‘প্রধানমন্ত্রীর পদে থেকে ভোট চাওয়া আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’

ক্রাইমবার্তা রিপোট:বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রী বার বার  নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে যাচ্ছেন। শুক্রবারও প্রধানমন্ত্রী ভোট চেয়েছেন।

এভাবে প্রধানমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ ব্যবহার করে তার (শেখ হাসিনা) ভোট চাওয়া নির্বাচনী আচরণবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। শনিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ঈদে ঘরমুখী মানুষের যাত্রাপথে ভোগান্তির জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের পদত্যাগ করা উচিৎ।

রুহুল কবির রিজভী বলেন,  মন্ত্রী চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। তারা নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করবেন না। এজন্য ডাহা মিথ্যা বলে যাবেন। আমরা মনে করি ঈদে জনদুর্ভোগের জন্য দায়ী প্রধানত সেতুমন্ত্রী। এজন্য তার পদত্যাগ করা উচিৎ।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে জনদুর্ভোগের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ঈদের আগে ঘরমুখী মানুষ যে চরম দুর্ভোগে পড়েছে তা বর্ণনাতীত।

সারা দেশে সড়ক-মহাসড়কে চরম অব্যবস্থাপনা, দ্বিগুন মূল্যে  ট্রেনের টিকিট  কেটে ট্রেনের ছাদে চেপে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করতে হচ্ছে মানুষকে।

রাস্তাঘাটে বেপরোয়া চাঁদাবাজীতে নৈরাজ্য ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ প্রশাসনের কোনো অস্তিত্ব আছে বলে মনে হয় না। শুক্রবার রাত ৮টায় যেসব গাড়ি রওনা হয়েছে,  সেগুলো এখনো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি। সব মহাসড়কে একই অবস্থা।

যদিও সেতুমন্ত্রী স্বস্তি প্রকাশ করে বলেছেন, ভালোই লাগছে,  কোথাও  কোনো যানজট  নেই,  দৌড়াদৌড়ি করে মানুষের ভোগান্তি লাঘব করতে পেরেছি। কী আত্ম-আনন্দ তিনি  ভোগ করছেন একটা ডাহা মিথ্যাকে আড়াল করবার জন্য!

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, আমরা বলতে চাই, এসব কথা বলে কি  সেতুমন্ত্রী কী ভুক্তভোগী মানুষকে উপহাস করলেন, নাকি নিজের মন্ত্রীত্ব রক্ষার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে সাজিয়ে গুছিয়ে অবলীলায় মিথ্যা কথাগুলোর অবতারণা করলেন?

রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, সারা দেশে সরকার বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর মিথ্যা মামলা দিয়ে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে। কেউ ঈদের বাড়িতে থাকতে পারছে না।

শত শত বিএনপি নেতাকর্মী আজ বাড়িছাড়া। ঈদ উপলক্ষে পরিবার পরিজনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে পারছে না তারা।

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় স্থানীয় ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এক নেতা আহত হওয়ার ঘটনায় বিএনপির কলমাকান্দার সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম কিরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনা, নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশি তল্লাশি অভিযান ও পাল্টা মামলা সাজানোর নিন্দা জানান তিনি।

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের বাড়ি নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রী  মোহাম্মদ নাসিমের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন,  আওয়ামী লীগ প্রকৃত পক্ষে একটি আউট লক সংগঠনে পরিণত হয়েছে।

দলের নেতৃবৃন্দের কথা শুনলেই মনে হয়, এরা পাহাড়ি গুহায় বসবাসকারী দস্যু দলের সদস্য। দেশের খ্যাতিমান আইনজীবী মওদুদ আহমদকে তার বাড়ি থেকে নানা কারসাজি করে পুলিশি শক্তিতে উৎখাত করার পর এ নিয়ে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা আনন্দ উল্লাস করছেন। মওদুদ সাহেবকে খাট পাঠিয়ে দেবেন বলে অমানবিক উপহাস করছেন। অতীতে দেখা গেছে যারা এরকম উপহাস করেছে তাদেরও করুন পরিণতি হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার  কায়সার কামাল, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মুনির  হোসেন, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার  হোসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

 

Check Also

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে : অ্যাটর্নি জেনারেল

র্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারই নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারে রূপান্তরিত হতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।