স্কুলের পাঠ্য তালিকা থেকে বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের বহুল বিতর্কিত তত্ত্ব ‘বিবর্তনবাদ’ বাদ দিতে যাচ্ছে তুরস্ক।
এছাড়া ‘ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা’ বিষয়কে বাধ্যতামূলক তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ঐচ্ছিক করা হচ্ছে।
তুর্কি শিক্ষাবিদদের দাবি, ডারউইনের তত্ত্ব টিনএজ শিক্ষার্থীদের বুঝে ওঠা অনেক কঠিন। তাই এ তত্ত্ব পড়া এবং ধর্মনিরপেক্ষ বৈজ্ঞানিক আলোচনা করার জন্য তাদের কলেজে ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করা দরকার।
তুর্কি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের প্রধান আলপাসলান দুরমুস বলেছেন, ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্কুলের পাঠ্যক্রমে ডারউইনের বিবর্তনবাদের তত্ত্ব থাকবে না।
তিনি বলেন, বয়সের কারণে শিক্ষার্থীরা যেসব বিতর্কিত বিষয়ের বৈজ্ঞানিক প্রেক্ষাপট বুঝতে পারে না সেসব আমরা পাঠ্য তালিকা থেকে বাদ দিয়েছি। যেমন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তাদের জীববিদ্যা বিষয়ে ‘প্রাণের উৎপত্তি ও বিবর্তন’ অধ্যায় বুঝতে সক্ষম নয়। এ অধ্যায় পড়ার জন্য তাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যান্ত অপেক্ষা করা দরকার।
দুরমুস জানান, প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত স্কুলের পাঠ্য তালিকা তুরস্কের স্থানীয় ও জাতীয় মূল্যবোধের আলোকে তৈরি করা হয়েছে। সর্বমোট ৫১টি কোর্স পরিবর্তন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
শিক্ষাবোর্ড প্রধান উল্লেখ করেন, আগে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা বিষয় পড়ানো বাধ্যতামূলক থাকলেও এখন প্রথম, পঞ্চম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এই বিষয় ঐচ্ছিক হিসেবে পড়বেন।
গোড়া খ্রিস্টান পরিবারের সন্তান বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের বহুল আলোচিত তত্ত্ব হলো ‘বিবর্তনবাদ’। এতে দাবি করা হয়েছে, পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রজাতির উৎপত্তি এবং প্রাণের বিকাশ ও বিস্তৃতি প্রাকৃতিক নিয়মের বাইরে নয়, সব জীবই এই প্রকৃতির অংশ। আর হাজার হাজার প্রজাতির প্রাণি আদি সরল প্রাণ থেকে বিবর্তিত হয়ে তৈরি হয়েছে। এমনকি মানুষও বানর থেকে বিবর্তিত।
তবে ডারউইনের এ তত্ত্ব নিজেদের ধর্মবিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় শুরু থেকেই মুসলিম ও খ্রিস্টান ধমর্তাত্ত্বিকরা প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। দুই ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ কুরআন ও ইঞ্জিলে বলা হয়েছে মহান আল্লাহ ছয় দিনে বিশ্ব ও প্রাণীজগতকে সৃষ্টি করেছেন।