মায়েদের সাথে জেলখানায় শিশুদের দিন কাটছে যেভাবে!

ক্রাইমবার্তা রিপোট:ঢাকা : বাংলাদেশের কারাগারগুলোতে মোট বন্দীর একটি বড় অংশই নারী। শতাংশ হিসেবে যা ৩.৪ শতাংশ। এই নারী কয়েদীদের অনেকের সাথেই তাদের শিশু সন্তানরাও থাকছে কারাগারের ভেতরে। এই শিশুদের মানসিক বিকাশ কিংবা বিনোদনের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। চার মাসের শিশু আরোহী। তার মা সন্দেহজনক চুরির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আসে।

মায়েদের সাথে জেলখানায় শিশুদের দিন কাটছে  যেভাবে!

এ রকম বহু নারী নানা ধরনের অপরাধের অভিযোগ মাথায় নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার কারাগারগুলোতে বন্দী আছেন। আর তাদের অনেকের সাথেই কারা দেয়ালের ভেতরে বন্দী-জীবন শিশু সন্তানদেরও।

ঢাকার কাশিমপুরে একমাত্র নারী কারাগারে সবচেয়ে বেশি শিশুর বসবাস। নারীদের জন্য নির্দিষ্ট কারাগারটিতে ৪৭১ জন নারী কয়েদী রয়েছেন। আর সেখানে কারা দেয়ালের ভেতরে বন্দী থাকা মায়েদের সঙ্গেই আছে ৩১টি শিশু। এদের প্রত্যেকের বয়স ছয় বছরের কম। এইসব শিশুরা মায়েদের জন্য নির্ধারিত নারী কয়েদীদের ওয়ার্ডেই ঘুমায়। সারাদিন অবশ্য তাদের কাটে খেলার মাঠে এবং ডে কেয়ার সেন্টারে ঘুরে ফিরে।

কাশিমপুর কারাগারে কর্তৃপক্ষ এখানে তাদের পড়ানোর এবং অসুস্থ হলে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা রেখেছে। তবে সব কারাগারে শিশুদের জন্য এমন ব্যবস্থা নেই।

যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর দুইবছর আটমাস ধরে কারাগারে শারমিন। একটি শিশুকে নিজের মায়ের কাছে রেখে এলেও, একমাস বয়সী শিশুকে নিয়ে কারাগারে প্রবেশ। এরপর সেখানেই বড় হচ্ছে শিশুটি। কারও কারও কাছে মায়ের জেলখানা থেকে কোর্টে হাজিরার দিনটিকেই মনে হয় যেন বেড়াতে যাওয়ার মত। একজন বন্দী নারী বলছিলেন তার মেয়ে তাকে বলে “মা কোর্টে কবে যাবা? কোর্টে হাজিরার দিন তার কাছে ঈদের মত”। বিশেষ উৎসব এবং ঈদের দিন নতুন কাপড়-জামা পায় তারা।

ঊঁচু দেয়ালের ভেতরে বন্দী দিন-রাত কাটে। তবে এই শিশুরা জানেনা তারা কারাগারের ভেতর আছে। তাদের ধারণা, এটাই যেন ঘর-বাড়ি। জেল কোড অনুসারে কারাগারের ভেতরে থাকা কোনও শিশুর বয়স ছয় বছর পেরিয়ে গেলে তাকে বাইরে থাকা স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করতে হয়। আর যাদের কোনও স্বজন থাকে না, তাদের সরকারি শিশু পরিবারে পাঠানো হয়। ছয় থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত বয়সী কোনও শিশুকে কারাগারে রাখা হয় না।

কারা কর্তৃপক্ষ বলছে, এইসব শিশুর অন্য কোনও নিরাপদ আশ্রয় নেই বলেই বন্দী মায়েদের সাথে তারা থাকছে।

 

Check Also

প্রত্যেকটা অফিসের কেরানি পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের দোসর : আসিফ মাহমুদ

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।