ক্রাইমবার্তা রিপোট:পরিসংখ্যান দিয়ে কি লাভ। ফি বছর ঘটে। এবারো ঈদের আগে বাড়িতে যাওয়া ও ফিরে আসার সময় সড়কে দুর্ঘটনায় লাশের মিছিল বিস্তৃত হচ্ছে। মন্ত্রীরা তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন, নির্বিঘ্নে ঈদ পালন নিয়ে। শুধুমাত্র যে ব্যক্তিটি দুর্ঘটনায় মারা যায় তার পরিবার বোঝে এ মৃত্যুর মূল্য কতটা। কিছুটা তার স্বজনরাও বোঝে। আর বোঝে মিডিয়া। বছরে বছর মিডিয়ায় রিপোর্টিং, সরেজমিন বৃদ্ধি পায়। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আরো বাড়ে লাশের সংখ্যা।
শুধু সড়ক নয়, এবার পাহাড়েও লাশ চাপা পড়েছে দেড় শতাধিক। প্রশাসন এখন মেগা প্রজেক্ট নিচ্ছে যাতে লাশ চাপা না পড়ে পাহার ধসে। জুম চাষকি বন্ধ করতে পারবে প্রশাসন। পাহাড়ের মাটি কাটাও বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে বছরের পর বছর। দুনিয়ার তাবৎ পাহাড়গুলোর মধ্যে ন্যাড়া কোনগুলো, কোনগুলোতে গাছপালা নেই এ প্রতিযোগিতায় নির্ঘাত বাংলাদেশ প্রথম হবে। হয়ত তখনো মন্ত্রীরা তৃপ্তির ঢেকুর তুলবেন সংসদে, টিভি ক্যামেরার সামনে।
তারপর তদন্ত কমিটি হয়। সুপারিশ দেওয়া হয়। কিন্তু তা বাস্তবায়নের মুরোদ নেই কারো। তাই বারবার সড়ক দুর্ঘটনা, পাহাড় ধস ঘুরে ফিরে আসে। মন্ত্রীরা জানেন যারা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়, পাহাড়ের নিচে চাপা পড়ে তাদের খুব একটা কিছু করার থাকে না। তারাতো মরেই বেঁচে যায়। আর তাদের স্বজনরা খুব একটা গা করেন না দুই একদিন শোক পালন ছাড়া। মৃতদের সন্তানরা অনাহারে থাকেন, লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়, হলে কি হবে তারা প্রান্তিক গোছের কেউ বা রাজনৈতিকভাবে তারা খুব শক্তিশালী নয়। আর রয়েছে অনুগত মিডিয়া। এসব খবর প্রকাশ করেই সাংবাদিকতার মহান দায়িত্ব সারেন। এও হয়ত ভাবেন, বেশি হয়ে গেল না তো!
আরো আছে দলকানা বা দলদাস বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে সুশীল সমাজ। এ সমাজের লোকজন সড়ক দুর্ঘটনায় বা পাহাড় ধসে চাপা পড়েছে এমন নজির খুব কম। তাই তারাও এ নিয়ে খুব কমই ভাবেন। বরং তারা ভাবেন উন্নয়ন নিয়ে। ভোটের অধিকার নিয়ে। ভাতের অধিকার নিয়ে। মানবাধিকার নিয়ে। চারপাশে এত অধিকার তবুও মানুষগুলো সড়ক দুর্ঘটনায়, লঞ্চ ডুবে কিংবা পাহাড়ের নিচে চাপা পড়ে কেন মারা যায় তা বলা বেশ মুষ্কিল। হয়ত তাদের বেঁচে থাকার নেই কোনো অধিকার।
ব্রিটেনে গ্রেনফেল টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকা-ের পর দেশটির সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের আবাসন ব্যবস্থা করে দেওয়ার পরও এক সাংবাদিক সম্মেলনে গৃহনির্মাণ মন্ত্রী অলোক শর্মার প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে অলুওয়াসিম তালাবি নামে এক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি তেড়ে যান। ভাগ্য ভাল বলতে হবে, বাংলাদেশে কেউ তেড়ে যাওয়ার মত নেই।