ক্রাইমবার্তা বিনোদন ডেস্ক:ঢাকাইয়া চলচ্চিত্রের সাম্প্রতিক বিতর্কে শাকিবকে নিয়ে মুখ খুলেছেন বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা নিপুণ।
এরআগে একাধিক ছবিতে শাকিব খানের সঙ্গে অভিনয় করেছেন নিপুণ। সিনেমার প্রয়োজনে তার সঙ্গে দলবদ্ধভাবে ঘোরাঘুরি করেছেন বিভিন্ন জায়গায়। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে শাকিব খানকে একহাত নিয়েছেন নিপুণ।
তবে এ স্ট্যাটাস তিনি দিয়েছেন একটি টিভি চ্যানেলে চিত্রনায়িকা বুবলিকে নিয়ে শাকিবের ভূয়সী প্রশংসার পর। রোববার দেয়া ওই সাক্ষাৎকারে বুবলীকে তিনি ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে যোগ্য নায়িকা বলে উল্লেখ করেন।
শাকিবকে মেনশন করে দেয়া নিপুণের ওই স্ট্যাটাসটি পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।
‘শাকিব খান আজকে আপনাকে কিছু কথা বলতে চাই। আপনি কীভাবে বলেন বা বুঝাতে চান যে, বাংলাদেশের নায়িকারা শিক্ষিত না, ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো না? মিডিয়াতে শুধু বুবলী যোগ্য এবং শিক্ষিত?
শাকিব খান, আপনি নিজের বৌ (অপু বিশ্বাস) এর চেয়ে বেশিবার বুবলীর গুনগান মিডিয়াতে বলছেন। তাই নয় কি? যাই হোক ব্যক্তিগত ব্যাপারে না-ই বা গেলাম! আপনি পারসোনালি মানুষকে বা বুবলীকে খুশি করার জন্য যা খুশি বলেন, কিন্তু মিডিয়ার সামনে অন্য আর্টিস্টদের সম্মান দিয়ে কথা বলবেন।
আর আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা? আপনার ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড? আপনি মনে হয় আপনার ১১ বছর আগের কথা ভুলে গেছেন। ইমিগ্রেশন অফিসার ইমিগ্রেশনে ইংরেজিতে যা কিছুই জিজ্ঞেস করতো আপনি না বুঝেই ‘ইয়েস’, ‘নো’ বলতেন; যেখানে অন্য আর্টিস্টরা ঠিকঠাক উত্তর দিত।
আপনি এতই শিক্ষিত যে ‘ইডি’ (এম্বারকেশন-ডিসএম্বারকেশন) কার্ড পূরণ করতে পারতেন না। ভুলে গেছেন?
ইন্ড্রাস্ট্রিতে অনেক শিক্ষিত আর্টিস্ট আছে যারা নিজের ব্যাপারে মিথ্যা জাহির করেনা। আপনি মনে হয় আপনার ব্যাকগ্রাউন্ডের সঙ্গে সঙ্গে অন্য আর্টিস্টদের ব্যাকগ্রাউন্ডও ভুলে গেছেন। তাই আমি আমার ব্যাকগ্রাউন্ড আবারও আপনাকে মনে করে দিতে চাই যে, আমি কোথা থেকে এসেছিলাম এবং আমার ফ্যামেলি ব্যাকগ্রাউন্ড আমার বাবার পেশা, আমার মা’র পেশা, আমার ভাই-বোন, আমার শিক্ষা, আমার গ্রাজুয়েশন কি?
আপনাকে আরও মনে করিয়ে দিতে চাই যে, বনানীর যে বাসায় আমি থাকি সেটা সিনেমার টাকায় কেনা না। এটা আমার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া, মিডিয়াতে আসার আগে থেকেই ছিল। সিনেমায় এসেছি ভালো লাগা থেকে। মস্কো থেকে ২ বছর পর গ্রাজুয়েশনের ক্রেডিট ট্রান্সফার করে ইউএস এর লা ভ্যালি কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করে এসেছি।
আপনি তো আবার অতীত ভুলে যান। তাই আরও মনে করিয়ে দিতে চাই যে, আপনি শুটিংয়ের সেটে রাজ্জাক আঙ্কেলকে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বসিয়ে রেখেছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেটে আর আসেননি। আরও কতজনকে যে অসম্মান করেছেন তার হিসেব নেই। ভুলে গেছেন?
ইন্ড্রাস্ট্রি তে যা খুশি তা করেছেন আপনি। সিনিয়ররা আপনার ব্যবহারে অতিষ্ট। আপনার জন্যই তো উনারা ইন্ড্রাসট্রিতে নিয়মিত না। আপনি কি করে ভাবেন যে, রাজ্জাক আঙ্কেল, ফারুক আঙ্কেল, আলমগীর আঙ্কেল আপনাকে বারবার সাপোর্ট দিবে।
শাকিব খান, বাংলা সিনেমা নিয়ে আপনি যে নোংরা রাজনীতি করছেন তা নিজের ও কিছু দেশি-বিদেশি মহলের স্বার্থ রক্ষার জন্য করছেন যা বাংলাদেশ চলচিত্র শিল্পের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বাংলা চলচ্চিত্র নিয়ে নোংরা রাজনীতি বাদ দেন।
আর মিডিয়ার সবাই জানে আপনার অতীত এবং ব্যাকগ্রাউন্ড। বুবলীর ভিডিও গানের লক্ষ লক্ষ ভিউয়ের কথা এত বার বার বলেন কেন? ভিউ বেশি মানেই কি অপুর চেয়ে বেশি বুবলীর গ্রহনযোগ্যতা দর্শকদের কাছে? আপনি কি জানেন না যে, বুস্ট করিয়ে- মানে টাকা খরচ করিয়ে ভিউ বাড়ানো যায়।
আর আমি যখন থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করি, তখন আপনি ইন্টারনেটের ‘ই’-ও জানতেন না। মুভি বানানোর জন্য ইনভেস্ট আমিও করতে পারি কিন্তু আপনার মতো শয়তান যত দিন ইন্ড্রাস্ট্রিতে থাকবে ভালো মানুষরা ইনভেস্ট করতে চাইবে না। কারণ কিছু লোককে তো রেখছেনই টাকা দিয়ে সেই সিনেমা পাইরেসি করানোর জন্য এবং নিজেকে স্বঘোষিত কিং খান প্রতিষ্ঠিত করার জন্য।
পরবর্তীতে মিডিয়াতে কথা বলার আগে অবশ্যই চিন্তা ভাবনা করে সিনিয়র আর্টিস্টদের ও অন্যান্য আর্টিস্টদের সম্মান দিয়ে কথা বলবেন আর নিজের অতীতটা মনে রাখবেন।’
এ বিষয়ে শাকিব খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ওই সাক্ষাৎকারে আমি নির্দিষ্ট কাউকে উল্লেখ করে বক্তব্য দেইনি। শিক্ষিত অশিক্ষিত নিয়েই চলচ্চিত্র পরিবার। যে ভাল কাজ করবে সেই এগিয়ে যাবে। এর বাইরে কিছু বলার নেই।
উল্লেখ্য, শাকিব খানের সঙ্গে ‘পিতার আসন’, ‘আমার প্রাণের স্বামী’, ‘টাইগার নাম্বার ওয়ান’, ‘বস নাম্বার ওয়ান’, ‘প্রেমিক নাম্বার ওয়ান’ সহ আরও কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছেন নিপূণ।