‘ওমেন টু ড্রাইভ’ আন্দোলনের মাধ্যমে নারীদের গাড়ি চালানোর জন্য তিনি সৌদি সরকারের কাছে লাইসেন্স চেয়ে পাননি।
এরপর মানাল সৌদি আরবের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে গাড়ি চালানোর জন্য কারাদন্ডে দন্ডিত হন এবং দুঃসহ অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি মুখ খোলেন।
মানাল নামের ওই নারী বলেছেন, ‘সৌদি আরবে নারীদের সঙ্গে ক্রীতদাসের মতো আচরণ করা হয়’।
নিষেধাজ্ঞা ভেঙে গাড়ি চালানোয় মানালকে নয় দিন কারাভোগ করতে হয়েছিল। পরে দেশ ছেড়ে অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান তিনি। বর্তমানে সেখানে লাইসেন্স নিয়ে গাড়ি চালাতে পারছেন মানাল।
এখন নারী অধিকার নিয়ে কাজ করছেন মানাল। জানালেন, তিনি সৌদি আরবে প্রথম নারী আইটি নিরাপত্তা কনসালট্যান্ট হন। প্রায় এক দশক ধরে সৌদি তেল কোম্পানি আরামকোতে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।
ডেইলি মেইল অস্ট্রেলিয়াকে মানাল বলেছেন, ‘একটি রক্ষণশীল সমাজ থেকে উঠে এসেছেন তিনি। তাদের ঘরের জানালা পর্যন্ত বন্ধ রাখা হতো। বাড়ির চারদিক উঁচু দেয়ালে ঘেরা। নারীদের পর্দার কঠোর বিধান রয়েছে সৌদিতে। পুরুষ অভিভাবকদের অনুমতি ছাড়া সৌদি আরবে নারীরা কিছুই করতে পারে না। পুরুষদের সাথে বাইরের কাজের ব্যাপারে মেয়েদের প্রতিযোগিতার সুযোগ নেই বললেই চলে। সেখানকার সমাজ পরিচালিত হয় পুরুষদের দ্বারা। আর নারীদের রয়েছে ঘরের আভ্যন্তরীন জগতের ভিন্নরকম কাজকর্ম’।
২০১১ সালে মানাল তাঁর গাড়ি চালানোর একটি ভিডিও ইউটিউবে তোলেন। ভিডিওটি ব্যাপক সাড়া পড়ে। এক দিনে সাত লাখ মানুষ ভিডিওটি দেখে।
ভিডিও প্রকাশের পর জীবননাশের হুমকি পান মানাল। তাঁকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলে অভিহিত করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে মুসলমানদের ভুল পথে নেয়ার অভিযোগ তোলা হয়।
গাড়ি চালানোর অপরাধে কারাদন্ড হয় মানালের। তাঁর বাড়ি, সন্তান ও চাকরির সবই হারাতে হয় মানালকে। শেষে দেশত্যাগ করেন। অবশেষে দ্বিতীয় স্বামী ও শুধু ছোট সন্তানকে নিয়ে সিডনিতে পাড়ি জমান মানাল।
নারী অধিকারকর্মী মানাল সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ায় গাড়ি চালানোর লাইসেন্স পেয়েছেন। এতে তিনি ভীষণ খুশি। তিনি এখন মুক্তির স্বাদ উপভোগ করছেন। সৌদিতে নারীদের জন্য আবদ্ধ সমাজ তার মোটেও ভালো লাগতো না। এখন মানাল জীবনকে পরিপূর্ণ উপভোগ করতে পারছেন বলে ডেইলি মেইল অস্ট্রেলিয়াকে জানিয়েছেন তিনি।