ক্রাইমবার্তা রিপোট: রাঙামাটিতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বলেছেন, আমি জানতে চাই যে মহাসচিবের ওপর যে হামলাটা হল তার পর কতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবিলম্বে তাদেরকে গ্রেফতার করতে হবে এবং শাস্তি দিতে হবে। আমাদের লোকজন কিছু না করলেও মিথ্যা মামলা দিয়ে ধরে নিয়ে গিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। যারা এই ঘটনায় জড়িত তাদের ধরতে হবে, জেলে পুরতে হবে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
রোববার গুলশান-১ এ ইমানুয়েলস কনভেনশন সেন্টারে এক ইফতার মাহফিলে তিনি এ কথা বলেন। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গের সম্মানে ইফতার মাহফিলটির আয়োজন করে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর)।
খালেদা জিয়া বলেন, আজকে চট্টগ্রামে যে ঘটনাটি ঘটল তা থেকে প্রমাণ হয় দেশে যত সন্ত্রাসী ঘটনা, বিশৃঙ্খলা ঘটছে তার সবই করছে আওয়ামী লীগ। আমাদের লোকেরা ত্রাণ দিতে গেছে সেখানেও হামলা করা হচ্ছে। এই যদি হয় দেশের অবস্থা। যে বিএনপির লোকজন কোথাও গেলে আক্রমণ করতে হবে। তাহলে বুঝতেই পারছেন এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে সাধারণ মানুষের কি হবে?
মহাসচিবের ওপর হামলার ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হলো যে, দেশে অবশ্যই নির্বাচন হতে হবে। আমরা নির্বাচন চাই। বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করবে। এই ভয়ে আওয়ামী লীগ ভিত হয়ে গেছে। বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করলে আওয়ামী লীগের কোন ভবিষ্যৎ নেই। সে জন্য আওয়ামী লীগ জেনে শুনেই বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোট যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সে জন্য তারা এ ধরনের হামলা করছে। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের দলের নেতাকর্মীদের ইফতার মাহফিল পর্যন্ত করতে দেয়নি।
চেয়ারপারসন বলেন, আমি দেশবাশি এবং আন্তর্জাতিকভাবে বলতে চাই, এই আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় রেখে নির্বাচন হলে সেই নির্বাচনে কেউ অংশ গ্রহণ করবে না। সেই নির্বাচন দেশে হতে দেয়া হবে না। ঈদের পরেই সহায়ক সরকারের রুপ রেখা দেয়া হবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটা নির্বাচন হতে হবে। আওয়ামী লীগের অধীনে, হাসিনার অধীনে এদেশে কোন নির্বাচন হবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে তার গুন্ডা বাহিনী থাকবে। তার চেলাচামুন্ডা থাকবে। তাবেদার ইলেকশন কমিশন তাবেদারি করে যে কোন উপায়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে চাইবে। সেই জন্য আওয়ামী লীগকে ক্ষমতার বাইরে রেখে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের মাধ্যমে নির্বাচন হতে হবে। তারা বুঝুক যে আওয়ামী লীগের সমর্থক কতটুকু। পায়ের নিচে কতটুকু মাটি আছে সেটা পরিষ্কার হতে হবে। আওয়ামী লীগকে বুঝতে হবে তারা যা করছে সবই করছে গায়ের জোরে।
চালের দাম নিয়ে তিনি বলেন, এই সন্ত্রাসীদের হাতে দেশে মানুষ জিম্মি হয়ে গেছে। তথাকথিত আওয়ামী লীগ সরকার গ্যাস, খাজনা এবং ভ্যাট বসিয়ে মানুষকে শেষ করে দিয়েছে। তার উপর চালের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। সর্বকালের সর্বাধিক চালের দাম বাংলাদেশে এখন। সব কিছুই বাংলাদেশে এখন সর্বাধিক।
আওয়ামী লীগ থেকে দেশের মানুষকে সাবধান হতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, দেশের মানুষকে বলবো এই আওয়ামী লীগ থেকে সাবধান হন। দেশকে, নিজেকে, নিজের পরিবারকে এদের হাত থেকে বাঁচান। প্রয়োজনে রাজপথে অবস্থান নিতে হবে নিজেদের।
সংগঠনের চেয়ারম্যান ড. টি আই এম ফজলে রাব্বি চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আ্যডভোকেট আহমেদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, এনডিপি চেয়ারম্যান গোলাম মোর্তজা, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি অধ্যাপিকা রেহানা, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, সংগঠনের মহাসচিব মোস্তফা জামান হায়দার, ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।