রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অলিউর রহমান ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদ এলাহীর নেতৃত্বে রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। ৫টি বুলডোজার ও পেলোডের-এর সহায়তায় বাড়ি ভাঙার কাজ করেন তারা।
উচ্ছেদ অভিযানের সময় বাড়িটির আশেপাশে পুলিশের গুলশান জোনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
দীর্ঘ আইনী লড়াইয়ে জয়ের পর গত ৭ জুন আদালতের নির্দেশে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি হিসেবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের দখলে থাকা গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের ১৫৯ নম্বর প্লটের বাড়ির নিয়ন্ত্রণ নেয় রাজউক।
তার আগে বিচ্ছিন্ন করা হয় বাড়ির পানি, গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ।
সেদিন রাজউকের অভিযান শুরুর সময় মওদুদ আহমদ বাড়িতে না থাকলেও শেষ দিকে তিনি আইনজীবীর পোশাকে সেখানে উপস্থিত হন। শুরুতে পুলিশ তাকে বাড়িতে ঢুকতে দিতে না চাইলেও পরে অল্প সময়ের জন্য তিন দশক তার দখলে থাকা বাড়িতে ঢোকার অনুমতি পান মওদুদ।
মওদুদের অভিযোগ, রাজনীতি করার কারণেই তাকে এ বাড়ি ছাড়তে হয়েছে। সরকারি দলের লোক হলে বাড়ি হারাতে হতো না।
গত ৪ জুন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মওদুদের করা বাড়ি সংক্রান্ত রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন।
এর আগে মওদুদ আহমদের ভাই মনজুর আহমদের নামে বাড়ির মিউটেশন (নামজারি) করতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করেছিলো আপিল বিভাগ। সেই সঙ্গে ওই বাড়ি আত্মসাতের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলাও বাতিল করা হয়।
পরে মামলা বাতিলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন এবং নামজারি বাতিলের বিরুদ্ধে মনজুর আহমদ রিভিউ (রায়ের পুর্নবিবেচনার আবেদন) করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, এই বাড়িটির প্রকৃত মালিক ছিলেন পাকিস্তানি নাগরিক মো. এহসান। ১৯৬০ সালে তৎকালীন ডিআইটির (রাজউক) কাছ থেকে এক বিঘা ১৩ কাঠার এ বাড়ির মালিকানা পান এহসান। ১৯৬৫ সালে বাড়ির মালিকানার কাগজপত্রে এহসানের পাশাপাশি তার স্ত্রী অস্ট্রিয় নাগরিক ইনজে মারিয়া প্লাজের নামও অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্ত্রীসহ ঢাকা ত্যাগ করেন এহসান। তারা আর ফিরে না আসায় ১৯৭২ সালে এটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকাভুক্ত হয়।
এরপর ১৯৭৩ সালের ০২ আগস্ট মওদুদ তার ইংল্যান্ডপ্রবাসী ভাই মনজুরের নামে একটি ভুয়া আমমোক্তারনামা তৈরি করে বাড়িটি সরকারের কাছ থেকে বরাদ্দ নেন বলে মামলায় অভিযোগ করে দুদক।