ঈদের সেরা বিনোদন ঈদ ইত্যাদি

ক্রাইমবার্তা বিনোদন ডেস্ক:এবার ঈদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখে মনে হয়েছে সবাই যেন পর্দা ভরাতে ব্যস্ত। আর প্যাকেজে ৬-৭ দিনব্যাপী বিজ্ঞাপন দেয়ার কারণে অনুষ্ঠানের মান নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা ছিল না। ফলে যা হওয়ার তাই হয়েছে।

তবে কিছু কিছু চ্যানেলের অনুষ্ঠানের মান খারাপ হলেও আত্মপ্রচারে ছিলেন এগিয়ে। পরিকল্পনার অভাব এবং বিজ্ঞাপন যন্ত্রণার কারণে দর্শক যেমন যন্ত্রণাদগ্ধ হয়েছেন আবার কেউ কেউ রিমোট নিয়ে হয়েছেন পরদেশি চ্যানেলমুখী।

তবে ভালোমানের অনুষ্ঠান হলে দর্শকরা অবশ্যই তা দেখেন। তার প্রমাণ আবারও পাওয়া গেছে নন্দিত নির্মাতা হানিফ সংকেতের ইত্যাদির ক্ষেত্রে।

তার অনুষ্ঠানে সমাজ সচেতনতামূলক প্রতিবেদন, নাট্যাংশ বা গান যাই হোক না কেন সবকিছু বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় এই একটি মাত্র অনুষ্ঠানেই রয়েছে দেশাত্মবোধ এবং জনস্বার্থ রক্ষায় বিভিন্ন ধরনের বিষয়ের সংযোজন।

প্রতিবারের মতো এবারও দর্শকরা মন্ত্রমুগ্ধের মতো হানিফ সংকেতের বিষয় নৈপুণ্য, চিত্রায়ণ বৈচিত্র্য আর সমাজ সংস্কারের নানা উপাদান দিয়ে ভরপুর ইত্যাদি উপভোগ করেছেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই ছিল একটি নান্দনিক চমক। আমাদের দৃশ্যকাব্য হিসেবে পরিচিত নাটকের ভিত্তিভূমি হল যাত্রা, আর সেই যাত্রা শিল্পীদের মাধ্যমেই শুরুতে উপস্থাপন করা হয় ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’ গানটি। যেখানে অংশগ্রহণ করেছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় শতাধিক সুসজ্জিত যাত্রাশিল্পী।

শহীদুজ্জামান সেলিম, চঞ্চল চৌধুরী, মীর সাব্বির, অপূর্ব ও জাহিদ হাসানকে দিয়ে আমাদের দেশের বিশেষ করে শহরাঞ্চলের নানা সমস্যা যেভাবে তুলে ধরেছেন তা এক কথায় অনবদ্য।

আকর্ষণীয় ছিল আজিজুল হাকিম, কুসুম শিকদার, ঈমন, নিরব এবং সঙ্গীতশিল্পী দিনাত জাহান মুন্নীর মিউজিক্যাল ড্রামা।

বিদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে দেশীয় সংস্কৃতিকে রক্ষা করার বার্তা নিয়ে সাজানো দর্শক পর্বে ফেরদৌসের সঙ্গে দর্শকদের অভিনয়ের মাধ্যমে ভিনদেশি সিরিয়ালের যে বিদ্রূপাত্মক নাট্যাংশ উপস্থাপনা করা হয়, তাতে শুধু নিছক বিনোদনই ছিল না, ছিল দেশের সংস্কৃতিকে বাঁচানোর জন্য সুতীব্র আহ্বান।

প্রতিবারই বিদেশিদের পর্বটি হয় অসাধারণ। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রায় অর্ধশতাধিক বিদেশি তাদের নাচ-গান-অভিনয়ে বাংলা ভাষায় বুঝিয়ে দিলেন ‘যৌতুক দেয়া নেয়া মহাপাপ- যৌতুক সমাজের অভিশাপ’।

‘ঈদে ঘরমুখী মানুষদের আনন্দ এবং সড়ক দুর্ঘটনা’ এই বিষয় নিয়ে এবারের বক্তব্যধর্মী, সচেতনতামূলক নাচটি ছিল এক কথায় অসাধারণ। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হানিফ সংকেত উপহার দিলেন সড়ক দুর্ঘটনার ওপর একটি চমৎকার স্লোগান- ‘চলাচলে আস্থা চাই, বিপদমুক্ত রাস্তা চাই’।

এ্যান্ড্রু কিশোরের গানে ঈদের সাজে সজ্জিত দুই শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত শিশুর কোরিওগ্রাফি ছিল অত্যন্ত ব্যতিক্রমী।

সবকিছু মিলিয়ে বরাবরের মতো এবারের ইত্যাদিও ছিল অসাধারণ, শিক্ষণীয়, অনুকরণীয়। অভিনন্দন হানিফ সংকেতকে একটি উপভোগ্য ও অসাধারণ ইত্যাদি উপহার দেয়ার জন্য।

 

Check Also

‘পাকিস্তান দলে প্রত্যেক ক্রিকেটারই অধিনায়ক’

টি-টোয়েন্টি সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে পেরে ওঠেনি পাকিস্তান। তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ম্যাচ পণ্ড হয়, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।