বৃহস্পতিবার দু’দিনের গুজরাট সফরে গিয়ে এক সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী আজ গুজরাটের আহমেদাবাদে সবরমতী আশ্রমে যান। তিনি সেখানে আশ্রমের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এ সময় তিনি গরু রক্ষার নামে উত্তেজিত জনতার সহিংসতা প্রসঙ্গে বলেন, ‘গো-সেবা নিয়ে মহাত্মা গান্ধী ও বিনোবাভাবের জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। গরু রক্ষার নামে সহিংসতা কেন? গো-সেবাই গো-ভক্তি। গরু রক্ষার নামে সহিংসতা ঠিক নয়। দেশকে অহিংসার পথে চলতে হবে। গো-ভক্তির নামে মানুষ হত্যা গ্রহণযোগ্য নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি ভুল করে থাকে তাহলে আইন তার নিজস্ব পথে কাজ করবে। কাউকেই আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রয়োজন নেই।
উত্তেজিত জনতার সহিংসতাকে ভুল বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘রোগীর মৃত্যুর পরে হাসপাতালে ভাঙচুর করা অন্যায়। এ ব্যাপারে চিকিৎসকের কোনো দোষ নেই। কারণ, উনি আপনার পরিবারের সদস্যকে সেবা দেওয়া সত্ত্বেও ওই সদস্যকে বাঁচাতে পারেননি। কিন্তু তা সত্ত্বেও যদি আপনার কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে আইনি উপায় রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সহিংসতা সমস্যার কোনো সমাধান নয়। আমাদের দেশ অহিংসা এবং গান্ধীর দেশ। এটা অহিংসার জমিন। মহাত্মা গান্ধীর ভূমি। একথা আমরা কেন ভুলে যাচ্ছি? যদি কেউ অন্যায় করে থাকে তাহলে আইন তার বিরুদ্ধে কাজ করবে। দেশের কোনো ব্যক্তিরই আইন হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার নেই।’
সম্প্রতি ঈদের বাজার নিয়ে বাসায় ফেরার পথে হাফেজ জুনাইদ খান (১৬) নামে বিজেপিশাসিত হরিয়ানার এক তরুণ গণপিটুনিসহ ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছে। তাকে ট্রেন থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয় হিন্দুত্ববাদী দুর্বৃত্তরা। নির্মম ওই হত্যাকাণ্ডের কথা প্রকাশ্যে আসতেই দেশ জুড়ে এ নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলন শুরু হয়েছে। নারকীয় ওই ঘটনার প্রতিবাদে ভারতের একাধিক শহরে পালিত হয়েছে ‘নট ইন মাই নেম’ প্রতিবাদ কর্মসূচি।
দেশে ভিন্ন ভিন্ন ঘটনায় কথিত গো-রক্ষকের গণপিটুনিতে সম্প্রতি বেশ কিছু মানুষ নিহত ও আহত হয়েছে। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই সংখ্যালঘু মুসলিমরা ধর্মান্ধদের টার্গেটের শিকার হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রসঙ্গে কাশ্মিরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, মহাশয় খুব ভালো কথা বলেছেন। আমি আশা করছি যারা এ ধরনের ন্যক্করজনক কাজ করছে তারা আপনার কথা মানবে এবং সেই অনুসারে আচরণ করবে।