পারভেজের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, রাস্তায় দাঁড়িয়ে পাশের গ্রামের এক মেয়ের সঙ্গে কথা বলার ঘটনায় তার উপর এ নির্যাতন চালানো হয়েছে।
এ ঘটনায় নির্যাতিত পারভেজের মা পারভীনা বেগম বাদি হয়ে শুক্রবার রাতে কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা উঠিয়ে নেয়ার জন্য স্থানীয় এমপির ঘনিষ্ঠলোক বলে এলাকা দাপিয়ে বেড়ানো সাগর বিশ্বাস ও মেয়ের পরিবারের লোকজন পারভেজের পরিবারকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নির্যাতিত পারভেজের মা পারভীনা বেগম জানান, তার ছেলে পারভেজ ও তার চাচাতো ভাই গত ২২ জুন বিকাল ৫টার দিকে পার্শ্ববর্তী গ্রাম দাসবায়সা গ্রামের আজিজুলের মেয়ের সঙ্গে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বলছিল। এসময় মেয়ের বাবা আজিজুল ও তার লোকজন এসে পারভেজকে মারধর করে ধরে নিয়ে যায়। এসময় পারভেজের সঙ্গে থাকা তার চাচাতো ভাই নাজমুল পালিয়ে এসে বাড়িতে খবর দেয়। তবে পরিবারের লোকজন দাসবায়সা গ্রামে গিয়ে আর পারভেজকে খুঁজে পায়নি।
তিনি আরো জানান, ওইদিন সারারাত আজিজুল ও তার লোকজন পারভেজের ওপর নির্যাতন চালায়। পরে ২৩ জুন দুপুর ১২টার সময় স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সাগর বিশ্বাস ফোন দিয়ে জানান পারভেজকে পাওয়া গেছে। পরে গিয়ে পারভেজকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এসময় মারধরের কারণে বেরিয়ে আসা মলে পারভেজের শরীর মাখামাখি ছিল।
তার মায়ের অভিযোগ, এসময় কোলাবাজার পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও দোষীদের বিরুদ্ধে তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি।
পরে পারভেজকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তির পর তাকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো করা হয়।
পরে ঢামেকে পারভেজের মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। বর্তমানে পারভেজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত তার কোনো জ্ঞান ফেরেনি।
এদিকে কোলাবাজার পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এসআই মিজানুর রহমান পারভেজের ওপর হামলার ঘটনা অস্বীকার করেন। পরে তিনি কিছুই হয়নি, এমন ভাব করে বলেন আমরা ঘটনাস্থলে যাবার আগেই ছেলেটিকে হালকা চড় খাপ্পড় মেরে স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে ঘটনাটি মীমাংসা করে ছেড়ে দেয়া হয়।
তবে স্থানীয় কোলা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বর জাফর হোসেন জানান, নির্যাতনের মাত্রা অনেক বেশি ছিল। তবে কারা কিভাবে নির্যাতন করেছে এটা আমি বলতে পারবো না। তার চিকিৎসার জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে ১২ হাজার টাকা এবং গ্রাম থেকে প্রায় লক্ষাধিক টাকা সংগ্রহ করে দিয়েছি।
৩নং কোলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন জানান, পারভেজকে মারধরের ঘটনাটি অমানবিক। মেয়ের চাচা নাজমুল ও এনামুল ওই কিশোরকে মারধর করেছে বলে শুনেছি।
কালীগঞ্জ থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক এবং কষ্টদায়ক।