তিনজন লোক মাইক্রোতে তুলে চোখ বেঁধে ফেলে: ফরহাদ মজহার

তিনজন লোক মাইক্রোতে তুলে চোখ বেঁধে ফেলে: ফরহাদ মজহার ঢাকা: কবি, প্রাবন্ধিক ও বুদ্ধিজীবী ফরহাদ মজহার সেদিন সকালে ওষুধ কেনার জন্য বেরিয়ে ছিলেন। বাসা থেকে বের হয়ে তিনি রাস্তায় হাঁটছিলেন। এ সময় একটি সাদা মাইক্রোবাস তার সামনে এসে দাঁড়ায়। তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই তিনজন লোক তাকে জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে চোখ বেঁধে ফেলে। গাড়িটি সোজা খুলনা চলে যায়।

সন্ধ্যা সাতটার দিকে তাকে শিববাড়ির মোড়ে নামিয়ে দিয়ে তার হাতে বাসের টিকিট ধরিয়ে দেয় অপহরণকারীরা।

মঙ্গলবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ফরহাদ মজহার এমনটাই বলেছেন বলে আদালত সূত্র নিশ্চিত করেছে।

আদালতে ফরহাদ মজহার বলেন, কোনো কিছু না নিয়ে অপহরণকারীরা তাকে ছেড়ে দেয়। যে তিনজন তাকে অপহরণ করে, তাদের তিনি চেনেন না।

পুলিশ ও আদালত সূত্র বলছে, ফরহাদ মজহার আদালতে বলেছেন, তার চোখের সমস্যা আছে। এ জন্য তিনি চোখে ওষুধের ড্রপ দেন। ওষুধ কেনার জন্য গতকাল সকালে তিনি বাসা থেকে বের হন। তার বাসার পাশে একটা হাসপাতাল রয়েছে। এর পাশেই ওষুধের দোকান। সেই দোকানের দিকে তিনি হেঁটে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ তার পাশে একটি সাদা মাইক্রোবাস এসে থামে। তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে মাইক্রোবাসে তোলা হয়। তারপর চোখ বেঁধে তাকে মাঝখানে বসানো হয়। দুই পাশে অপহরণকারীরা বসে। তাকে মাথা নিচু করে বসতে বলা হয়। গাড়িটি চলতে থাকা অবস্থায় তিনি স্ত্রীকে নিজের মুঠোফোন থেকে ফোন করেন। তখন তিনি স্ত্রীকে বলেন, তাকে অপহরণ করা হয়েছে। অপহরণকারীরা তাকে মেরে ফেলবে। তখন অপহরণকারীরা তার ফোন কেড়ে নেয়।

ঢাকা থেকে তাকে গাড়িতে তোলার পর বিরতিহীনভাবে গাড়ি চলতে থাকে বলে ফরহাদ মজহার আদালতকে জানিয়েছেন।

আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীতে তিনি আরও বলেন, নিজ থেকে অপহরণকারীদের বলেন, টাকা নিয়ে তাকে যেন ছেড়ে দেয় তারা। অপহরণকারীরা তার কাছে জানতে চায়, তিনি কোথায় টাকা পাবেন। তার স্ত্রী টাকা জোগাড় করবে। তখন অপহরণকারীরা তার কাছে ৩৫ লাখ টাকা চায়। ওই টাকার জন্য তিনি তার স্ত্রীকে ফোন করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বলেন, ফরহাদ মজহার বলেছেন, তিনজন লোক তাকে অপহরণ করে। তাদের পরিচয় এখনো জানতে পারেননি। খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। ঢাকা থেকে অপহরণ করে তাকে খুলনায় নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে ঢাকায় আসার জন্য তিনি বাসে ওঠেন।

ফরহাদ মজহারকে মঙ্গলবার বেলা ৩টায় আদালতে তোলে পুলিশ। রাজধানীর আদাবর থানায় তার স্ত্রী ফরিদা আখতার এ ব্যাপারে অপহরণ মামলা করেন।

এর ভিকটিম হিসেবে তার জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করে পুলিশ। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে তিনি ঢাকার মহানগর হাকিম আহসান হাবীবের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। পরে ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় তাকে নিজ জিম্মায় বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেন আদালত। বর্তমানে তিনি বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Check Also

ভোমরা বন্দরে চার মাসে ৪০০ কোটি টাকা আয়

দক্ষিণবঙ্গ সাতক্ষীরার আধুনিক নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব বাণিজ্যিককেন্দ্র ভোমরা স্থল বন্দর। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।