আসাদুজ্জামান ॥
সাতক্ষীরার আশাশুনি থানায় কুখ্যাত দালাল আইযুব আলী সরদারসহ তিন জনের বিরুদ্ধে এবার পুলিশের ভাঙ্গিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছে। গত শনিবার (২৪.০৬.১৭ তারিখে) বড়দল গ্রামের মোন্তাজ উদ্দীন গাজীর ছেলে বিমান বাহিনীর অবসর প্রাপ্ত ওয়ারেন্ট অফিসার আব্দুল হাকিম গাজী বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং-১৮, ধারা- ৪৪৭, ৩৮৫, ৩৮৬, ৫০৬।
এজাহারকৃত মামলায় যাদের আসামী করা হয়েছে তারা হলেন, বড়দল গ্রামের আফসার সরদারের ছেলে কুখ্যাত দালাল আয়ুব সরদার, মৃত এজাহার গাজীর ছেলে শামছুদ্দীন গাজী (৫২) ও মৃত এছাহাক গাজীর ছেলে ইদ্রিস গাজী (৪২)।
উক্ত মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, গত ২৭ এপ্রিল মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ৮ টার সময় বাদী অবসর প্রাপ্ত ওয়ারেন্ট অফিসার আব্দুল হাকিম গাজীর বাড়িতে উক্ত আসামীরা অনধিকার প্রবেশ করিয়া জামায়াত-শিবির ও নাশকতা নামক মিথ্যা মামলায় জড়ানোর ভয় দেখিয়ে আশাশুনি থানার ওসির নাম করে ৪০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেন। বাদী হাকিম গাজী মিথ্যা মামলার হাত থেকে রেহাই পেতে উক্ত তিন আসামীকে নগদ ৪০ হাজার টাকা দেন। তিনি আরো উল্লেখ করেন, আসামীরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় পুলিশ প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে একইভাবে চাঁদাবাজি করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় লোভ ও লালশার বশে উক্ত আসামীরা পুনরায় গত ১৭.০৬.২০১৭ তারিখ রাত আনুমানিক রাত ৯ টার সময় সাতক্ষীরার এডিশনাল এসপির নাম ভাঙ্গিয়ে বাদী হাকিম গাজীর নিকট আবারও ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করেন। এক সপ্তাহের মধ্যে এই চাঁদার সমুদয় টাকা পরিশোধ না করলে তাকে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে খুন করে লাশ গুম করা হুমকি দেয়া হয়। উক্ত ঘটনার পর থেতে আসামীদের ভয়ে বাদী হাকিম গাজী পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। এই মামলার স্বাক্ষী হামিদ গাজী, সবুর গাজী, নুরুজ্জামান মালী, মুক্তিযোদ্ধা পাঞাজাব বিশ্বাস ও মুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব গাজীর সামনে আসামীরা বলেন, শালা কতদিন পালিয়ে থাকবে, টাকা না দিয়ে এলাকায় আসলে জীবনে শেষ করে দিবো।
এ ব্যাপারে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিদুল ইসলাম শাহিন জানান, বড়দল গ্রামের হাকিম গাজীর দেয়া অভিযোগপত্রটি তদন্ত শেষে গত ২৪.০৬ ২০১৭ তারিখে এজাহার হিসেবে গন্য করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, এ মামলার আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য ঃ এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটুক্তি করার অভিযোগে সম্প্রতি দালাল আইয়ুব সরদার ও শামছুর গাজীসহ তিন জনের নামে সাতক্ষীরা জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন বড়দল ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক নুরুজ্জামান মালী। এ মামলায় আদালতের বিচারক কালিগঞ্জ সার্কেলের এএসপির কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। উক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে বড়দল বাজারে স্থানীয় আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বোচ্ছাসেবকলীগ ও মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মানবন্ধন কর্মসূচীও পালন করেছেন।