত চিত্রা কনস্ট্রাকশনের পরিচালক ও জমি ক্রয়-বিক্রয়ের এজেন্ট খন্দকার এজাজুল হাসান বাবু।
এনিয়ে নড়াইল পৌরসভার দক্ষিণ নড়াইল এলাকার এবিএম কামরুল আহসান নামে এক কৃষক জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, বেঙ্গল গ্রুপ নামে একটি প্রতিষ্ঠান মুলিয়া ইউনিয়নের ৬৬ নং বাঁশভিটা মৌজায় নির্মাণাধীন হাসপাতালের সঙ্গে লাগোয়া হাল ৭৯, ৮০ ও ৮১ এই তিনটি দাগে তার নিজ নামের ৮২ শতক ধানি জমিতে বালু ভরাট করছে।
শুভ্রা মুখার্জি ফাউন্ডেশনের পরিচালক ও শুভ্রার আত্মীয় অয়ন রঞ্জন দাস গণমাধ্যমকে বলেন, শুনেছি নড়াইলের মেয়ে প্রয়াত শুভ্রা মুখার্জির নামে হাসপাতাল হবে। কিন্তু তা করতে গেলে অবশ্যই শুভ্রা মুখার্জি ফাউন্ডেশনকে অবহিত করা উচিত। অথচ কারা এ হাসপাতাল নির্মাণ করছে তা আমরা কিছুই জানি না।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কাজী মাহাবুবুর রশীদ জমি দখলের লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।