গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা নির্বাচন কমিশন চাইলেই অর্থবহ নির্বাচন সম্ভব

ক্রাইমবার্তা রিপোট:নির্বাচন কমিশন চাইলেই অর্থবহ নির্বাচন করা সম্ভব। দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে হলে অর্থবহ নির্বাচনের প্রয়োজন। আর এর জন্য কেবল সব দলের প্রতিনিধিত্বমূলক উপস্থিতিই নয়, কার্যকর উপস্থিতিও জরুরি। একইসসাথে জঙ্গি সম্পৃক্ততা আছে, এমন দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে শক্ত ভূমিকা পালন করতে হবে। ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট, ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের উদ্যোগে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিলে বক্তারা একথা বলেন।

 

 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক বলেন, একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে, রোডম্যাপ তৈরি হয়েছে। আমি বলতে চাই, কমিশন নিয়ে কোনো তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে না। সুনির্দিষ্ট অনেকগুলো বিষয়ে সুরাহা হওয়া প্রয়োজন। ইসি সীমানা নির্ধারণের কাজ হাতে নিয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা কী হবে তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের সময় সব দেশেই নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে। এই কমিশন চাইলেই অর্থবহ নির্বাচন করা সম্ভব। দেশে বিনিয়োগ আনার জন্য অর্থবহ নির্বাচনের প্রয়োজন রয়েছে। আইনের শাসনের প্রতিষ্ঠার জন্য সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রয়োজন রয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি আনোয়ার হোসেন বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ অর্জন করেছি। সেই বাংলাদেশের রাজনৈতিক দর্শন চেতনা আছে। সেখানে ঐকমত্য হবে না, অথচ আমাদের গণতান্ত্রিক মানসিকতার সুবাতাসের সুবিধা ভোগ করে নির্বাচনেও যাবে; তাহলে সামনের নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। সংবিধানের চারটি মূলনীতিতে সব দলকে একমত হতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক হারুন অর রশীদ বলেন, আজকের আলোচনার দু’টি বিষয় বেশ গুরুত্বপূর্ণ- রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। একটার সাথে আরেকটার ঘনিষ্ঠপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবার অংশগ্রহণ জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর ব্যরিস্টার তুরীন আফরোজ বলেন, নির্বাচনে অংশ নেয়া যেমন রাজনৈতিক অধিকার তেমনি নির্বাচন বর্জন করাও রাজনৈতিক অধিকার। নির্বাচনে অংশ নেবে কারা? বাংলাদেশের অস্তিত্ব যারা বিশ্বাস করে না, রাষ্ট্রের সৃষ্টিতে যারা বিশ্বাস করে না, স্বাধীনতাকে যারা মানে না তাদের এই নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে হবে।

সাংবাদিক রিয়াজউদ্দিন বলেন, প্রত্যেকবার নির্বাচনের আগেই নির্বাচনি পদ্ধতি নিয়ে আলাপ করতে হয়। আমরা আসলে উপসংহারে পৌঁছাতে পারিনি। রাজনৈতিক দলগুলোকে বলা হয়েছিল এমন একটা পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে যেন নির্বাচনের আগে এত কথা বলতে না হয়। কিন্তু এখন এই একটি জায়গাতেই আমাদের আলাপ আটকে থাকে।

ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্সের (ফেমা) প্রেসিডেন্ট মুনিরা খান বলেন, অনেক দেশে নির্বাচনে বিরোধী দলে ভালো প্রার্থী দাঁড়ালে তাকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়।

পর্যবেক্ষকদের প্রতি নির্বাচন কমিশনের সতর্ক দৃষ্টি দেয়া উচিত উল্লেখ করে বলেন, জবাবদিহিতামূলক সরকারে বড় ভূমিকা রাখেন পর্যবেক্ষকরা। নির্বাচন কমিশন যেন পর্যবেক্ষকদের নিয়ে বসেন।

অনুষ্ঠানের শুরুতেই আই ক্ল্যাডসের নির্বাহী পরিচালক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ সবাইকে অনুষ্ঠানে আসার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রেখে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ক্ষেত্র অনুসন্ধানের লক্ষ্যে ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট ল’ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ এই গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করে।

 

Check Also

ঢাকা প্রসঙ্গে বদলাতে পারে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি

পাঁচ দশকের বিরতির পর গত মাসে বাংলাদেশের বন্দর নগরী চট্টগ্রামে একটি পাকিস্তানি পণ্যবাহী জাহাজ ডক …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।