ক্রাইমবার্তা রিপোট:সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া ‘জঙ্গিবাদ’ নির্মূল অসম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সমন্বিত উদ্যোগ না নিলে দেশে ‘জঙ্গিবাদ’ নির্মূল হবে না। আজ শনিবার সকালে গুলশানে হলি আর্টিজেন বেকারীর ঘটনাস্থলে নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই দেশ ও জাতির জন্য আজকের দিনটি একটি কালো অধ্যায়। দেশ-বিদেশের এতোগুলো মানুষ উগ্রবাদী জঙ্গিদের হাতে নির্মমভাবে নিহত হওয়া এটি নি:সন্দেহে আমাদের যে আবহমান বাংলার সংস্কৃতি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি এবং দেশের যে এগিয়ে চলা, আমরা যে সম্প্রীতির পক্ষে, প্রগতির পক্ষে, অগ্রগতির পক্ষে সেখানে কলঙ্ক তিলক তারা এঁকে দিয়েছিলো।
রিজভী বলেন, আমরা আশা করেছিলাম এ ব্যাপারে একটা সামগ্রিক ও সমন্বিত পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে দেশের মধ্যে বিভিন্নভাবে যে উগ্রবাদী নেটওয়ার্ক চেপে বসেছে, সেটিকে উৎখাত করা হবে। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের দিকে থেকে এই ধরণের কোনো সমন্বিত উদ্যোগ আমরা দেখিনি।
সকাল পৌনে ১১টার দিকে রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্ব ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল গুলশানের ৭৯ নং সড়কের হলি আর্টিজেন বেকারীর প্রাঙ্গণে নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পুষ্পমাল্য অর্পন করেন। প্রতিনিধি দলের ছিলেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, জাসাসের রফিকুল ইসলাম তালুকদার, শায়রুল কবির খান ও সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলা চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর আবদুল্লাহ আল মামুন।
শ্রদ্ধা নিবেদনের পর জঙ্গিবাদ দমনে সরকারের কার্যক্রম প্রসঙ্গ টেনে রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, যতবারই শুনেছি যে ক্ষমতাসীনরা নির্মূল করছেন, তারপরও দেখা গেছে যে কোথাও না কোথাও উগ্রবাদ তার হিংস্র থাবা মেলেছে, তার হিংস্র কামড় দিয়েছে। এটি কোনো একক ব্যক্তি বা সংগঠনের কাজ নয়। এটি হচ্ছে জাতির সামগ্রিক পদক্ষেপের একটি বিষয়।
আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্ট সকলে শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। আমাদের দীর্ঘদিনের যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, ভালোবাসা দেশ, একে অপরের প্রতি শুভেচ্ছাবোধের দেশ, আমাদের সেই ঐহিত্য আর কোনোভাবে যাতে ম্লান না হতে পারে, সেদিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখা, সেই হিসেবে সবাইকে কাজ করা। হলি আর্টিজেনের ঘটনার তদন্ত ও অভিযোগপত্রের প্রতি ইংগিত করে তিনি বলেন, এই যে ঘটনা এখনো অভিযোগপত্র দেয়া হয়নি, কি ধরণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বা প্রশাসন এখানে কী ধরনের কাজ করছে, আমরা বলতে পারছি না। আমরা আগে বলেছি, এ ব্যাপারে সমন্বিত উদ্যোগে নেয়া হতো, বিষয়টি বিশ্লেষণ করে, তদন্ত করা যেতো- এদের গুহাগুলো কোথায়, এদের নেটওয়ার্ক কোথায়- এটি যদি অনুসন্ধান করে চিহ্নিত করা যেতো তাহলে আর পূনরাবৃত্তি হতো না, আর এ সমস্ত ঘটনা হতো না। আমরা চাই, কোনো ধরণের যেন রহস্য তৈরি না হয়। বাইরের বিভিন্ন সংগঠন বলছে এটা আইএস আইএস করছে, সরকার বলছে না এটা করছে না। এগুলোর মধ্য দিয়ে যে রহস্য দানা বেঁধেছে, সেই রহস্য এবং কুঞ্জটিকা সরানোর দায়িত্বও হচ্ছে সরকারের। এগুলো মানুষের মন থেকে সকল শঙ্কা ও আশঙ্কা দুরীভুত করার দায়িত্ব ক্ষমতাসীনদের, তারা এই কাজটি করবে। আর যাতে এদেশে উগ্রবাদের অন্ধকার ছোবল যাতে না হয়, উগ্রবাদরা বিষাক্ত ছোবল যাতে না দিতে পারে, যথাযথভাবে সেটি চিহ্নিত করা ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।