ক্রাইমবার্তা আন্তর্জাতিক ডেস্ক :জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতির মতো বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একচ্ছত্র ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট কংগ্রেস। রাশিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষা দপ্তরের বাজেট ইস্যুতে হোয়াইট হাউসের ক্ষমতা খর্ব করার প্রস্তাব করেছেন খোদ ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির আইনপ্রণেতারা। এর মধ্য দিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে তাঁরা ট্রাম্প প্রশাসনের আকাক্সক্ষাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ট্রাম্পের রাশিয়াপ্রীতি ভাবিয়ে তুলেছে রিপাবলিকান সিনেটরদের। তাই সম্প্রতি কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেট ‘রাশিয়া স্যাংকশনস প্যাকেজ’ নামে এক ধরনের নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব পাস করেছে। এর ফলে কংগ্রেস রাশিয়া-সংক্রান্ত যেকোনো বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে পারবে।
এ ছাড়া চলতি সপ্তাহে ‘কংগ্রেশনাল কমিটি’ ট্রাম্প প্রশাসনের বাজেটের চেয়েও ৩০ বিলিয়ন ডলার বেশি বাজেটের তিনটি প্রতিরক্ষা বিল অনুমোদন করেছে।
রিপাবলিকানদের অভিযোগ, প্রতিশ্র“তি অনুযায়ী সেনাবাহিনীকে ঢেলে সাজাতে ব্যর্থ হয়েছেন ট্রাম্প। তাই তাঁর সিদ্ধান্তের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন তাঁরা।
চলতি সপ্তাহে এক আকস্মিক ভোটে সিনেটের একটি হাউস প্যানেল ২০০১ সালের অথরাইজেশন ফর ইউজ অব মিলিটারি ফোর্স (এইউএমএফ) বিলটি সংশোধনের অনুমোদন দেয়। এই বিলটি মার্কিন সেনাবাহিনীকে ইরাক, আফগানিস্তান ও সিরিয়ায় হামলা চালানোর আইনি বৈধতা দিয়েছিল।
এসব বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে জাতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষক মিয়েক ইয়াং বলেন, পরিস্থিতি বদলাচ্ছে। বিশেষ করে কংগ্রেসের রিপাবলিকান নেতারা হোয়াইট হাউস থেকে যথাযথ নেতৃত্ব পাচ্ছেন না। আর এ কারণেই তাঁরা হোয়াইট হাউসের সিদ্ধান্তে বাগড়া দিচ্ছেন।
‘এর মধ্য দিয়ে আপনি দেখবেন যে, দীর্ঘ সময় পর জাতীয় নিরাপত্তার মতো বিষয়ে আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিচ্ছে কংগ্রেস’, বলেন মিয়েক।
কংগ্রেসের এই হঠাৎ ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার বিষয়টিকে বিশেষজ্ঞরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন।
এ বিষয়ে ‘সেন্টার ফর নিউ আমেরিকান সিকিউরিটি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক লরেন ডিজেং স্কুলম্যান বলেন, তিনি আশাবাদী যে কংগ্রেস দৃশ্যত বিশৃঙ্খল জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে কাঠামোগত কিছু পরিবর্তন আনতে চাইছে।
কূটনীতিক, সামরিক বিশ্লেষক ও ওবামা সরকারের আমলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, ‘আমরা দেখছি যে জাতীয় নিরাপত্তা সমস্যা নিয়ে নিজ দলের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সামর্থ্য ও স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে সংশয়ে আছেন কংগ্রেস সদস্যরা। এতে এক ধরনের জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।’